[উর্দু ভাষার হয়ত-বা সর্বশ্রেষ্ঠ গল্পকার সাদাত হাসান মাণ্টো (১৯১২-৫৫) দেশভাগের কারণ বিশ্লেষণে আগ্রহ দেখাননি, সাধারণ মানুষের জীবনে সে বিধ্বংসী ঘটনাপ্রবাহের পরিণাম কিন্তু তাঁর অনেক ছোট গল্পে সম্পূর্ণ নগ্নরূপে প্রতিফলিত হয়েছে। বাহুল্যবর্জিত গদ্যে মাণ্টো ধরার চেষ্টা করেছেন সমসাময়িক নির্মমতাকে। শব্দ যখন স্মৃতি থেকে হারিয়ে যায় তখনও এই কাহিনিগুলো পাঠকের স্মৃতিতে অম্লান থাকে, তাদের বারবার নাড়া দেয়, বিড়ম্বিত করতে থাকে। তাঁর নিজের ভাষায় ‘ঝড়ে যা কিছু খোয়া গেছে, তা পুনরায় ফিরে পেতে হলে, আমাদের শরীরের ক্ষতবিক্ষত অংশগুলো আবার জুড়তে হলে, আমাদের বিভক্ত সভ্যতার শৈল্পিক উৎকর্ষের যেটুকু অবশিষ্ট আছে, তার পুনঃসঞ্জীবনের প্রয়াস প্রয়োজন।’
বাস্তবে মাণ্টোর প্রতীকী উচ্চারণে সেই ‘ক্ষতবিক্ষত অংশগুলো’র সবচেয়ে নির্মম দৃষ্টান্ত ছিল পঞ্চাশ হাজারেরও বেশি মহিলার ধর্ষণ, অপহরণ ও হত্যা। মাণ্টোর ভাষায় সে ঘৃণ্য নারকীয়তার পেছনে আছে ‘আমাদের ভীরুতা’ আর ‘আমাদের বিরোধীদের সীমাহীন লাম্পট্য’। ব্যক্তি পাগল হলে তবু সামলানো যায়, সমষ্টি -- দুই সম্প্রদায়ের মানুষ যৌথভাবে উন্মত্ত আচরণ করলে সামাল দেবে কে?
অনুবাদের জন্য কিতাবি দুনিয়া, দিল্লি প্রকাশিত ড. খালিদ আশরাফ কর্তৃক নির্বাচিত ও সংকলিত ‘ফসানে মাণ্টো কে’ শীর্ষক গল্প সংগ্রহে মুদ্রিত মূল উর্দু গল্পটি ব্যবহার করেছি।
—অনুবাদক]