রবীন্দ্রনাথের গানে ও কবিতায় কাদম্বরীর উপস্থিতি অনেক আগে থেকেই একশ্রেণির সমালোচকের অনুসন্ধিৎসার খোরাক জুগিয়েছে। শুরু হয়েছিল জগদীশ ভট্টাচার্যের হাত ধরে। তাঁর গ্রন্থ কবিমানসীতে তিনি ২৭২টি গান ও কবিতায় কাদম্বরীর উপস্থিতি লক্ষ করেছেন। কার্লাইল, তেন, বিয়াত্রিচে-দান্তে, লরা-পেত্রার্ক, ত্রুবাদুর, প্লেটো, বৈষ্ণব পদাবলী দিয়ে শুরু করে, তত্ত্ব বিশ্লেষণ করে, রবীন্দ্রনাথ-কাদম্বরী সম্পর্ক খুঁজেছেন গান ও কবিতায়। শুধু জগদীশ ভট্টাচার্য নয়, সুধীন্দ্রনাথ দত্তের মতো মানুষও প্রভাবিত হয়েছিলেন এই ধারণায় যে কাদম্বরীর সঙ্গে রবীন্দ্রনাথের অবৈধ সম্পর্ক ছিল যে-কারণে ঠাকুর পরিবার তড়িঘড়ি রবীন্দ্রনাথের বিয়ে দিয়ে দেয় এবং তাঁর বউঠান আত্মহত্যা করেন। নিত্যপ্রিয় বিস্ময় প্রকাশ করেছেন কোন তথ্যসূত্রে এমন ধারণা করা হয়েছিল। নীরদ চৌধুরী ধরে নিয়েছিলেন যে রবীন্দ্রনাথ ‘নষ্টনীড়’ লিখে নিজেকে প্রকাশ করে ফেলেছেন। ক্লিনটন বি. সিলি একইভাবে সত্যজিৎ রায় পরিচালিত চারুলতা ছবিকে আত্মজীবনীমূলক ভেবেছেন। নিত্যপ্রিয় দৃঢ় প্রত্যয়ে জানিয়েছেন—“‘কোথায়’, ‘প্রথম শোক’, বা ‘সতেরো বছর’ নিয়ে অনেক আলোচনা হয়েছে রবীন্দ্রনাথের জীবনীচর্চায়। এতে কাদম্বরীর উপস্থিতি নিয়ে কোনো দ্বিমত নেই। কিন্তু উপস্থিতি থাকলেও সেটা প্রণয়দ্যোতক হবে এমন বাধ্যতা নেই। ‘প্রথম শোক’–এর আলোচনায় ক্লিনটন সেটা পেয়েছেন এবং প্রমাণ করে ছেড়েছেন।” ‘নষ্টনীড়’ প্রসঙ্গে নিত্যপ্রিয় বলেছেন—“যে সময় একদা সুহৃৎ কিন্তু ১৯০১ সালে রবীন্দ্রনাথ সম্পর্কে খড়্গহস্ত, সেই সুরেশচন্দ্র সমাজপতি এবং ব্রাহ্মবিরোধী, ঠাকুর পরিবারের সমালোচক আরো সাময়িকপত্র বর্তমান থাকতে ১৯০১ সালে রবীন্দ্রনাথ নিজেই কুৎসার ইন্ধন জোগাবেন নষ্টনীড় লিখে, এমন মাত্রাছাড়া কল্পনা অবাস্তব।”
নোবেল কমিটির কাছে রবীন্দ্রনাথের নাম কে প্রস্তাব করেছিলেন এ সম্পর্কে টমাস স্টার্জ মুরের নাম উঠে এসেছে। রবীন্দ্রবীক্ষার ২২ শ্রাবণ, ১৪০৮ সংখ্যায় জানানো হয়েছে ২৮ জনের মধ্যে রবীন্দ্রনাথের নাম ছিল ১৭ নম্বরে। আর মুর লিখেছেন—‘As a fellow of the Royal Society of Literature of the United Kingdom I have the honour to propose the name of Rabindranath Tagore as a person qualified, in my opinion, to be awarded the Nobel Prize in Literature.’ এই বয়ানটি প্রশান্তকুমার পালও ছেপেছেন। নিত্যপ্রিয় আমাদের জানান যে মুর রয়াল সোসাইটি ফর লিটারেচারের পক্ষ থেকে চিঠি পাঠাননি, পাঠিয়েছিলেন একজন সদস্য হিসেবে, ব্যক্তিগতভাবে, কারণ সোসাইটির পক্ষ থেকে সাতানব্বই জন সদস্য টমাস হার্ডির নাম প্রস্তাব করে পাঠান। অথচ মুরের সঙ্গে রবীন্দ্রনাথের সম্পর্ক গড়ে উঠেছে সেপ্টেম্বর ১৯১২ থেকে জানুয়ারি ১৯১৩-র মধ্যে। আরো উল্লেখ্য যে যাঁর নাম তিনি পাঠাচ্ছেন নোবেল পুরস্কারের জন্য তাঁর সম্পর্কে কিছুই লিখছেন না তিনি—কোন ভাষার লেখক, ইংরেজি গীতাঞ্জলির নাম, কোনো তথ্যই জানানোর প্রয়োজন মনে করলেন না। সুতরাং মুর সম্পর্কে নিত্যপ্রিয় নিশ্চিত হতে পারছেন না। তিনি লিখেছেন—“রবীন্দ্রনাথ কীভাবে নোবেল পুরস্কার পেলেন, কে তাঁর নাম প্রস্তাব করলেন, সে বিষয়ে রবীন্দ্রনাথের ঘনিষ্ঠ ইংল্যান্ডের ভাবুকসমাজের কেউ জানতেন না, একমাত্র স্টার্জ মুর ছাড়া (যদি তিনি সত্যই রবীন্দ্রনাথের নাম প্রস্তাব করে থাকেন)। তারই ফলে, একে অন্যকে সন্দেহ করা শুরু করতে পারেন। আর্নেস্ট রিজ রবীন্দ্রনাথকে লেখেন—‘A rather sharp wedge has been driven into our close circle since you left us.’ রবীন্দ্রনাথ ইংল্যান্ড থেকে ভারতবর্ষে ফেরার পরই তাঁর ভাবুক বন্ধুদের মধ্যে চিড় ধরে... প্রত্যেকে প্রত্যেককে সন্দেহ করেছেন, গোপনে রবীন্দ্রনাথের নাম কে পাঠালেন?” প্রস্তাব নিশ্চয় বঙ্গদেশ থেকে যায়নি, কারণ সুইডিশ আকাদেমি জানিয়ে দিয়েছিল রবীন্দ্রনাথের ইংরেজি রচনার জন্য এই পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে।
‘অহঙ্কারের প্রচ্ছদ স্বাদ’ প্রবন্ধটির বিষয় রবীন্দ্রনাথের নিজের কবিতার স্বকীয় ইংরেজি অনুবাদ। অমিয় চক্রবর্তী, নির্মলচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ও পুলিনবিহারী সেনের সহায়তায় কৃষ্ণ কৃপালনী কবির পোয়েমস সংকলনটি প্রকাশ করেছিলেন। এই সংকলনের ১২টি অনুবাদ অমিয় চক্রবর্তীর করা, বাকি ১২০টি কবিতা কবির নিজের অনুবাদ। নিত্যপ্রিয় লক্ষ করছেন—“রবীন্দ্রনাথের নিজের অনুবাদের সংকলন করাই নিশ্চয় সংকল্প ছিল পোয়েমস-এর সম্পাদকের। সেগুলোর বেশ কয়েকটি তাঁরা কেন উপেক্ষা করলেন বোঝা যায় না। উপেক্ষিত অনুবাদগুলো রবীন্দ্রনাথের করা কি না এমন সন্দেহ? অমনোযোগে সেগুলো বাদ পড়ে গেছে? বিস্ময়কর, কারণ তার বেশ কিছু বিশ্বভারতী কোয়ার্টারলি আর মডার্ন রিভিউতে বেরিয়েছিল। পরবর্তীকালে, ১৯৯৪ সালে সাহিত্য অকাদেমি শিশিরকুমার দাশের সম্পাদনায় The English Writings of Rabindranath Tagore প্রকাশ করে, তাতেও রবীন্দ্রকৃত অনেক অনুবাদ বাদ পড়ে গেছে। বাদ পড়া অনূদিত কবিতার সংখ্যা প্রায় আড়াইশো।” প্রশ্ন জাগে, নিজে বারবার ইংরেজি অনুবাদে নিজের অস্বাচ্ছন্দ্যের কথা বললেও কেন এত অনুবাদ করেছেন? করেছেন কারণ পত্রপত্রিকার চাপ। মূল কবিতা লেখার একমাসের মধ্যেই বেরিয়ে গেল ইংরেজি অনুবাদ, এবং সেটাও মৃত্যুর আট মাস আগে—রামানন্দ চট্টোপাধ্যায়ের তাড়নায়। নিজের কবিতার অনুবাদ বলেই রবীন্দ্রনাথ যথেষ্ট স্বাধীনতা নিতেন, গ্রহণ-বর্জন করতেন। Gitanjali : Song Offerings তার উদাহরণ। তিনি নিজেই এ সম্পর্কে বলেছেন—‘বাংলা ও ইংরেজি উভয়েরই মালিক যখন আমি তখন কোনো পক্ষে নালিশ করিবার পথ নাই’।
‘বঙ্গভঙ্গে রবীন্দ্রনাথ’ প্রবন্ধে নিত্যপ্রিয় ঘোষ একটি সঙ্গত প্রশ্ন তুলেছেন—এই আন্দোলনে যোগ দিয়েও কেন সরে এসেছিলেন রবীন্দ্রনাথ? কিংবা, কবে সরে এসেছিলেন? এই প্রশ্নের ব্যাখ্যা রবীন্দ্রজীবনীকারেরা স্পষ্ট করে জানাননি, রবীন্দ্ররচনাতেও তার উত্তর নেই। অনেক কারণ হতে পারে। প্রত্যক্ষ রাজনীতির উপযুক্ত মানুষ তিনি ছিলেন না। অরবিন্দ ঘোষ অভিযোগ করেছিলেন যে রবীন্দ্রনাথ বয়কট আন্দোলনের ভুল ব্যাখ্যা করেছেন। তিনিও বলেছেন যে সরকার দমননীতি গ্রহণ করলে আমাদের তা রুখে দাঁড়াতে হবে। আন্দোলনের এই রুদ্র পন্থা রবীন্দ্রনাথের মনঃপূত ছিল না, এমত লিখেছেন কবিপুত্র রথীন্দ্রনাথ। কিন্তু কোনো ব্যাখ্যা তিনি দেননি। টাউন হলে ৭ অগস্ট ১৯০৫ এর সভায় বয়কট আন্দোলনের প্রস্তাব গৃহীত হয়েছিল, এবং তারপরও রবীন্দ্রনাথ একের পর এক দেশাত্মবোধক গান রচনা করে গেছেন। সুতরাং বয়কটকে তিনি রুদ্র পন্থা মনে করেননি। অনেক তথ্যপ্রমাণ দিয়ে নিত্যপ্রিয় বলেছেন বয়কটে রবীন্দ্রনাথের সমর্থন ছিল। অর্থাৎ, চরম পন্থার আগেই রবীন্দ্রনাথ সরে এসেছিলেন আন্দোলন থেকে। প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায় বলেছেন রবীন্দ্রনাথ মাত্র তিন মাস স্বদেশি আন্দোলনের সঙ্গে ছিলেন, আর প্রশান্তকুমার পালের ধারণা, আন্দোলনে থাকলেও আন্দোলনের ধরনে তাঁর সায় ছিল না। নিত্যপ্রিয় জানালেন, লর্ড কার্জন, যিনি ১৯০৫এর সেপ্টেম্বরে ভারত ত্যাগ করেন, তিনি কিন্তু ১৯১২ সালেও রাগ ভোলেননি। আর্থার ফক্স স্ট্রাঙ্গোয়েজ, ইন্ডিয়া সোসাইটির সচিব, ইংল্যান্ডে রবীন্দ্রনাথ গেলে, চেষ্টা করেছিলেন রবীন্দ্রনাথকে সাম্মানিক ডিগ্রি দিতে। লর্ড কার্জন তখন অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর, তিনি রাজি হননি যে লোকটা কলকাতায় তাঁকে রাজনৈতিক যন্ত্রণায় ফেলেছিল, তাঁকে ডিলিট দিতে। আমরা জানি যে অক্সফোর্ড রবীন্দ্রনাথকে ডিগ্রি দিয়েছিল, তবে ১৯১২তে নয়, ১৯৪০ সালে।
রবীন্দ্রনাথ ও জগদীশচন্দ্র বসুর বন্ধুত্বের সম্পর্ক ও পরবর্তী সময়ের টানাপোড়েন বিষয় হয়েছে যে প্রবন্ধটিতে, তার নাম ‘নব্য ভারতের প্রথম ঋষি আর যশোমণ্ডিত কবি’। ১৮৯৬ সালের ডিসেম্বরে লন্ডন রয়্যাল ইন্সটিটিউশনে জগদীশচন্দ্র বেতার তরঙ্গে বার্তা আদানপ্রদানের প্রয়োগ হাতেকলমে দেখান, কিন্তু তিনি পেটেন্ট রাখেননি এবং এই কারণে এক বছর পর ইটালির বিজ্ঞানী মার্কনি ওই একই ব্যবহারের আবিষ্কর্তা হয়ে যান। পেটেন্ট থাকলে পরবর্তী গবেষণার জন্য জগদীশচন্দ্রকে আর্থিক কষ্টে পড়তে হত না। আর এই সূত্রেই রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতা গড়ে ওঠে। ১৯০০ সালে প্যারিসে জৈব ও অজৈব এবং উদ্ভিদ ও প্রাণীদেহের জীবকোষের তুলনামূলক গবেষণার কাজ যাতে থেমে না যায় তার জন্য রবীন্দ্রনাথ নিজে এবং ত্রিপুরার রাজপরিবারের সাহায্যে অর্থব্যবস্থা করেন। দুজনের মধ্যে অনেক চিঠিপত্রের আদানপ্রদান ঘটে। জগদীশচন্দ্রের বিজ্ঞানসাধনায় রবীন্দ্রনাথ তার পরেও উৎসাহী থেকেছেন। তবে রবীন্দ্রনাথ যেমন অনুরক্ত ছিলেন জগদীশচন্দ্রের বিজ্ঞানচর্চায়, জগদীশচন্দ্রও তেমনি ছিলেন রবীন্দ্রনাথের সাহিত্যচর্চায়। কবির সঙ্গে জগদীশচন্দ্র শিলাইদহেও গেছেন। এই সম্পর্কের বিবরণ দিয়ে নিত্যপ্রিয় আমাদের জানাচ্ছেন যে ১৯১৪ সালের পর জগদীশচন্দ্রের আর শান্তিনিকেতন যাওয়ার কোনো উল্লেখ পাওয়া যায় না। এর কারণ দুজনের ব্যস্ততা, নাকি জগদীশচন্দ্রের অ্যান্ড্রুজের প্রতি বিরাগ, যাকে জগদীশচন্দ্র ব্রিটিশ সরকারের গুপ্তচর বলে মনে করতেন? তবে রবীন্দ্রনাথের অন্তত দুটি চিঠির উল্লেখ করেছেন নিত্যপ্রিয়, যা থেকে অনুমান করা যায় যে দুজনের মধ্যে তিক্ততার সৃষ্টি হয়েছিল। নিত্যপ্রিয়র বিশ্বাস এই বিবাদের কারণ জগদীশচন্দ্রের ভাগনে অরবিন্দমোহন বসু, যিনি ১৯০৭ সালে শান্তিনিকেতনে পড়াশুনা করে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের এন্ট্রান্স পাস করেন দ্বিতীয় বিভাগে। পরে উন্নতির সোপান পেরোলেও বিদ্যালয় জীবনে তাকে বশ করতে শিক্ষকদের বেশ বেগ পোহাতে হত। অনেক পরে, ১৯১১ সালে রবীন্দ্রনাথ অবলা বসুর চিঠির উত্তরে লিখছেন—“অরবিন্দ সম্পর্কে আপনি আমাকে কিছু বলবেন একথা আমি অনেকদিন থেকে প্রত্যাশা করে আছি। কারণ অরবিন্দকে যখন আমার হাতে মানুষ হবার জন্য আপনি দিয়েছিলেন তখন তার সঙ্গে আমার চিরন্তন মঙ্গলের সম্বন্ধ স্থাপিত হয়েছে...সুদীর্ঘকাল পর্যন্ত অরবিন্দের মন এখানে বসেনি। ওর সম্বন্ধে আমি প্রায় হতাশ হয়ে পড়েছিলুম। ক্রমে এই বিদ্যালয় যখন ওর অন্তঃকরণকে স্পর্শ করলে সে তো কোনো কৃত্রিম উপকরণ বা বাহ্য প্রলোভন দিয়ে নয়...। সম্ভবত অরবিন্দ জীবনের যে আদর্শ গ্রহণ করেছে সেটাকে আপনারা ভালো মনে করেন না। ও যেরকম হলে আপনারা খুশি হতেন ও তেমনটি হয়নি। এবং সেইজন্য এই বিদ্যালয়ের শিক্ষা, প্রভাব ও বিধিব্যবস্থাকে মনে মনে দায়ী করছেন...।” অবলাকে লিখলেও চিঠিতে রবীন্দ্রনাথ মাঝেমধ্যে ‘আপনারা’ লিখছেন। চিঠিপত্র-৬-এ অবলাকে লেখা অনেক চিঠি আছে যেখানে অতি সুন্দর সম্পর্কের প্রকাশ ঘটেছে, আর সেই রবীন্দ্রনাথ এখন লিখছেন—“এবারে আপনাকে বোলপুরে আসবার কথা বলিনি—তার কারণ, কিছুদিন থেকে আমি অনুভব করছিলুম, এই বিদ্যালয়ের প্রতি আপনার হৃদয় অনুকূল নেই। যে জায়গায় আমি সকলের চেয়ে সার্থকতা লাভ করেছি সে জায়গায় আপনাদের যদি বিরোধ থাকে তবে সেখানে খেলাচ্ছলেও আমাদের মিলন হতে পারে না। আর সব জায়গাই রইল—কলকাতা আছে, আমাদের পদ্মার চর আছে, আর যেখানেই বলেন সেখানেই কোনো বাধা নেই।”
মনের কোনো দুর্বল মুহূর্তে রবীন্দ্রনাথ এইভাবে রেগে গেলেও তাঁদের সম্পর্কের শেষ সেখানেই ঘটছে না। ১৯২২ সালে রবীন্দ্রনাথ জগদীশচন্দ্রকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-প্রেসিডেন্ট হতে অনুরোধ জানান। শেষ পর্যন্ত, বিশ্বভারতীর সংবিধানে ভাইস-প্রেসিডেন্টের পদ না থাকায় ‘প্রধান’ হিসেবে নাম রাখা হয় জগদীশচন্দ্রের। অন্যরা ছিলেন পিঠাপুরমের রাজা, ব্রজেন্দ্রনাথ শীল আর অ্যান্ড্রুজ। একই সময়ে প্রায়, শ্রীনিকেতন-এর প্রধান পৃষ্ঠপোষক ঘোষিত হয়েছিলেন জগদীশচন্দ্র আরো সাতজনের সঙ্গে। এই তথ্যের সমাহারের জন্য নিত্যপ্রিয় ঘোষের কাছে আমাদের ঋণ বেড়ে যায়।