• Parabaas
    Parabaas : পরবাস : বাংলা ভাষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতি
  • পরবাস | সংখ্যা ৯০ | এপ্রিল ২০২৩ | গ্রন্থ-সমালোচনা
    Share
  • 'অনেক মুখ অনেক মুহূর্ত'- অনন্য জীবন ও সময়ের অ্যালবাম : রঞ্জন ভট্টাচার্য

    অনেক মুখ অনেক মুহূর্ত — মৃণাল সেন; থীমা, কলকাতা; প্রচ্ছদ বিন্যাস— প্রদীপ রায়; প্রথম প্রকাশ- জানুয়ারি ২০১৫, ISBN: 978-93-81703-59-5

    মৃণাল সেনের লেখা 'অনেক মুখ অনেক মুহূর্ত' চলচ্চিত্র বিষয়ক কোনো তাত্ত্বিক আলোচনার বই নয়। বিখ্যাত পরিচালকের স্মৃতিকথনও নয়। যদিও এই বইয়ে সংকলিত চৌত্রিশটি বাংলা ও তিনটি ইংরেজিতে লেখা নাতিদীর্ঘ প্রবন্ধের শিরায় শিরায় বহমান চলচ্চিত্র ও স্মৃতির আবেগ। সাঁইত্রিশটি প্রবন্ধ বিষয়ের দিক থেকে ভিন্ন হলেও নানা রঙের ফুলে গাঁথা মালার মতো তৈরি করেছে একটা আশ্চর্য চলমান কোলাজ। যে কোলাজে সাজানো প্রতিটা মুহূর্ত ও মুখচ্ছবির মধ্যে দিয়ে মূর্ত হয়ে উঠেছে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ও পঞ্চাশের মন্বন্তরের উত্তাল সময়ের পটভূমিতে শুরু হওয়া বাংলার প্রগতিশীল সাংস্কৃতিক আন্দোলনের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসের পথরেখা, একজন মার্কসবাদী চলচ্চিত্র নির্দেশকের জীবনদর্শনের গড়ে ওঠা ও সৃষ্টির মধ্যে তার প্রতিফলন এবং অবশ্যই তাঁর প্রিয় শহর কলকাতার হৃৎস্পন্দন।

    ২০১২ সালে মৃণাল সেনের নব্বইতম জন্মবর্ষের স্মারক হিসেবে এই সংকলন প্রকাশের প্রচেষ্টা শুরু হয় পশ্চিমবঙ্গ গণতান্ত্রিক লেখক শিল্পী সংঘ দক্ষিণ কলকাতা শাখা ও থীমার উদ্যোগে। উদ্দেশ্য, "... মৃণাল সেনের মতো সমাজমনস্ক ও দায়বদ্ধ শিল্পীর নব্বই বছরের জীবনপরিক্রমার সঙ্গে তাঁর ভাবনার পরিসরকে যুক্ত করে স্থায়ী ও সর্বজনলভ্য কিছু একটা ..." উপস্থাপনা। এই সূত্র ধরেই "চল্লিশ ও পঞ্চাশের দশকের কলকাতা তথা বিশ্বের যে রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক আন্দোলন মৃণাল সেনের ভাবনার জগতকে আলোড়িত করেছিল, তার ধ্রুব বিশ্বাস তৈরি করে দিয়েছিল, যা তিনি বিভিন্ন রচনায় প্রসঙ্গক্রমে বার বার তুলে ধরেছেন, সেই উপলব্ধির দ্যোতক কিছু মুখ, কিছু ঘটনা, কিছু মুহূর্ত একই মলাটের মধ্যে গ্রথিত করা..।" এই লক্ষ্য নিয়েই ২০১৫ সালে প্রকাশিত হয় 'অনেক মুখ অনেক মুহূর্ত'। বর্তমান আলোচনার ভিত্তি সংকলনটির থীমা থেকে ২০১৭ সালে এককভাবে প্রকাশিত পরিবর্ধিত সংস্করণ। এই সংস্করণের সংযোজন অংশে সলিল চৌধুরী ও রবি ঘোষ সম্পর্কে আরও দুটি স্মৃতিকথন যুক্ত হয়েছে।

    এই সংকলনে সংকলিত সাঁইত্রিশটি রচনার প্রথম তিনটি, 'সেদিনের কলকাতা', 'একটি জীবনী' ও 'পুরোনো কথা, নতুন ভাবনা' ছাড়া বাকি চৌত্রিশটিই নিকটজন বা বন্ধুদের স্মৃতিকথন। বন্ধুরাও স্বক্ষেত্রে প্রবাদপ্রতিম। এই স্মৃতিকথনের অনেকগুলিই শোকলিপি বা স্মারক গ্রন্থের জন্য লেখা। লেখকের কৃতিত্ব এখানেই যে কোনো শোকলিপিতেই ব্যক্তিগত শোকাবেগ তীব্র হয়ে উঠে লেখাগুলির সার্বজনীনতায় বাধা সৃষ্টি করেনি। 'অনুপকুমার ১'-এর সূচনায় অভিন্নহৃদয় বন্ধুসম আত্মীয়কে (পিসতুতো শ্যালক) হারানোর অশ্রুসিক্ত অনুভূতির বিবরণ থাকলেও শেষ পর্যন্ত অভিনেতা অনুপকুমারের ব্যক্তিরূপের অন্যন্যতাই প্রাধান্য পেয়েছে। এই ধরনের সবকটি প্রবন্ধেই প্রয়াত মানুষটির স্মৃতিকথনের মধ্যে দিয়ে তাঁর কৃতিত্ব, সর্বোপরি সেই সময়ের ছবিকে লেখক মূর্ত করতে চেয়েছেন। সম্মাননা গ্রন্থের জন্য লেখাগুলিও এই রকমই, ব্যক্তির কৃতিত্বের উল্লেখ মিশে গেছে ইতিহাসের মহাসমুদ্রে। সেই সামুদ্রিক জলদর্পণে প্রতিফলিত হয়েছে ব্যক্তি মৃণালের জীবনের পথরেখাও।

    ওপার বাংলার ফরিদপুরে স্কুলবেলাতেই মৃণাল সেনের পরিচয় ও হাতেখড়ি বাম মতাদর্শে। 'সুবোধ সেন'-এর স্মৃতিচারণা প্রসঙ্গে সেই কাহিনী পাঠকের সামনে তুলে ধরেছেন তিনি। শুধু সুবোধ সেন না, বগলা গুহ, 'দেশভাগের পর হুগলি জেলার অন্যতম কমিউনিস্ট নেতা' ( সুবোধ সেন পৃ. ৬০) শান্তি চট্টোপাধ্যায়ের কাছ থেকে মার্কসবাদের যে দীক্ষা তিনি পেয়েছিলেন আজীবন বেঁচেছেন সেই মতবাদকে আঁকড়ে ধরে। সুবোধ বাবু, যাঁকে মৃণাল মোহিত দা বলতেন, তাঁর বুদ্ধিমতোই প্রথম মিছিল সংগঠিত করে ছিলেন লেখক। সেই ঘটনার চিত্তাকর্ষক বর্ণনা রয়েছে 'সুবোধ সেন' প্রবন্ধে। বামপথে এই পদচারণা আরও ঋদ্ধ হয়েছে তাঁর কলকাতা জীবনে, হয়তো প্রত্যক্ষ রাজনীতির মধ্যে দিয়ে নয়, চল্লিশ-পঞ্চাশ দশকের বাম সাংস্কৃতিক আন্দোলনের উত্তাল তরঙ্গে।

    ১৯৪০ এ মৃণাল কলকাতায় এলেন বিএসসি পড়তে। জড়িয়ে পড়লেন বাম সাংস্কৃতিক আন্দোলনের সঙ্গে, প্রথমে দর্শক হিসেবে, পরে কর্মী হিসেবে সক্রিয়ভাবে। '১৯৪৩ এর পর আর দেশে' (সেদিনের কলকাতা পৃ. ৩) ফিরে যেতে পারেননি কারণ তাঁকে 'ফরিদপুর আর টানে না' (সেদিনের কলকাতা পৃ. ৩)। ৪৩-এর দুর্ভিক্ষ, বিশ্বযুদ্ধ আর কলকাতা শহর জুড়ে বাম সাংস্কৃতিক আন্দোলনের জোয়ার। সেই জোয়ারের তরঙ্গ উত্তাল হল বিজন ভট্টাচার্যের 'নবান্ন' নাটকে। 'গঙ্গাপদ বসু' স্মৃতিকথায় মৃণাল বর্ণনা করেছেন 'নবান্ন' দেখার অভিজ্ঞতার কথা, 'লোকে লোকারণ্য মধ্য কলকাতার মহম্মদ আলি পার্ক, নাটকের দর্শক নবান্ন- এর। চট ঝুলিয়ে নাটক চলছে অভূতপূর্ব।' (গঙ্গাপদ বসু পৃ. ৩০)। এই 'নবান্ন'ই লেখককে আকৃষ্ট করল গণনাট্য সঙ্ঘের প্রতি - 'বলা বাহুল্য, এক নাটকেই ধরাশায়ী হলাম, দলের প্রতি আকৃষ্ট হলাম ভয়াবহভাবে, ঠিক যেমন আজকাল অনেক ছেলেমেয়েরা আকৃষ্ট হয়ে থাকেন সিনেমার পপ্-শিল্পীদের প্রতি। (গঙ্গাপদ বসু, পৃ. ৩০)। তেতাল্লিশে যার সূচনা, সাতচল্লিশে স্বাধীনতার পর ভাঙন ধরল সেই গণনাট্য সঙ্ঘে। ভারতবর্ষের প্রতিভাধর শ্রেষ্ঠ সাংস্কৃতিক কর্মীদের অনেকেই বাম আদর্শকে ধারণ করেই গণনাট্য সঙ্ঘ থেকে বেরিয়ে এলেন। 'শম্ভু মিত্র প্রসঙ্গে' রচনায় লেখক লিখেছেন সেই ভাঙনের কারণ, সংক্ষেপে কিন্তু বক্তব্যে তা অমোঘ – 'যুদ্ধ শেষ হতেই… পরিবর্তন ঘটল এদেশের রাজনীতিতেও। ক্ষমতা হস্তান্তর হল।’

    স্বাভাবিক নিয়মেই তখন অন্যান্য দেশের মতো এদেশের সমাজেও সর্বস্তরে চিন্তায় ভাবনায় মতাদর্শে জটিলতা দেখা দিল এবং সেই জটিলতা সংক্রামিত হল সংস্কৃতির আসরেও, শম্ভু মিত্র - বিজন ভট্টাচার্যের দলেও। (পৃ. ৫২)।

    গণনাট্য ভাঙল কিন্তু গণনাট্যের আদর্শ ভীষণভাবে জীবিত রইল বাংলার সাংস্কৃতিক জগতে। রাজপথের রাজনীতিও তীব্রতর হল পঞ্চাশ-ষাটের দশকে। মৃণাল সেন তখন চলচ্চিত্রমুখী। সেই সময়ের কথা তিনি লিখেছেন 'ঋত্বিক ঘটক' শোকলিপিতে।

    হাজরা রোডের কৌলীন্যহীন 'প্যারাডাইস কাফে'তে প্রতিদিন সকাল-বিকেল জড়ো হতেন তিনি, ঋত্বিক ঘটক, সলিল চৌধুরী, তাপস সেন, হৃষিকেশ মুখোপাধ্যায়, বংশীচন্দ্র গুপ্ত, নৃপেন গঙ্গোপাধ্যায়। সেই আড্ডার বিষয়ে মৃণাল লিখেছেন, '.. বার বার নানা কথার মধ্যেও যে প্রশ্নে, যে তর্কে, যে বিষয়ে ফিরে আসতাম, তা হল সিনেমা। সিনেমা, সিনেমা আর সশস্ত্র বিপ্লব। সিনেমাকে বিপ্লবের সঙ্গে জড়িয়ে নিয়ে আমরা চলতে শিখেছিলাম সেদিন থেকেই।' ( ঋত্বিক ঘটক, পৃ. ৮২)। কিন্তু চলচ্চিত্র জগতে তাঁদের প্রবেশ নির্মাতা হিসেবে নয়, ট্রেড ইউনিয়ন কর্মী হিসেবে, 'সিনেমার রাজ্যে ঢোকা প্রায় যখন অসম্ভব মনে হচ্ছিল তখন আমরা সবাই ঠিক করলাম স্টুডিওর অসচ্ছল কর্মী ও কলাকুশলীদের নিয়ে একটি সক্রিয় ট্রেড ইউনিয়ন গড়ে তুলব।' ( ঋত্বিক ঘটক, পৃ. ৮৪)। সেই সময় কাকদ্বীপে শহীদ অহল্যাকে নিয়ে তাঁদের ছবি করার পরিকল্পনাও ব্যর্থ হয়েছিল। শুধু চিত্রপরিচালক হয়ে ওঠার প্রথম দিকের স্মৃতিকথাই নয়, এই বইয়ে সংকলিত 'একটি জীবনী', 'পুরোনো কথা, নতুন ভাবনা', 'বাংলা সিনেমার দর্শক ও ছিন্নমূল', ‘সত্যজিৎ রায়' ইত্যাদি প্রবন্ধে ছড়িয়ে রয়েছে মার্কসবাদে অনমনীয় বিশ্বাসী মৃণাল সেনের সিনেমা-দর্শনের নানা দিক। সেই ভাবনা যে সর্বমান্য বা বিতর্কাতীত এমন বলা যায় না। তথাকথিত বাণিজ্যিক ছবির অন্তঃসারশূন্যতার কথা তাঁর তুলে ধরাটা স্বাভাবিক। কিন্তু সেই সূত্রেই প্রমথেশ বড়ুয়া সম্পর্কে তিনি যখন বলেন, 'সমাজসচেতনতার অভাবের দরুনই উঁচুদরের ক্রাফ্‌টসম্যান (craftsman) হয়েও তাই বড়ুয়া সমকালীন চরিত্রচিত্রণে তাঁর শিল্পজীবনে কোনো মহৎ শিল্প সৃষ্টি করতে সক্ষম হতে গিয়েও হতে পারলেন না।' (প্রমথেশ বড়ুয়া, পৃ. ২২), তখন তা নিশ্চিতভাবেই তার্কিক আলোচনার বিস্তৃত পরিসর তৈরি করে। একই ভাবে সত্যজিৎ রায়ের সিনেমার প্রসঙ্গে তাঁর মন্তব্য, 'প্রথম দশটা বছর, ৫৫ থেকে ধরা যাক ৬৫ পর্যন্ত, মানিকবাবুর ছবি করার স্বর্ণ অধ্যায়।' ( সত্যজিৎ রায়, পৃ. ৬৯) তখন যে কোনো সমালোচকের তার্কিক হৃদয় উত্তেজিত হয়ে উঠতে পারে। এই মন্তব্যের কিছুটা পরেই তিনি সত্যজিৎ রায়ের সিনেমা প্রসঙ্গে আর একটি বিতর্কিত বিষয়ের উল্লেখ করেছেন। তাঁর মতে 'পথের পাঁচালী' ও 'অপরাজিত'-র পরই তাঁর ছবি, 'স্কিমের মধ্যে ঢুকে পড়ল, ঢুকে পড়ল নিটোল কাহিনীবৃত্তে। কাহিনীসূত্র নিশ্চয়ই থাকবে ছবি করার পিছনে, কিন্তু খোলা হবে গল্পের মুখটা, যাতে যেকোনো দিকেই চলে যেতে পারে ছবিটা। বেশি স্কিম্যাটিক হয়ে গেলে ছবির গতিমুখ বা মুহূর্তকে প্রেডিক্টেবেল বা অবভিয়াস লাগতে পারে দর্শকের।' ( সত্যজিৎ রায়, পৃ. ৬৯)।

    এই সংকলনের আর একটি দিক কলকাতা শহর। 'সেদিনের কলকাতা', 'সলিল চৌধুরী' ছাড়াও এ বইয়ের অনেক লেখাতেই ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে কলকাতা। ইংরেজিতে লেখা 'Bimal Roy' প্রবন্ধের শুরুই করেছেন লেখক কলকাতার কথা দিয়ে, 'Come to Calcutta, the city that is intensely hated and dangerously loved.' (পৃ. ১১৩)। আসলে মৃণাল সেনের প্রিয় শহর তো বটেই, প্রিয় বিষয়ও কলকাতা। কলকাতা ৭১, পদাতিক, ও কোরাস - এই তিনটি ছবির মধ্যে দিয়ে তিনি দর্শকের কাছে তুলে ধরেছেন তাঁর প্রিয় শহরের ইতিকথা। কিন্তু সে কলকাতা কীরকম? 'সলিল চৌধুরী' শোককথায় নিজেরই একটি পুরোনো লেখা 'ভূত-বর্তমান-ভবিষ্যৎ'-এর পুরোটা অন্তর্ভুক্ত করেছেন লেখক মৃণাল। তার সূচনায় তিনি নিজেই তুলে ধরেছেন তাঁর কলকাতার ছবি, 'এ-দেশের যে শহরটা বারুদে ঠাসা - তার নাম কলকাতা। কলকাতায় মিছিল, আওয়াজ, প্রতিবাদ। কলকাতায় বিক্ষোভ, ক্রোধ, ব্যারিকেড আর বোমা। কলকাতা বেপরোয়া, কলকাতা মারমুখী।' (পৃ. ১২৪) আজকের মেরুদণ্ড হারিয়ে যাওয়া সময়ের নাগরিক এ বইয়ের নানা প্রবন্ধে দেখে নিতে বা খুঁজে নিতে পারবেন সেই নিখোঁজ বিপ্লবী কলকাতাকে।

    উপসংহারে পৌঁছে অবশ্যই লেখক মৃণাল সেনের সম্পর্কে কিছু কথা বলতে হয়। দ্রুত চালের আটপৌরে সহজ কথকতায় তিনি যেভাবে প্রবন্ধগুলি গেঁথেছেন পড়তে পড়তে মনে হয় চোখের সামনে পর্দায় দৃশ্যমান কোনো চলচ্চিত্র। গতানুগতিক স্মরণ বা স্মারক রচনার ভিন্ন পথে, ভিন্ন আঙ্গিকে উপস্থাপিত হয়েছে সংকলিত এই ঘরানার লেখাগুলি। সংযমী আবেগে, মার্কসবাদী যুক্তিঋদ্ধ দৃষ্টিতে তিনি স্মৃতিচারণ করেছেন সমপথের বন্ধুদের জীবন, তাঁদের শিল্পীরূপ এবং মানবরূপ। জসিমুউদ্দিন, জ্যোতিরিন্দ্র মৈত্র, রবি ঘোষ, তাপস সেন, সলিল চৌধুরীর মতো বহু পরিচিত ব্যক্তিত্বের বহু অজানা রূপ মৃণাল সেনের লেখায় পাঠকের জন্য অপেক্ষা করে আছে শিলাদিত্য দাশগুপ্ত গ্রন্থিত আলোচ্য গ্রন্থের পাতায় পাতায়। তবে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য দুটি লেখা - 'চাঁদবণিকের পালা : শম্ভু মিত্র' ও 'দীপেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়'। 'চাঁদবণিকের পালা'র অসাধারণ বিশ্লেষণ এবং দীপেন্দ্রনাথের প্রয়াণ কথায় নিজের অনুভূতির প্রসঙ্গ সংক্ষিপ্ত করে মৃণাল যেভাবে দীপেনের স্বল্পালোচিত কিন্তু অনবদ্য একটি সম্পূর্ণ লেখা 'একজনের নাম দীপেন্দ্রনাথ'-কে জায়গা করে দিয়েছেন, তা এই সংকলনকে অমূল্য সম্পদে উন্নীত করেছে। এককথায় 'অনেক মুখ অনেক মুহূর্ত' অনন্য একটি সংগ্রহযোগ্য অ্যালবাম, প্রতিভা ও ইতিহাসের স্মরণীয় দলিল।

  • মন্তব্য জমা দিন / Make a comment
  • (?)
  • মন্তব্য পড়ুন / Read comments