নতুন বছরে সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাই পরবাস-এর সকলের পক্ষ থেকে। এটা পরবাসের রজত জয়ন্তী বছর। তার চেয়েও উল্লেখযোগ্য হল এই সংখ্যাতে পরবাস নতুন সজ্জায় পাঠকের সামনে হাজির হল।
যাঁরা বাংলা/বাঙালি সংক্রান্ত আন্তর্স্থলের ইতিহাসের খবর রাখেন তাঁদের অনেকের কাছেই ক্যালিফোর্নিয়ার বে-এরিয়া-র কল্পতরু বর্মন এক পরিচিত নাম। বাংলা-সংক্রান্ত কোনো কিছু জানার জন্য বা অন্য কোনো দরকারে এককালে আমরা ক্যালকাটাওয়েবের (আন্তর্-)দ্বারস্থ হতাম অবধারিতভাবে। পরে উনি গুরুচণ্ডালী ইত্যাদি পত্রিকাকে প্রযুক্তির দিক থেকে সাহায্য করেছেন ও করে আসছেন। উনি নিজে থেকে আমাদের এই নতুন ডিজাইনে যদি নিয়ে না আসতেন তাহলে এই নতুন সজ্জায় পরবাস-কে নিয়ে আসা যেত না। শুধু প্রযুক্তি-ই নয়, এর সঙ্গে যেরকম প্রশাসনিক দক্ষতার সঙ্গে আমাদের টিম পরবাসকে চালিয়েছেন তার প্রশংসা উনি না চাইলেও আমি করতে বাধ্য। (প্রসঙ্গত, সহকর্মী হিসেবে 'আইডিজি', চিরন্তন, পার্থর সঙ্গে মুম্বই থেকে আনকোরা সদস্য ভাস্বর রায়চৌধুরীকে পেয়ে কাজের অনেক সুবিধে হয়েছে।) বহুদিন ধরে ইচ্ছে ছিল পরবাস-কে হাতের মুঠোয় যাতে আনা যায়, যাতে পরবাসের ভাণ্ডারে কী আছে তার অনুসন্ধান করা যায়, যাতে একটা লেখা তৈরি হলে আরো বেশ কতকগুলো আনুষঙ্গিক পাতা হাতে না করে স্বয়ংক্রিয়ভাবে করা যায়।সে সবই এখন সম্ভব হয়েছে, আরো অনেক কিছু।
কাজ সবে শুরু। পাঠকদের কাছে আগে থেকে ক্ষমা প্রার্থনা করছি, পরবাসের ভাণ্ডারে সঞ্চিত লেখা ছবি ইত্যাদি তো কম নয়, নেই নেই করেও সাত হাজারেরও উপর! একদম প্রথমদিকের পরবাস (১-২৬), যেগুলোতে ছবি হিসেবে বাংলা অক্ষর দেখানো হত, নতুন করে টাইপ করাতে হবে। পরের যে পর্বে পরবাস-অক্ষর দিয়ে তাৎক্ষণিক ফন্ট ব্যবহার করে সংখ্যাগুলি ছিল সেগুলোকে অনেক কায়দা করে ইউনিকোড-ভিত্তিক ফন্টে পরিবর্তন করা হয়েছে। তাহলেও কিছু কিছু ত্রুটি আছে যেগুলো হাতে ঠিক করতে হবে। এইরকম অনেক অনেক কাজ এখনো বাকি। সুধী পাঠক, ধৈর্য ধরুন। ভেবেছিলাম সব হয়ে গেলে নতুন ডিজাইন পেশ করব, কিন্তু মনে হয় তার চেয়ে এই ভালো।
ভালো কিছুটা এইজন্যে যে আশা করছি এই নতুন ডিজাইনের শুরুর দিকে আপনাদের পরামর্শ কাজে লাগানো সম্ভব হতে পারে। এখনো বেশ কিছুদিন ধরে পরবাসের লে-আউট ও অন্যান্য জিনিসের পরিবর্তন চলতে থাকবে। আজ যেখানে যে নামে বোতাম টিপছেন, এক সপ্তাহ বাদে হয়তো দেখবেন সেটা একটু পালটে গেছে। এখন হয়তো ধারাবাহিকের এক লেখা থেকে অন্য সব লেখায় সহজে যেতে পারছেন না, কিন্তু পরবাস-৮৫'র ধারাবাহিকে গেলে একটা ধারণা হবে ওই ফিচারটা কীরকম হবে। বাকি পুরোনো লেখাগুলি ক্রমশ ওই ফিচারের আওতায় চলে আসবে। কোনো লেখা ঠিক না দেখা গেলে তলায় দেওয়া "এই লেখাটি পুরোনো ফরম্যাটে দেখুন" লিঙ্ক ব্যবহার করতে অনুরোধ করছি।
যদিও প্রযুক্তির দিক থেকে আজকাল আন্তর্জালে যে রকম প্রায় দস্তুর, তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া জানানো ও তার প্রদর্শনের ব্যবস্থা করা যায়, আমরা কিন্তু তার পরিবর্তে সেই পুরোনো পন্থাই অন্তত কিছুদিন অনুসরণ করতে চাই। আসলে আমাদের আশা যে পরবাসের চিঠিগুলোও লেখার মতোই মননের খোরাক জোগাক; এমন যাতে হয় পাঠকরা সেগুলো পড়তে চাইবেন ও আনন্দ পাবেন, ধরুন, যদি লেখক বা পত্রপ্রেরকের নামও পাঠকের না জানা থাকত। এই কয়েকটা বিষয়ে ফেসবুকীয় পরিবেশ থেকে মুক্ত রাখা হোক পরবাসকে। পাঠক লেখক সকলেরই সহযোগিতা চাই।
অত্যন্ত আনন্দের সঙ্গে জানাচ্ছি এই সংখ্যাতে আবার পরবাস শব্দছক শুরু হল। আশা করছি এর ধারাবাহিকতা বজায় রাখা যাবে। উৎসাহীরা লক্ষ করবেন যে এই ধরনের শব্দছক 'কথার কথা' নামে এক ধারাবাহিকের সঙ্গে দু-দশকের আগেও প্রথম শুরু হয়েছিল পরবাসে, এবং এখনো এ ব্যাপারে পরবাস অদ্বিতীয়। এবারের শব্দছকটি সমাধানের চেষ্টা করুন ও এ ব্যাপারে আপনাদের মতামত জানান।
যশোধরা রায়চৌধুরীর 'ফাল্গুনের গান' নামে একটা উপন্যাসও শুরু হল।
পরবাস-এর সকলের পক্ষ থেকে সবাইকে আবার নতুন বছরের জন্যে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।