• Parabaas
    Parabaas : পরবাস : বাংলা ভাষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতি
  • পরবাস | সংখ্যা ৮৬ | এপ্রিল ২০২২ | কবিতা
    Share
  • স্বগত স্বনন : পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়




    ১.

    একটি গান একেকদিন আত্মহত্যা করে গুনগুন গৃহিণীর গলায়
    গান শেখা জীবনের আরোহ আজও সে টের পায়
    বিষের ধোঁয়ার মতো নীল বর্ণ অজ্ঞাত দূরে
    সেখানে যাওয়ার কোমল কড়ি আর নেই গাঁটে,
    নীরব চন্দন-রেখা কপালের অন্তরীক্ষে এঁকে দেয়
    পরাধীন জানলার মতো যে আলেখ্য
    তারই স্নিগ্ধতা সে পোহায় রুক্ষ উজল দিনে

    জোনাকির আলোর মতো সবুজ ঘাসে তার
    সকল স্বগত স্বনন থাকে
    ঘাসফড়িঙের মতো নিচু হয়ে...


    ২.

    কানের কাছে হাতের তালুর ছাতা ধরে যে সকল বৃষ্টিপাতের
    শব্দ শুনি সবই কি কেবল স্বগত স্বনন?
    একেকদিন তারই সম্ভাবনায় শেষবার ভিজে যায় মৌমাছিটির প্রাণ;
    হাতের তালুর ভেতর রেখেও পাই নাকো আর বিষণ্ণ হূলের জ্বালা!
    মরে যাওয়া তার অতিশয় নিরুত্তর তবু আমি স্তব্ধতার
    উৎস খুঁজি প্রিয় বাঁচবার সাধে, উঁচুনিচু ভূমির বান্ধব খাদটির
    স্খলিত মমির 'পরে – যেথা রয়ে গেছে কোনো
    এক নিসর্গের নির্যাস! সেই সব নিহিতই সোনা হয়ে আছে।
    হয়ত কনক ঝনৎকারে ইদানিং মিটে যাবে সাধ, তবু
    সোনা হতে খাদ, খাদ হতে সোনা... স্বয়মাগতা...
    পরমান্নের বাটির মতো প্যাঁচার দুটি চোখে
    জ্যোৎস্নার স্বপ্নের মতো...


    ৩.

    বেরোবার দিন ফিরে ফিরে আসে; তবু কত রোববার আছে
    অন্ধকারের আঠায় লেগে! তারা আটকায়,
    হরিণ-ছোটা তেজি রাস্তার উলটো পানে টেনে রাখে
    রজনীর রজ্জুতে বেঁধে
    বুকের কাঁকরে পাথুরে স্বনন; আমি শুনিতেছি;
    হলুদ নদী সবুজ বনের কাছে তৈরি হতেছে
    আমারই তরে মদ

    পরস্পর বিসংবাদী ঐ টান, এই মদ্য; তবুও
    অলিন্দে অনিন্দ্য ওরা, থাকে থাক না!
    বর্ষণ-মুখ কপাল হতে চূর্ণ অলক সরিয়ে
    চলে যাওয়া ইস্তক ইঁটের স্তোক দিয়ে
    সাজানো হোক বাড়ি

    বাড়ি চলে গেলে, তাহাদের শোক দিয়ে...



    অলংকরণ (Artwork) : আন্তর্জাল থেকে
  • মন্তব্য জমা দিন / Make a comment
  • (?)
  • মন্তব্য পড়ুন / Read comments