বাঁ-কানের পাশে লোম উঠে গেছে এরকম একটা ছোট্ট বাঁদরছানা কে যেন কবে চিকুকে ধরিয়ে দিয়েছিল৷ কি বলে ধরিয়ে দিয়েছিল এখন আর তার মনেও নেই। শুধু তার মাথায় আছে, আজীবন বাঁদরটাকে তার কোলে করে বয়ে বেড়াতে হবে। এক সময়ে বোধহয় বাঁদরটাকে সে ভালোই বেসেছিল। যদি তা হয়েও থাকে সেটা চিকুর দিক থেকে এক তরফা ছিল। বাঁদরটা চিকুর কথা শোনে না, এদিক-ওদিক পালিয়ে যায়, কখনো কখনো আঁচড়ে খিমচে চিকুর রক্ত বের করে দেয়। রাগে চিকুর গা কড়কড় করে। ওষুধ কেনার টাকা নেই, রক্তাক্ত শরীর নিয়েই রেল লাইনের ধারে পড়ে থাকে। নিজে থেকেই ক্ষতর মুখ বুজে গিয়ে মামড়ি পড়ে যায়। তবু বাঁদরটাকে চিকু চোখে হারায়। এক মুহূর্ত কোল থেকে নামালেই সবটা কেমন খালি খালি লাগে।
এরকম ভাবেই চলছিল আর কি। রোজকার মতো সেদিনও চিকু পার্ক স্ট্রীটের মোড়ে দাঁড়িয়েছিল। হাতে একটা তোবড়ানো অ্যালুমিনিয়ামের বাটি আর কোলে ওর পোষা বাঁদরটা। সবে সন্ধে হয়েছে, কিন্তু শীতের বেলা তো, তাই তাড়াতাড়ি অন্ধকার হয়ে গেছে। স্বচ্ছ কাঁচের ভেতর দিয়ে খাবারের দোকানের হলদে আলো এসে ফুটপাতের ওপর পড়েছে। কতদিন চিকু ওই কাঁচের ওপর নাক চেপে ধরে দোকানের ভেতরের রহস্যময় জগৎটা দেখার চেষ্টা করেছে! কপাল ভালো থাকলে দু'পয়সা জুটেও গেছে। খেয়েদেয়ে বেরিয়ে বড়লোকদের মন সবচেয়ে নরম থাকে এটা চিকু দেখেছে।
এইসব হিজিবিজি ভাবতে ভাবতেই সিগনাল লাল হয়ে গেল। চিকু লাইন করে দাঁড়িয়ে যাওয়া গাড়িগুলোর মধ্যে একটার দিকে ছুটে গেল।
“বাবু, দুটো পয়সা দাও না বাবু, সকাল থেকে কিছু খাইনি।”
কথাটা পুরোপুরি সত্যি নয়, কিন্তু সত্যিটা বোঝানোর, বা শোনার মতো সময় দু'পক্ষের কারুরই নেই। ওই সিগনালের আলোটা সবুজ হলেই যে যার পথে ছুটতে শুরু করবে।
“দাও না বাবু দুটো পয়সা,” গলাটা আরেকটু করুণ করে বলে চিকু।
গাড়ির ভেতরে বসা লোকটা চিকুর দিকে তাকিয়ে হাসে। গভীর হাসি। অনেকটা গোলকধাঁধার মতো। চিকু থমকে যায়। হাসিটা চিকুকে কোথায় যেন টেনে নিয়ে যায়। হঠাৎ চিকু দেখে কাঁধে বসা বাঁদরটা লাফিয়ে গিয়ে গাড়িতে বসে পড়ল। অমনি সিগনালও সবুজ হয়ে গেল আর গাড়িটা হুস করে বেরিয়ে গেল।
“আরে, আমার বাঁদরটা!” চিকু গাড়িটার পেছনে ছুটতে থাকে। “আমার বাঁদরটা তোমার গাড়িতে রয়ে গেল যে!”
কিন্তু ছুটে কি আর গাড়ির সঙ্গে পারা যায়? কোথা দিয়ে গাড়িটা বেরিয়ে গেল চিকু বুঝতেই পারল না। সে পাগলের মতো ছুটতে ছুটতে ফুটপাত ছাড়িয়ে চৌমাথায় এসে পড়ল। তারপর আর কোনদিকে যাবে বুঝতে পারল না। কি সর্বনাশ হয়ে গেল তার, কাকে বলবে সে কথা? পুলিশের কাছে যাবে? না বাবা, এক্ষুনি তাকেই হয়তো জেলে পুরে দেবে।
“বাঁদর কোথায় পেলি তুই? কার বাড়ি থেকে চুরি করেছিস?”
চিকুর দু'চোখে জল চলে এল। যেমনই হোক, এই পৃথিবীতে আপনার বলতে তো ওই বাঁদরটাই ছিল। যত কষ্টই হোক চিকু ওকে আগলে রেখেছিল, ওর কত যত্ন করত। এখন কোথায় গেল বাঁদরটা, কার কাছে গেল, কি হবে ওর? এত বড় শহরে চিকু ওকে কোথায়ই বা খুঁজবে?
ভাবতে ভাবতে চিকু আনমনে পথ চলতে থাকে। সব রাগ গিয়ে বাঁদরটার ওপর পড়ে। চিকু কি করবে? বাঁদরটা যদি ওর কাঁধ থেকে লাফিয়ে নেমে গাড়িটায় গিয়ে বসে, ও কি করে আটকাবে? ভেবে দেখতে গেলে, বাঁদরটা যেন সব সময়েই চিকুর হাত ছাড়িয়ে পালিয়ে যেতে চায়। চিকুই ওর পেছনে ছুটে চলেছে। হয়ত চিকু জানে, ওই বাঁদরটার হাত ছেড়ে দিলে ও প্লাস্টিকের থলি হয়ে আকাশে উড়ে যাবে...কিন্তু এবার তাহলে চিকু কি করবে? কি দিয়ে নিজেকে জমির সঙ্গে বেঁধে রাখবে?
সেদিন চিকুর আর ভিক্ষে করতে ইচ্ছে হল না। সঙ্গে একটু মুড়ি ছিল। সেটাই জল দিয়ে খেয়ে চট গায়ে দিয়ে শুয়ে পড়ল। মনের ভেতর একটা অদ্ভুত যন্ত্রণা। যেন ওর হৃৎপিণ্ডের খানিকটা কেউ কেটে বাদ দিয়ে দিয়েছে।
“বন্দর কহা গয়া?”
কমলি — চিকুর পাশেই শোয়। সেই সুবাদে চিকুর সঙ্গে একটু-আধটু বন্ধুত্ব হয়েছে।
“খো গয়া।”
কান্না চেপে চিকু বলল।
এপাশ-ওপাশ করতে করতে চিকু কখন যেন ঘুমিয়ে পড়েছিল। ঘুমের মধ্যে দেখে ও একটা সরু গলি দিয়ে দৌড়চ্ছে। দু'ধারে উঁচু উঁচু পাঁচিল ওর দিকে চেপে আসছে। বাঁদরটা একটা সাইকেলে চড়ে পালিয়ে যাচ্ছে। চিকু ওকে ধাওয়া করে ছুটে যাচ্ছে, কিন্তু যেতে যেতে রাস্তাটাই শেষ হয়ে গেল। বাঁদরটা চিকুর দিকে ফিরে তাকিয়ে ভেংচি কাটল। কিন্তু তখনি ওর মুখটা গণপত চাচার মতো হয়ে গেল। আবার ভেল্কির মতো চাচার মুখ বদলে রেখা মাসির মতো হয়ে গেল। চিকু পলক ফেলতেই রেখা মাসি বদলে মাসুদ ভাইয়ের মতো হয়ে গেল। চিকুকে ডেকে বলল,
“এই নে, বিস্কুট খা। মায়ের জন্যেও একটা নিয়ে যা।”
দেখতে দেখতে মাসুদ ভাইয়ের মুখ বদলে মায়ের মুখ হয়ে গেল।
“তুই এখানে চুপটি করে বসে থাক। কোথাও যাবি না। আমি আসছি।”
ভিড়ের মধ্যে মায়ের মুখ কোথায় হারিয়ে গেল। গণপত চাচা, মাসুদ ভাই, রেখা মাসি সবাই কোথায় হারিয়ে গেল। একা চিকু রেল লাইনের ধারে বসে অপেক্ষা করে রইল — মা বলে গেছে চুপটি করে বসে থাকতে। মা আসবে আবার, তখন চিকুকে না পেলে মা কত চিন্তা করবে। রাত হয়ে গেল, শেষ লোকালটাও বেরিয়ে গেল। তবুও মা ফিরে এল না...
ধড়মড় করে চিকু উঠে বসল। আকাশের দিকে তাকিয়ে দেখে সকাল হয়ে গেছে। কমলি ভিক্ষেয় বেরচ্ছে।
“তুই আসবি না?”
চিকু মাথা নাড়ে।
“বাঁদরটা যদি এসে আমাকে না পায়?”
“না পেলে বসে থাকবে।”
“ভয় পেয়ে যাবে গো,” চিকু কাঁচুমাচু মুখে বলল। “ডর যায়গা।”
কমলি ভুরু কোঁচকায়, কিন্তু আর কথা বাড়ায় না। একে একে সবাই কাজে বেরিয়ে যায়। একা চিকু রেল লাইনের ধারে বসে থাকে। মা বলেছিল চিকুর বাবা নাকি রেলে কাজ করত। তাই রেলে চড়তে টাকা লাগত না। একদিন রেলে চেপে সে কোথায় চলে গেল আর ফিরে এল না।
সেই জন্য চিকু রেলের ধারটা ছেড়ে কোথাও যায় না। নিজে স্থির থেকে জীবনের চলাচল দেখে যায়। বলা যায় না, কে কখন ফিরে আসে। এসে চিকুকে না পেলে তারা কি ভাববে? সবাই চলে গেলেও চিকুর তো কোথাও হারিয়ে যাওয়ার জো নেইকো।
এইভাবে দু’ দিন, তিন দিন কেটে যায়। কমলি চিকুকে নিজের ভিক্ষে করা পাঁউরুটি থেকে, ডালভাত থেকে ভাগ দেয়। শেষে আর না পেরে রাতে শোয়ার পরে চিকুকে ধরে বোঝায়।
“এভাবে তো চলবে না, বোন। রোজ রোজ তুই এখানে বসে থাকলে কি করে হবে? তুই তো না খেয়ে মরবি। নিজের কথাটা ভাব।”
চিকু জোর করে হাসে।
“এই তো, বাঁদরটা ফিরে এলেই বেরুব।”
“আবার ওই এক কথা...” কমলি অসহিষ্ণু ভাবে মাথা নাড়ে। “উ বন্দর অব নহী আয়গা।”
কথাটা শুনে চিকু যেন শিউরে উঠল। কপালের ওপর ছড়ানো রুক্ষ বাদামি চুলগুলো থরথর করে কাঁপতে থাকল।
“নহী আয়গা?”
আর কোনদিন বাঁদরটাকে সে দেখতে পাবে না? সত্যি পাবে না?
কমলি চিকুর হাতে হাত রাখে।
“এবার ইন্তেজার করা বন্ধ কর।”
তড়িৎস্পৃষ্টর মতো চিকু হাত সরিয়ে নিল। কমলির দিকে সন্দেহের চোখে তাকাল, যেন কমলি ইচ্ছে করে ওর সর্বনাশ করছে। দু'দিন ভিক্ষের ভাগ দিয়ে কমলি ভেবেছেটা কি? চিকুর মাথা কিনে নিয়েছে? চিকুকে একেবারে আগাগোড়া চিনে গেছে?
কমলি কিছুক্ষণ চিকুর দিকে তাকিয়ে রইল। তারপর আর কিছু না বলে অন্য পাশ ফিরল।
চিকু চটের বিছানা ছেড়ে ছিটকে লাফিয়ে উঠল।
“তুই কিচ্ছু জানিস না! ও আলবাত আমার কাছে ফিরে আসবে!”
কমলি উত্তর দেয় না। চিকুর চোখ বেয়ে জল নেমে এল। সত্যিই কি তার আর কারুর জন্যে অপেক্ষা করার নেই? এই পৃথিবীতে কি চিকুর আর কোন পিছুটান রইল না? তবে চিকু কেন রেল লাইনের ধারে পড়ে থাকবে? কেউ যদি ফিরে না-ই আসে, তবে যে দিকে তার দু'চোখ যায় ছুটে যেতে অসুবিধা কি? বাবার মতো রেলে চেপে যদি উধাও হয়ে যায় তাহলেই বা কে আটকাবে?
মাঝরাতের শহরের বুক চিরে চিকু ছুটতে শুরু করে দিল, রেললাইনের দুর্গন্ধ আর আবর্জনা পেছনে ফেলে রেখে। কমলির থেকে, ওর বিষাক্ত কথাগুলোর থেকে অনেক দূরে চলে যেতে হবে ওর। নইলে ওই কথাগুলো ওর সারা গা ময়লা করে দেবে।
তবু কমলির বলা কথাগুলো তার পিছু ছাড়ে না। মাথার দেওয়ালে ধাক্কা খেয়ে ঘুরপাক খেতে থাকে।
“উ বন্দর অব নহী আয়গা।”
না!
চিকু হাঁসফাঁস করে ওঠে। দমটা যেন আটকে আসে।
“উ বন্দর অব নহী আয়গা।”
উফ, অসহ্য! চিকুর খেয়াল নেই সে কোনদিকে যাচ্ছে, কত পথ পার হয়ে গেছে। কোনমতে কমলির বলা কথাগুলোর নাগালের বাইরে যেতে হবে তাকে।
হঠাৎ চিকুর কানে কি একটা আওয়াজ ভেসে এল। অনেকটা বৃষ্টি পড়ার মতো। কিন্তু আকাশে তো মেঘ নেই!
চোখ তুলে তাকিয়ে চিকু অবাক হয়ে গেল। সে কোথায় এসে পড়েছে? এ যেন একটা অন্য জগৎ। যত দূর চোখ যায় শুধু গাছের সারি, আর তাদের মধ্যে মধ্যে অগুনতি সাদা-নীল আলো। অচেনা হাওয়া বইছে। সেই হাওয়ায় গাছের পাতার আওয়াজ বৃষ্টির মতো ঝরে পড়ছে, অন্য সব শব্দকে ছাপিয়ে যাচ্ছে। মাথার ওপরে কাকের চেয়েও কুচকুচে কালো আকাশ, আর রুপোলি তারার চাদর।
রাত এত সুন্দর হতে পারে?
রেল লাইনের ধারে ক্ষতবিক্ষত শরীরে পড়ে থেকে কাটানো রাতগুলো এত সুন্দর তো ছিল না। এই হাওয়া, এই আকাশ তো সে আগে কখনো দেখেনি। পাতার শব্দ এত গভীর তো কখনো ছিল না! রাতটা যেন চিকুর পোকায় খাওয়া শূন্য অস্তিত্বে একসঙ্গে রামধনুর সাতটা রঙ ঢেলে দিচ্ছে। রেল লাইনের বাইরে এত সুন্দর একটা জগৎ আছে চিকু কোনদিন জানতেই পারেনি!
চিকুর মনের কালো অন্ধকারটা একটু যেন হাল্কা হতে শুরু করল। আচ্ছা, বাঁদরটাকে হারিয়ে সে নিঃসঙ্গ হয়েছে না মুক্তি পেয়েছে? এতদিন এই কথাটার উত্তর সে ভালো করে ভেবে দেখে নি। কিন্তু আজ খোলা আকাশের নীচে দাঁড়িয়ে যেন তার মনের মধ্যে রাখা বাক্সটারও চাবি খুলে যাচ্ছে। সত্যিই কি তার আর কারুর জন্য অপেক্ষা করার নেই?
“উ বন্দর অব নহী আয়গা।”
সেই কবে থেকে চিকু বাঁদরটাকে কোলে করে বয়ে বেড়াচ্ছিল। কখনো তাকে ভালবাসত কি না এখন আর মনেও পড়ে না। মাঝে মাঝে মনে হত ওরা কেউই কাউকে সহ্য করতে পারে না। তাও কি এক অজানা কারণে ওকে সব সময়ে কাঁধে চাপিয়ে ঘুরে বেড়াতে বাধ্য হত চিকু। আজ আর সেই ঝামেলা নেই। তাহলে চিকু কিসের জন্য মনমরা হয়ে আছে?
মুহূর্তের জন্য থেমে চিকু প্রাণ ভরে রাতের হাওয়ায় নিঃশ্বাস নিল। তারপর আগের চেয়েও দ্রুত গতিতে ছুটতে লাগল। তবে এবার আর সে কারুর ভয়ে ছুটে পালাচ্ছে না।
মুক্তির দিকে, দিগন্তে আঁকা রামধনুরও ওপারে থাকা আনন্দের দিকে চিকু বেপরোয়া হয়ে ছুটতে থাকল।
ছুটতে ছুটতে এক সময়ে ক্লান্ত হয়ে পড়ল সে। পুবের আকাশ তখন সবে ফর্সা হতে শুরু করেছে। দুয়েক জন বয়স্ক লোক ছোট প্যান্ট পরে রাস্তায় দৌড়তে বেরিয়েছে। চিকু একটা মোটা গাছের গুঁড়ি দেখে বসে পড়ল। তারপর নিজের অজান্তেই কখন আরামে, শান্তিতে তার দু'চোখ বুজে এল।
মাথায় একটা সাংঘাতিক থাপ্পড় খেয়ে চিকুর ঘুম ভেঙে গেল। প্রথমটায় বুঝতে পারল না কোথায় আছে। তারপর ধীরে ধীরে আগের রাত্রের স্মৃতি ফিরে এল।
ভয়ে ভয়ে চিকু চারিদিকে নজর ঘোরাল। পুলিশে থাপ্পড় মেরে তুলে দিল কি? জেলে দেবে না তো?
কিন্তু না। চেনা একজোড়া চোখ চিকুর দিকে তাকিয়ে আছে। সেই চোখের আশপাশে ঘন বাদামি লোম, আর তার ঠিক নীচে একটা খিঁচনো মুখ।
চিকু কয়েক বার পিটপিট করে চোখের পাতা ফেলল। এটা কি সত্যিই তার সেই পোষা বাঁদরটা? হ্যাঁ, তারই বটে। ওই তো, বাঁ-কানের পাশে লোম উঠে গেছে। কিভাবে যেন চিকুকে খুঁজে খুঁজে এখান অবধি চলে এসেছে।
“তুই কি করে ফিরে এলি?”
চিকু বাঁদরটাকে জড়িয়ে ধরতে যায়। বাঁদরটা খিমচে চিকুর হাত লাল করে দিল। চিকু দীর্ঘশ্বাস ফেলে। দিনের আলোয় বোঝা যাচ্ছে, ভোর বেলা যেখানে সে শুয়ে পড়েছিল সেটা একটা বড় পার্ক। সেখানে বাঁদর নিয়ে বসে থাকাটা নিরাপদ নয়। বলা যায় না, কে কোথায় নালিশ করে দেবে।
“চল, বাড়ি চল।”
আবার ফেরত চল, রেল লাইনের ধারের সেই চেনা জগতে, আবর্জনার পাশে, যেখানে রাত শুধুই অন্ধকার ডেকে আনে।
বাঁদরটার দিকে তাকিয়ে চিকু হালকা হাসল।
ভালো করে দেখলে হাসির আড়ালে লুকিয়ে থাকা হতাশাটাও চোখে পড়ে।