|| ১ ||
অ্যামান্ডা গোরম্যান-এর জন্ম ১৯৯৮ সালে। তিনি হারভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞানের স্নাতক হয়েছেন সদ্য। ২০২১ সালের ২০ জানুয়ারি আমেরিকার রাষ্ট্রপতি জোসেফ রবিনেট বাইডেন-এর (১৯৪২- ) শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে তিনি “যে পাহাড়গুলো পেরোই আমরা” নামের কবিতাটি আবৃত্তি করেন ছয় মিনিট ধরে।
১৭৮৯ সাল থেকে ২০২১ সাল: আমেরিকার রাষ্ট্রপতির শপথ গ্রহণের অনুষ্ঠান সংঘটিত হয়েছে মোট ৫৯ বার। দেশজোড়া গৃহযুদ্ধ, প্রথম ও দ্বিতীয় মহাযুদ্ধ, ভিয়েতনামের যুদ্ধ, ৯/১১-র আতঙ্কবাদীদের আক্রমণ: কোনো কারণেই সেই অনুষ্ঠানের ব্যাঘাত ঘটেনি। কিন্তু সেই অনুষ্ঠানে কবিতাপাঠের ঐতিহ্যটি তুলনামূলকভাবে নতুন এবং ঘটেছে মাত্র ছ’বার। ১৯৬০ সালে আমেরিকার রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন জন ফিটজেরাল্ড কেনেডি (১৯১৭-১৯৬৩)। তিনি আমেরিকার প্রবীণ ও জনপ্রিয় কবি রবার্ট ফ্রস্টকে (১৮৭৪-১৯৬৩) অনুরোধ করেন একটি নতুন কবিতা লিখে পাঠ করার জন্যে তাঁর শপথ গ্রহণের পুণ্য অনুষ্ঠানে। ফ্রস্ট “উৎসর্গ” নামের একটি নতুন কবিতা লেখেন এই উপলক্ষ্যে, কিন্তু চোখে সূর্যের আলো লেগে চোখ ধাঁধিয়ে যাওয়াতে সেটি পড়তে অসুবিধে হয় প্রায় সাতাশি বছর বয়েসী কবির। তিনি তখন তাঁর স্মৃতির থেকে “অকপট উপহার” নামের আরেকটি কবিতা আবৃত্তি করেন। সেই থেকে শুরু।
তার পর কেটে যায় ৩২ বছর। ১৯৯২ এবং ১৯৯৬ সালে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন বিল ক্লিনটন (১৯৪৬- ): তাঁর দুটি শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানেই কবিতা পাঠের আসর বসেছিল। প্রথমবার কবিতা পড়েন কৃষ্ণকায় মানুষের “মুখর ঐতিহ্য” অথবা “ওরাল ট্র্যাডিশন” এর কবি মায়া অ্যানজেলু (১৯২৮-২০১৪)। তাঁর “প্রভাতের প্রাণস্পন্দন” (‘On the Pulse of Morning’) নামক কবিতাটি হয়েছিল অসম্ভব জনপ্রিয় এবং ফিরত মানুষের মুখে মুখে। পারফর্মিং আর্টস হিসেবে এই আবৃত্তি সেবছর গ্র্যামি পুরস্কার পায়। কবিতাটি সমাপ্ত হয় এইভাবে:
“ভবিষ্যতের দিকে ঝুঁকে রয়েছে দিগন্ত,
সুযোগ দিচ্ছে তোমায় নতুন পদক্ষেপ
নেবার জন্যে।
এখন আজ এই সুন্দর দিনের প্রাণস্পন্দনে
তুমি যেন বুকে সাহস পাও
মাথা তুলে দূরে দিগন্তে
আর আমার দিকে তাকানোর -- আমরা,
পাথর, নদী, বৃক্ষ -- তোমার পিতৃভূমি।
ধূলিমুঠি সোনা রাজরাজড়ার চেয়ে
কোনো অংশে কম নয় পথের ভিখারি।
না এখন তোমার কাছে,
না প্রাগৈতিহাসিক দাঁতাল হস্তীর কাছে।
আজকে এই নতুন দিনের প্রাণস্পন্দনে
দুচোখ তুলে তাকাও শূন্যে এবং বাইরে
তাকাও তোমার ভগিনীর চোখে
এবং তোমার ভ্রাতার মুখে
তাকাও তোমার পিতৃভূমির দিকে
এবং সহজভাবে,
খুব সহজভাবে
আশায় বুক বেঁধে
বলো, ‘সুপ্রভাত’!”
বিল ক্লিনটনের দ্বিতীয় শপথ গ্রহণের দিন কবিতা আবৃত্তি করেছিলেন কবি ও গীতিকার মিলার উইলিয়ামস (১৯৩০-২০১৫)। তাঁর কবিতার নাম “ইতিহাস এবং আশা” (‘Of History and Hope’)।
ক্লিনটনের পর জর্জ ডব্লিউ বুশ (২০০০, ২০০৪), তিনি কাঠখোট্টা মানুষ: কবিতার সঙ্গে সম্পর্কহীন এবং তারপরে বরাক ওবামা (১৯৬১- ) -- তিনি রাষ্ট্রপতির নির্বাচন জিতলেন ২০০৮ এবং ২০১২ সালে। প্রথমবার শপথ গ্রহণের অনুষ্ঠানে কবিতা আবৃত্তির দায়িত্ব পেলেন কবি, নাট্যকার ও অধ্যাপক এলিজাবেথ আলেকজান্ডার (১৯৬২- )। তাঁর কবিতাটির নাম, “এই দিনের সংগীতের প্রশংসায়” (‘Praise Song for the Day’)।
ওবামার দ্বিতীয় শপথ গ্রহণের দিনের নির্বাচিত কবি রেকর্ড রিচার্ড ব্লাঙ্কো (১৯৬২- ), যিনি প্রথম সমকামী কবি হিসেবে এই সম্মান পেলেন। তাঁর কবিতাটির নাম “আজকে একক” (‘One Today’), যেটা পরবাসে প্রকাশিত হয়েছিল উদয় নারায়ণ সিংহের অনুবাদে।
প্রথম এই পাঁচজনের পরে ছয় নম্বরে এলেন অ্যামান্ডা গোরম্যান। এবার আমরা তাঁর কবিতাটি পড়বো।
|| ২ ||
“যে পাহাড়গুলো পেরোই আমরা” -- অ্যামান্ডা গোরম্যান
যখন সেই দিন আসে, নিজেদের প্রশ্ন করি আমরা
এই অনন্ত ছায়ার ভেতর কীভাবে আলোর সন্ধান পাবো?
যে ব্যর্থতা বয়ে বেড়াই অন্তরে,
যে সমুদ্রে আমাদের নিয়মিত সাঁতার
আমরা বেরিয়ে এসেছি দানবের উদর বিদীর্ণ করে
আমরা জেনেছি নীরবতা মানেই শান্তি নয়
এবং ন্যায় বলতে আমাদের যে
প্রথা আর ধারণাগুলো রয়েছে
সেটা আর ন্যায়বিচার এক নয়।
আমরা জেনে নেওয়ার আগেই
এই নতুন ভোর আমাদের দখলে
কীভাবে যেন আমরা হাতের কাজগুলো সেরে ফেলি
কীভাবে যেন আমরা সামলে নিই আর চোখের সামনে দেখি
একটা দেশ, এখনো ভেঙে যায় নি
কেবল দাঁড়িয়ে রয়েছে অসমাপ্ত।
এক দেশের আর একটা প্রহরের উত্তরাধিকারী আমরা
যেখানে রোগা কালো একটা মেয়ে
ক্রীতদাসেরা যার পিতৃপুরুষ
যাকে লালনপালন করেছে তার একা-মা
সেও স্বপ্ন দেখতে পারে দেশের রাষ্ট্রপতি হবার
এবং তাকে কবিতা পড়তে ডাকেন এক রাষ্ট্রপতি।
না, আমরা কখনো ঝকঝকে সুন্দর হয়ে উঠিনি
না, আমরা কলঙ্কহীনও নয়
কিন্তু তার মানে এই নয় যে আমরা এমন এক
দেশ গড়ে তোলার কাজে ব্যস্ত নই, যা পূর্ণাঙ্গ।
এমন একটা দেশ গড়ে তুলছি আমরা যা সঙ্কল্পময়
এমন একটা দেশ যার উদ্দেশ্য: সব সংস্কৃতি, সব গাত্রবর্ণ,
সব চরিত্র আর সব অবস্থার মানুষকে সমান সুযোগ দেওয়া
আমাদের মধ্যে যে ব্যবধান, সেদিকে আমাদের দৃষ্টি নয়
আমরা তাকাই আমাদের সামনে যে ভবিষ্যৎ, তার দিকে
কমাতে চাই আমাদের ব্যবধান, কারণ আমরা জানি
সবচেয়ে জরুরি আমাদের ভবিষ্যৎ, তাকে সফল করে তুলতে হলে
কমাতে হবে আমাদের ব্যবধান।
আমরা নামিয়ে রাখি অস্ত্রশস্ত্র
আমরা দু বাহু বাড়াই একে অন্যের দিকে
চাই না কারুর ক্ষতি, সবার জন্যে সমঝোতা
আর কিছুই যদি নাও হয়, সারা পৃথিবী বলুক যে
অন্ততঃ এই কথাগুলো সত্যি:
সমূহ শোকের ছায়াতেও আমরা বেড়ে উঠি
আঘাত বুকে নিয়েও আমরা আশায় বুক বাঁধি
ক্লান্তিতে নুয়ে পরেও পড়েও
তুমুল চেষ্টা চালিয়ে যাই আমরা
ভবিতব্য আমাদের এক সুতোয় বাঁধা।
আমরা জয়ী তার কারণ এই নয় যে
ভবিষ্যতে আর কোনোদিন
পরাজয় হবে না আমাদের
তার কারণ আমরা কোনো শক্তিকেই আর
দেব না বিভেদের বীজ বপন করতে
পুরাণ আমাদের কল্পনা করতে শেখায় এমন এক জগতের
যেখানে প্রতিটি মানুষ তার আঙুরঝোপ অথবা ডুমুরগাছের
নিচে বসে বিশ্রাম নেবে এবং
তাদের ভয় দেখাবে না কেউ।
আমরা যদি নিজেদের
এই প্রহরের উপযুক্ত করে তুলতে পারি
তাহলে জয় আসবে না আমাদের তরবারির ফলায়
জয় আসবে আমাদের হাতে তৈরি সেতুগুলির মাধ্যমে
সেই আমাদের সব-পেয়েছির বনবীথি
যে পাহাড়গুলো পেরোই আমরা
যদি সাহসে ভর দিয়ে তা করতে পারি
আমেরিকা কেবল আমাদের উত্তরাধিকারসূত্রে পাওয়া গরিমা নয়
আমেরিকার অতীতে আমাদের পদক্ষেপ
আর তাকে নতুন করে গড়ে তোলার অঙ্গীকার।
আমরা দেখেছি এক শক্তিকে, যা আমাদের দেশটাকে
সবাই মিলে উপভোগ করার চেয়ে তাকে
টুকরো টুকরো করতেই বেশি আগ্রহী
গণতন্ত্রকে বিলম্বিত করতে গিয়ে দেশটাকে
ধ্বংস করতেও দ্বিধা নেই তাদের
আর তাদের প্রচেষ্টা সফল হতে চলেছিল প্রায়।
গণতন্ত্রকে বিলম্বিত করা সম্ভব হলেও
তাকে পুরোপুরি খতম করা সম্ভব না
এই যে অমোঘ সত্য,
এই যে দৃঢ় বিশ্বাস: এটাই আমাদের সম্বল
আমাদের দৃষ্টি প্রসারিত ভবিষ্যতের দিকে
কিন্তু ইতিহাসের তীক্ষ্ণ নজর আমাদের পানে।
এই যুগটা হল ন্যায়সম্মত পরিত্রাণের
এর সূচনায় ভয় পেয়েছিলাম আমরা
এমন ভয়ঙ্কর প্রহরের উত্তরাধিকারী হতে
তৈরি ছিলাম না আমরা
কিন্তু নিজেদের অভ্যন্তরে আমরা শক্তি খুঁজে পেলাম
ইতিহাসের এক নতুন অধ্যায়ের লেখক হতে
আর পুণ্য আশা এবং সুখের হাসি এনে দেওয়ার।
এক সময় প্রশ্ন তুলেছিলাম আমরা
কীভাবে এই প্রলয়কে জয় করব আমরা?
এখন আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস
কেন এই প্রলয়কে এতটা গুরুত্ব দিয়েছিলাম?
আমরা ফিরে যাবো না ফেলে আসা অতীতের দিকে
আমাদের কুচকাওয়াজ অনাগত ভবিষ্যতের লক্ষ্যে।
আমাদের দেশ ক্ষতবিক্ষত অথচ অটুট,
দয়ালু কিন্তু সাহসী,
দুর্ধর্ষ এবং স্বাধীন
পিছনে ফিরবো না আমরা
অন্যের হুমকিতে বন্ধ করবো না আরব্ধ কর্ম
কারণ আমরা ভালো করেই জানি তাহ’লে
আমাদের আলস্য আর জড়তাই হয়ে উঠবে
পরবর্তী প্রজন্মের পাথেয়
আমাদের ভ্রান্তিগুলো হয়ে দাঁড়াবে তাদের পিঠের বোঝা।
কিন্তু একটা বিষয়ে স্থির নিশ্চিত আমরা:
আমরা যদি করুণার স্রোতে আমাদের শক্তিকে মেশাই
আর শক্তির সঙ্গে অধিকারকে,
তখন প্রেম হয়ে দাঁড়ায় আমাদের উত্তরাধিকার
আর পাল্টে যায় আমাদের শিশুদের জন্মগত অধিকার।
যে অবস্থায় আমরা এই দেশটাকে পেয়েছিলাম
আমরা তাকে রেখে যাবো তার চেয়ে উন্নত অবস্থায়
আমার ব্রোঞ্জ-পেটানো বুকের প্রতিটি নি:শ্বাস থেকে
আমরা এই আহত ধরিত্রীকে করে তুলবো অপরূপ
আমরা জেগে উঠবো পশ্চিমের পর্বতের স্বর্ণ-প্রত্যঙ্গ থেকে
আমরা জেগে উঠবো উত্তর-পূর্বের পবন-বিধৌত ভূমি থেকে
যেখানে আমাদের পূর্বপুরুষেরা বিপ্লবের স্বপ্নকে
বাস্তবায়িত করেছিলেন
আমরা জেগে উঠবো হ্রদ দিয়ে ঘেরা মধ্যপশ্চিমের
প্রদেশগুলি থেকে
আমরা জেগে উঠবো সূর্যকিরণ দিয়ে সেঁকা দক্ষিণদেশ থেকে
আমরা ব্যস্ত থাকবো পুনর্নির্মাণে, পুনরুদ্ধারে আর সামঞ্জস্যবিধানে
এবং আমাদের রাষ্ট্রসীমার প্রতিটি চেনা আনাচকানাচ থেকে
এবং যাকে আমরা পিতৃভূমি বলি, তার প্রতিটি কোণ থেকে,
আমাদের জনতা: বিচিত্র এবং সুন্দর,
উঠে আসবে ক্ষতবিক্ষত কিন্তু অপরূপ।
যখন নিশীথ পেরিয়ে ভোর আগত, আমরা ছায়ার আড়াল থেকে
বেরিয়ে আসবো অগ্নিবর্ণ এবং ভয়হীন
ফুলের মতন ফুটে ওঠে নতুন ভোর
সব বন্ধন থেকে তাকে মুক্ত করি আমরা
কারণ আমাদের রয়েছে অন্তহীন আলোর উৎস,
যদি আমরা সাহসে ভর দিয়ে তাকে প্রত্যক্ষ করি এবং
যদি আমরা সাহসে ভর দিয়ে তার সামিল হই।
|| ৩ ||
আমরা, আমেরিকার অধিবাসীরা ২০২০ সাল কাটিয়েছি এক দু:স্বপ্নের ভেতর। কোভিডের অতিমারীতে মৃত মানুষের সংখ্যা ৪ লাখ, আক্রান্ত ২ কোটিরও বেশি মানুষ। অকর্মণ্য প্রশাসনের অব্যবস্থায় এবং দুর্নীতির কারণে বিজ্ঞানী ও চিকিৎসকেরা সঠিকভাবে তাঁদের পরিকল্পনা, পরীক্ষা ও চিকিৎসা চালাতে সক্ষম হন নি অতিমারীর প্রতিরোধে। তাই পৃথিবীর জনসংখ্যার মাত্র চার শতাংশ মানুষ আমেরিকায় বাস করা সত্ত্বেও কোভিডে মৃত্যুর শতকরা কুড়ি ভাগের বেশি ঘটেছে এই দেশে। আর পুলিশের আক্রমণে কালো মানুষের মৃত্যু হয়েছে দলে দলে: কালো জর্জ ফ্লয়েডের কণ্ঠনালিতে চেপে বসা শাদা, জাতিবিদ্বেষী পুলিশ ডেরেক শোভিনের কালান্তক হাঁটু, সেই ছবি আমরা টিভিতে দেখেছি দিনের পর দিন। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে অশ্বেতকায় মানুষের ওপরে হামলা চালিয়েছে বন্দুকধারী সাদা চামড়ার জঙ্গি আতঙ্কবাদীরা। নানান প্রদেশের বিধানসভায় সশস্ত্র হুমকি দিয়েছে তারা। আবার এই সব হামলার বিরুদ্ধে জেগে উঠেছে সাধারণ মানুষ। ফ্যাসিবাদকে পরাজিত করার ঐতিহাসিক উপায় একটাই: তার বিরুদ্ধে শুভবুদ্ধিসম্পন্ন জনগণের ঐক্যবদ্ধ ফ্রন্ট গড়ে তোলা। সেই যুক্তফ্রন্টের নেতৃত্ব দিয়েছেন জোসেফ বাইডেন: তিনি উপরাষ্ট্রপতি ছিলেন আট বছর, ২০০৯-২০১৭। এখন ৭৮ বছর বয়েসে তিনি আবার এই ভাঙাচোরা দেশটির হাল ধরতে সম্মত ও প্রস্তুত।
অনেক গুরুতর চ্যালেঞ্জ এখন তাঁর সামনে: লেলিহান অতিমারী, মোহ্যমান অর্থনীতি, প্রবল বেকারত্ব, বাসস্থান থেকে উৎখাত হওয়া গৃহহীন মানুষের দল, সশস্ত্র শ্বেতকায় আতঙ্কবাদীদের হামলা, কালো মানুষের ভোট দেওয়ার পথে বাধার প্রাচীর, প্ৰণালীবদ্ধ জাতিবিদ্বেষ: তালিকা দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর। কিন্তু তার মধ্যেও তিনি কবিতাকে ভোলে নি। তিনি আহ্বান জানিয়েছেন অল্পবয়েসী, প্রতিভাবান এক কবিকে। ঘোর দু:সময়ে একমাত্র কবিতাই পারে মানুষকে অন্যায় ও অবিচারের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ করতে।
সংযোজন: ওপরের অংশটি লিখেছিলাম ২০২১-এ। এর পরে কেটে গেছে সাড়ে তিন বছর। আমরা কোভিডের ফাঁড়া কাটিয়ে উঠেছি, আমেরিকার অর্থনীতি আবার ফিরে এসেছে তার ওয়াল স্ট্রিটের রমরমায়। কিন্তু এবার কেবল ট্রিকল ডাউন নয়: পিরামিডের মাথায় মুঠো মুঠো সোনা ছড়িয়ে দিলে তার ছিটেফোঁটা পড়তে পারে নিচে শ্রমিকের হাতে – সেই তত্ত্বকে বাতিল করে দিয়ে এখন খেটে খাওয়া মধ্যবিত্ত মানুষের দিকে নজর দেওয়া হচ্ছে। সামনে আবার নির্বাচন: এবারে বাইডেন আর লড়বেন না; যদি কমলা হ্যারিস যেতেন, কোন কবিকে তিনি নিমন্ত্রণ করবেন তার শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানের কবিতা পাঠে? গণতন্ত্রকে রক্ষার সংগ্রামে সামিল হতে হবে কবিতাকে।