রোগা ছিপছিপে চেহারা, চোখে গোল ফ্রেমের চশমা, চুলে দুই বিনুনি, ঝকঝকে হাসির কিশোরী এক মেয়ে। উজ্জ্বল চোখদুটির দ্যুতি চশমার আবরণ ভেদ করে তার জাত চিনিয়ে দেয়। শান্তিনিকেতনে এসে ভর্তি হয়েছে বৃত্তি নিয়ে। কলকাতায় বেথুন স্কুলে পড়ত। ম্যাট্রিক পরীক্ষা দেওয়ার আগেই সংগীতভবনের স্কলারশিপ পেয়ে এসে হাজির হয়েছে গান শিখবে বলে। ঠিক কুড়ি দিন আগেই চিরবিদায় নিয়েছেন শান্তিনিকেতনের প্রাণপুরুষ। অস্ত্রোপচার করতে তাঁর অমতেই তাঁকে কলকাতা নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। শেষরক্ষা হয়নি। চিকিৎসকরা হার মেনেছেন। তাঁরই স্মরণসভা হল কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের আশুতোষ হলে। মেয়ে তার দিদির বান্ধবী উমা স্নেহানবীশএর সঙ্গে গিয়েছিল সেই সভায়। মনটা বড্ড খারাপ। স্বপ্ন ছিল তাঁর পায়ের কাছে বসে গান শিখবে। স্কলারশিপ পেয়েছে, সব ব্যবস্থাও পাকা। এই সময়েই নক্ষত্রপতন! ভারী মন নিয়ে মেয়ে কবিগুরুর স্মৃতিচারণ অনুষ্ঠানে খালি গলায় গান গেয়ে এসেছে - “যখন পড়বে না মোর পায়ের চিহ্ন এই বাটে।”
শান্তিনিকেতনে এসে প্রথম সে অনুভব করল - তিনি রয়েছেন। আলো-হাওয়া-গানে-গানে-নিঃশ্বাসে-প্রশ্বাসে সবখানে তাঁর উপস্থিতি। মেয়ে চমকিত। এই তো সেদিন গাইল তাঁরই গানের বাণী, “তখন কে বলে গো সেই প্রভাতে নেই আমি! সকল খেলায় করবে খেলা এই আমি।” মেয়ে শিহরিত। তার মানে তিনি জানতেন, তিনি সব জানতেন। তাই তো এমন লিখতে পারলেন, “আসব যাব চিরদিনের সেই আমি।”
মেয়ের মনখারাপ উধাও হচ্ছে। শান্তিনিকেতনে সংগীতভবনে গানের শিক্ষা দিচ্ছেন গুরুদেবেরই হাতে গড়া একঝাঁক মানুষজন। শৈলজারঞ্জন মজুমদার আছেন তাঁর সমুদ্রের মত ব্যাপ্তি নিয়ে, শান্তিদেব ঘোষ আছেন তাঁর মুক্তচিন্তা নিয়ে। আছেন রবীন্দ্রনাথের প্রিয় ভ্রাতুষ্পুত্রী ইন্দিরা দেবী চৌধুরানী, তাঁর কমলহীরের দীপ্তি ছড়িয়ে। এস্রাজে বিষ্ণুপুরের বন্দ্যোপাধ্যায় বংশের অশেষ বন্দ্যোপাধ্যায়। রবীন্দ্রসংগীতের যন্ত্রানুষঙ্গে তাঁর কথাই শেষ কথা।
এ হেন তারকাখচিত গুরুকুলে শিক্ষার্থী হয়ে আছেন ভবিষ্যতের একঝাঁক উজ্জ্বল নক্ষত্র। রোগা, চশমাপরা মেয়েটি তার সতীর্থ হিসেবে পেয়ে গেল কণিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, অরুন্ধতী গুহঠাকুরতা, কমলা সেন (বসু), চিত্রা মজুমদার, অশোকতরু বন্দ্যোপাধ্যায়কে। প্রত্যেকেই প্রতিভাবান, সিরিয়াস শিক্ষার্থী। সবারই নজর কাড়ল নতুন মেয়েটি। বিশেষ করে কণিকা, যার ডাক নাম মোহর। গ্রাম-ঘর থেকে আসা সাদাসিধে মেয়েটির বাঁশির মত মধুর গলা, কিন্তু বড্ড মুখচোরা। নিজেকে আড়ালে লুকিয়ে রাখতে পারলেই বাঁচে। মুগ্ধ নয়নে সে কলকাতা থেকে আসা শহুরে, স্মার্ট মেয়েটির দিকে চেয়ে চেয়ে দেখে। অনেক বছর পরে বিখ্যাত গায়িকা কণিকা বন্দ্যোপাধ্যায় সেই অতীত দিনের স্মৃতিচারণ করবেন, “কী রকম ঝরঝরে চেহারা, টরটরে কথাবার্তা, কী স্মার্ট চলাফেরা! আমরা অবাক হয়ে সুচিত্রাকে দেখতুম।”
ওহো, বলাই তো হয়নি, সেই মেয়ের নাম সুচিত্রা। সৌরীন্দ্রমোহনের মেয়ে সুচিত্রা মুখোপাধ্যায়। লোকে তাকে ডাকনামে ডাকে গজু। সে ডাকনামের একটা ইতিহাস আছে।
বাবা সৌরীন্দ্রমোহন সপরিবারে বেড়াতে গিয়েছিলেন। সঙ্গে সন্তানসম্ভবা স্ত্রী সুবর্ণলতা। ফেরার পথে সুবর্ণলতার প্রসবের সময় উপস্থিত হয়। সৌরীন্দ্রমোহন স্ত্রীকে নিয়ে সামনের অখ্যাত স্টেশনে নেমে পড়লেন। শিশুর জন্ম হল “গুজান্টি” নামের স্টেশনে। স্টেশনের নামের সঙ্গে মিলিয়ে তার আদরের নাম দেওয়া হল “গজু”। আর ভালো নাম সুচিত্রা।
এ হেন গজুর দিকে আশ্রমবালিকা মোহর দূর হতে মুগ্ধ চোখে চেয়ে থাকে। আরেকজন সতীর্থ কিন্তু সহজে গজুকে জমি ছাড়েনি। সে হল ঢাকার বিখ্যাত গুহঠাকুরতা পরিবারের মেয়ে অরুন্ধতী, ডাক নাম নুকু। রবীন্দ্রনাথ নিজে তার গানের পরীক্ষা নিয়ে চমৎকৃত হয়েছিলেন। সংগীতভবনের পরীক্ষাগুলোয় নুকু যদি ফার্স্ট হয় তো মোহর সেকেন্ড। অপূর্ব সুন্দরী নুকু, আর তেমনি তার ব্যক্তিত্ব, ঐটুকু বয়েসেই।
মোহর দূর থেকে দেখে গজু আর নুকুর ব্যাপারস্যাপার।
পরে সেসব দিনের কথা মনে করে প্রবাদপ্রতিম কণিকা বন্দ্যোপাধ্যায় লিখলেন, “তখন সুচিত্রার সাথে কিছুটা সমান তালে পাল্লা দিতে চেষ্টা করত অরুন্ধতী। কিন্তু ঠোক্করও খেতেন।”
বন্ধুদের মাঝে শিক্ষকদের তত্ত্বাবধানে অনাবিল আনন্দে কাটে দিন। গজুর সম্পদ তার উদাত্ত সুরেলা কণ্ঠ আর স্পষ্ট উচ্চারণ। সবার মধ্যে তার গান আলাদা করে জাত চিনিয়ে দেয়।
তথাকথিত লক্ষ্মী মেয়ে ছিল না সে মোটেই! সুস্থির হয়ে দুদণ্ড বসার মেয়ে সে নয়। আশ্রমকন্যা বলে সে ললিতলবঙ্গলতা হবে না কি? কভি নেহি! আজ যদি কলাভবনের ছাত্রদের সঙ্গে মিলে ভলিবল খেলছে তো কালই তাদের সঙ্গে মিলে চলল কেন্দুলিতে জয়দেবের মেলায়। সেখানে অবশ্য অন্য মেয়েরাও গেছে, গরুর গাড়ি চেপে। মেয়ে বলেই তাদের জন্যে অন্য ব্যবস্থা। কিন্তু গজু মেয়ে হিসেবে বাড়তি সুবিধে নেবার পাত্রীই নয়! চলন্ত ট্রেন থামিয়ে যে মেয়ের জন্ম হয়েছিল বিহারের এক অখ্যাত স্টেশনে, দাদাদের সঙ্গে ফুটবল খেলে যে বড় হয়েছে, সে যাবে গরুর গাড়ির নিরাপত্তার ঘেরাটোপে? সারাটা পথ গজু পায়ে হেঁটে গেল, ছেলেদের সঙ্গে। এতটাই স্বাধীনচেতা সে। বাকিরা অবাক।
নিজের অজান্তেই গজু তার ভবিষ্যতের রাস্তা ঠিক করে নিচ্ছে। প্রথাভাঙা, বন্ধনহীন রাস্তা।
সাহায্য করছেন গুরু শান্তিদেব ঘোষ। তার সংগীতশিক্ষা প্রধানত শান্তিদেবের হাতে। মোহর আর নুকু দুজনেই শৈলজারঞ্জন মজুমদারের একনিষ্ঠ ছাত্রী। কিন্তু গজুর ওপর শান্তিদেবের মুক্তমন আর মুক্তচিন্তার অসীম প্রভাব।
এমন ভাবেই কান্নাহাসির দোল দোলানো পৌষ ফাগুনের পালায় সময় বয়ে যায়। তরুণী সুচিত্রার শান্তিনিকেতনের মেয়াদ ফুরিয়ে এল। শেষ বছরে তার রবীন্দ্রসংগীতের প্রথম রেকর্ডটি বার হল। দুটি গান নিয়ে - “মরণরে, তুঁহুঁ মম শ্যাম সমান” আর “হৃদয়ের একূল ওকূল দুকূল ভেসে যায়।” জনপ্রিয় হল সুচিত্রার গান।
ততদিনে সুচিত্রা প্রাইভেটে ম্যাট্রিক পরীক্ষা পাশ করেছে। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী হিসাবে প্রাইভেটে ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষা দেবার প্রস্তুতি চলছে। সেটা ১৯৪৫ সাল। শান্তিনিকেতন থেকে রবীন্দ্রসঙ্গীতে ডিপ্লোমা এল একই বছরে৷ কলকাতায় ফিরে এবার স্কটিশ চার্চ কলেজে ভর্তি হওয়া, অর্থনীতিতে অনার্স নিয়ে বিএ পড়া শুরু।
বরাবরই সুচিত্রা সমাজসচেতন, বাস্তব পরিস্থিতি নিয়ে ওয়াকিবহাল, যে কোনও সামাজিক বা রাজনৈতিক ইস্যুতে তার সুস্পষ্ট মতামত আছে। কলকাতায় ফিরে তরুণী সুচিত্রা নিজেকে ছড়িয়ে দিলেন নানা দিকে। দিদিরা আই পি টি এ (IPTA) র সঙ্গে যুক্ত। আই পি টি এ, অর্থাৎ ইন্ডিয়ান পিপলস থিয়েটার অর্গানাইজেশন, যার বাংলা নামটি হল ভারতীয় গণনাট্য সংঘ। সুচিত্রার যোগ দিতে দেরি হল না। গণনাট্য সংঘর সূত্রে পরিচয় হল একঝাঁক উজ্জ্বল প্রতিভাবান তরুণ তরুণীর সঙ্গে। পরে কিংবদন্তী গায়িকা সুচিত্রা মিত্রের লেখায় পাওয়া যাবে স্মৃতিচারণ, “প্রায় প্রতি সন্ধ্যায়ই যেতাম ৪৬ ধর্মতলা ষ্ট্রীটের চার তলায়। সেখানে নিয়মিত বসত হয় সাহিত্য বৈঠক, নতুন লেখা পড়া, কবিতা পাঠ, নয়তো তরুণ শিল্পীদের আঁকা চিত্র প্রদর্শনী আর নয়তো গানের আসর।”
কে নেই সে আসরে? ঈর্ষণীয় সে তালিকা। আবার ফিরে যাই স্মৃতিচারণে।
“বটুকদা-জ্যোতিরিন্দ্র মৈত্র, জর্জ-দেবব্রত বিশ্বাস, বিনয় রায়, হেমাঙ্গ বিশ্বাস, সলিল চৌধুরী, হেমন্ত, নির্মলেন্দু চৌধুরী, বিজন ভট্টাচার্য, শম্ভু মিত্র, তৃপ্তি মিত্র (তখন ভাদুড়ী) প্রমুখের সঙ্গে ভাবের আদান-প্রদান ঘটেছে, শিখেছি অনেক কিছু, হয়তো বা শিখিয়েছিও।”
দেখা গেল গানই হয়ে উঠছে গণনাট্য সংঘের জনসংযোগের প্রধান মাধ্যম। গান গেয়ে মিছিলে হাঁটা, গান গেয়েই প্রতিবাদ। গানই অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের হাতিয়ার।
সে সব উদ্দীপনার দিন। লেখা হচ্ছে নতুন নতুন গান, সুর দেওয়া হচ্ছে সে সব গানে। গাইছেন গণনাট্য সংঘের শিল্পীরা। সুচিত্রা তাঁদের মধ্যে অন্যতম। বন্ধু সলিলের কথায় ও সুরে গাইছেন। স্টেজ শেয়ার করছেন জর্জ বিশ্বাসের সঙ্গে। ছেচল্লিশের দাঙ্গায় রক্তাক্ত কলকাতার রাজপথে খোলা ট্রাকের উপর দাঁড়িয়ে গাইলেন রবীন্দ্রনাথের গান, “সার্থক জনম আমার, জন্মেছি এই দেশে।” আবেগে ভাসছে অস্থির জনতা। শান্তিনিকেতনের আশ্রমের সুচিত্রা আর রাজপথের সংগ্রামী সুচিত্রা মিলেমিশে একাকার।
সেই ছোট্টবেলা থেকেই স্বাধীন ভাবনাচিন্তার মানুষ সুচিত্রা, কোনোরকম বন্ধনে বিশ্বাসী নন। নিজের সামাজিক সচেতনতা, রাজনৈতিক মতামত আর দায়িত্ববোধের ওপর পূর্ণ আস্থা।
সে সময় সলিল চৌধুরী চিন্তাভাবনা চালাচ্ছেন রবীন্দ্রনাথের ‘কৃষ্ণকলি আমি তারেই বলি’ গানটি নিয়ে। সুচিত্রার কণ্ঠে এ গান যেন জীবন্ত হয়ে ওঠে। সলিল আঁকলেন রোম্যান্টিকতার বাইরে গিয়ে এক অন্য ছবি। ময়নাপাড়ার কৃষ্ণকলি যখন মন্বন্তরের আগুন পেরিয়ে আসে, তার শতচ্ছিন্ন আঁচল আর ক্ষুধার্ত মুখে তৈরী হয় কৃষ্ণকলির সিকুয়েল। রবীন্দ্রনাথের গানের কৃষ্ণকলিকে আশ্রয় করেই সলিল বাঁধলেন তাঁর গণসংগীত “সেই মেয়ে।” এ গানে মন্বন্তরের রূঢ় বাস্তব, রোম্যান্টিসিজমের জায়গা অধিকার করে নেয় বেঁচে থাকার লড়াই। মনে পড়ায় কবি সুকান্তের উচ্চারণ - “পূর্ণিমার চাঁদ যেন ঝলসানো রুটি!” বন্ধু সুকান্তের সঙ্গে একই পথ হেঁটেছেন সলিল। রোম্যান্টিসিজমের বদলে নগ্ন বাস্তবকে তুলে ধরেছেন গণনাট্য সংঘের গানে।
“সেই মেয়ে” গান শুরু হয় তবলা ছাড়া, ঢিমে লয়ে। গানের মধ্যে আসে একাধিক তালফেরতা। যা সলিলের গানের বৈশিষ্ট্য। ছয় মাত্রার দাদরা থেকে সাত মাত্রার তেওড়া তাল ঘুরেফিরে আসে। সাতমাত্রার তেওড়া-র লয় বদলে বদলে যায়। ক্ষুধা আর মন্বন্তরের আবহে ঢিমে লয়ে নাটকীয়তা আসে। এমন এক্সপেরিমেন্ট সলিল বেশ কয়েকটি গানে করেছেন। বেশিরভাগই হেমন্তের গলায় গাওয়া। অন্যরূপের কৃষ্ণকলির সেই গান আর কে ই বা গাইতে পারে, সুচিত্রা ছাড়া? এমন নাটকীয়তার নির্মাণ একমাত্র সুচিত্রার উদাত্ত গলায় সম্ভব।
ততদিনে সুচিত্রার গলায় রবীন্দ্রনাথের কৃষ্ণকলি সবার বড় চেনা। ঘোমটা ভুলে মুক্তবেণী পিঠে লুটিয়ে শ্যামা মেয়ের ব্যস্ত পায়ে ঘরের বাইরে আসার দৃশ্যপট মায়া ছড়ায় শ্রোতার কানে।
সলিলের সুরে সেই সুচিত্রাই এবার আঁকলেন ময়নাপাড়ার মেয়ের করুণ দুর্দশার ছবিটি। জিজ্ঞেস করলেন, “হয়তো তারে কৃষ্ণকলি বলে কবিগুরু তুমি চিনেছিলে?” এমন প্রশ্ন তুলতে দুবার ভাবতে হয়নি তাঁকে।
বৈপরীত্যের চিত্রটি আঁকতেন গণনাট্য সংঘের অনুষ্ঠানে পরপর দুটি গান গেয়ে। রবীন্দ্রনাথের “কৃষ্ণকলি” গেয়ে তার পরেই গাইতেন সলিলের “সেই মেয়ে।” চূড়ান্ত সফল আর জনপ্রিয় হল গানের এই নিরীক্ষা।
কিন্তু শান্তিনিকেতন বেঁকে বসল। তথাকথিত রবীন্দ্রভক্তরা সুচিত্রাকে আক্রমণ ও অপমান করলেন। গানের ডিস্ক ভেঙে দিলেন।
কেন? কী তাঁর অপরাধ?
তাঁর নিজের কথায়, “আমি কেন এক দাগি কমিউনিস্টের পাল্লায় পড়ে রবীন্দ্রনাথের কৃষ্ণকলির parody গাইলাম।”
অভিযোগের উত্তরও দিলেন স্পষ্ট ভাষায়, “আমি সেদিনও বলেছি, আজও বলছি— ‘সেই মেয়ে’ কৃষ্ণকলির parody নয়। সলিলের প্রতিভাকে আমি ঠিকই চিনেছিলাম। ওঁরাই চেনেননি।... রবীন্দ্রনাথ বেঁচে থাকলে সলিলের সঙ্গীতপ্রতিভাকে সম্মান জানাতেন, স্বীকৃতি দিতেন, এতে আমার সন্দেহ নেই।”
এই হলেন সুচিত্রা। সুচিত্রা মিত্র। রবীন্দ্রনাথের গান তাঁর জীবনের অবলম্বন। কিন্তু সবার ওপরে রয়েছে তাঁর নিজের দর্শন, আদর্শ, আর বিশ্বাস, মেরুদণ্ড সোজা করে নিজের শর্তে বাঁচা। এখানেই তিনি অনন্যা। শুধুমাত্র একজন বিখ্যাত শিল্পীর পরিচয়কে ছাপিয়ে গিয়ে ভয়হীন এক পরিপূর্ণ মানুষ।
তথ্যসূত্র:
সুচিত্রা মিত্রের লেখা ‘পুরনো আখরগুলি'
সুচিত্রা মিত্রের আত্মজীবনী 'মনে রেখো'
Suchitra Mitra - Her Life Story | My Life My Music: A Musical Biography made by SAREGAMA