স্থবির বক্ষ
স্থবির বিরাট বক্ষের উন্মুক্ত উপত্যকায়
ক্রোধ, দুঃখ, ভয় ও অন্যান্য শিশুরা
ঘুমিয়ে রয়েছে পাশাপাশি।
কোনো বিশেষ শব্দে
অথবা জনৈক হাওয়ার উস্কানিতে
কেউ কেউ জেগে উঠবে আচম্বিতে।
কোনো অদ্ভুত আলোর আঘাতে
ন’ড়ে চ’ড়ে লাফিয়ে উঠবে হয়তো।
কোনো ভেসে আসা ঘ্রাণে
লাফাবে বা চ্যাঁচামেচি শুরু ক’রে দেবে।
আমি শুয়ে শুয়ে
নিস্তব্ধ রাতের রাস্তায় শেষ পথিকের
গলা শুনি, আর শিশুদের বলি,
ঘুমো, তোরা ঘুমো।
সমস্ত আলোর মধ্যে যেমন
অবিবাদী অনাদি অন্ধকার প্রচ্ছন্ন থাকে,
তেমনই সমস্ত অশান্তির ভিতরে
জাগ্রত থাকে এক অবিচল মঙ্গল
নত নয়নে, অনিমেষে।
শেষ যাত্রার আগে
শেষ যাত্রার আগে শেষ আশ্রয়
মিলেছে শেষ রাত্রের জন্য।
আমি আগে ভাবতাম
স্মৃতি বড় ভারী,
পাথর বা লোহার মত।
এখন দেখি
কোনো ওজনই নেই তার!
কি ক’রে থাকবে?
আমার নিজেরই কোনো ওজন নেই!
শেষ রাত কাটছে ভারহীনতায়।
জানি ভোর হবে,
মাঝি আসবে নৌকো নিয়ে।
আমার কিসের চিন্তা?
বেরিয়ে পড়বো শেষ যাত্রায় -
যার অমোঘ পরিণাম
সর্বনাশের শেষ পাওয়াতে।
ভাড়াবাড়ি
ভাড়ার বাড়ি, তাক আলমারি, ভাঁড়ার ঘরে তেলের শিশি,
খাট আসবাব, মুদির হিসাব, কাজের কথা অহর্নিশি।
আসছে সকাল, যাচ্ছে বিকাল, অকালবোধন বিসর্জনে।
“মোর ডানা নাই” সেই কথাটাই রুদ্ধ ঘরে ঘুরছে মনে।
মিথ্যে কথা, নিজেও জানি! তবুও কেন সেই কথাটাই
খাঁচার ভিতর পাখির মত ঝাপটে ডানা মরছে সদাই?
দীর্ঘ ’আমি’র উদার পথে হ্রস্ব ’আমি’র যাওয়া আসা।
মহাকালের হৃদয়কে ছোঁয় ভাড়া-বাড়ির ভালোবাসা।