• Parabaas
    Parabaas : পরবাস : বাংলা ভাষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতি
  • পরবাস | সংখ্যা ৯৭ | জানুয়ারি ২০২৫ | ভ্রমণকাহিনি, প্রকৃতি, বাকিসব
    Share
  • বাঙাল দেখল জোনাকি : সুনন্দন চক্রবর্তী

    বাঙাল এখন প্রায় এক বিলুপ্ত প্রজাতি। বাঙাল পরিবারের তৃতীয় বা চতুর্থ প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা ‘দ্যাশভাগ’ জানে না, মন্বন্তর জানে না, সবচেয়ে বড়ো কথা উদ্বাস্তু কলোনি জানে না। আমাদের বিজয়গড়ের কল্পকথা এই বিলীয়মান জাতিকে সংরক্ষণের চেষ্টা মাত্র। উদ্বাস্তু কলোনিতে যখন টিমটিমে দু-চারটে বাতিস্তম্ভ ছিল আর প্রচুর ঝোপঝাড়, অন্ধকার আনাচ-কানাচ তখন সন্ধ্যাবেলা ফুটবল পেটানো শেষ করে আমরা যখন বাড়ি ফিরতাম পিছন ফিরে বিজয়গড় ময়দানের দিকে তাকালে জোনাকিদের আলোর সমারোহ দেখা যেত, বুদ্ধদেব বসু-র কবিতার মতো একলা জোনাকি নয়, কলোনিতে ভিড় করে থাকা বাঙালদের মতোই এক সঙ্ঘবদ্ধ উদ্দীপন।

    সত্তর দশকের শেষভাগে গলফ গ্রিন আবাসনের দৌলতে ‘ভিন্ন’ সংস্কৃতির সঙ্গে বাঙালত্বের মুখোমুখি সাক্ষাৎ এবং সংঘাত শুরু। আর সব যুদ্ধেই জয়-পরাজয় থাকে। ভূপেন নাগ শুঁটকি কেনা হয়ে যাওয়ার পর বাকি মাছের বাজার ঘুরে দেখতে-দেখতে এসে পড়লেন কাটা পোনা এলাকায়। গলফ গ্রিনবাসী সুবেশা রূপসী যিনি সন্তর্পণে ছোঁয়াছুঁয়ি বাঁচিয়ে কাটা পোনা নিচ্ছিলেন নাসিকা কিঞ্চিত কুঞ্চিত করলেন। নাগ মহাশয় তৎক্ষণাৎ শুঁটকির পুঁটুলি শূন্যে তুলে ধরে বললেন— হান্ড্রেড রুপিজ এ কিলো। তারপর অবজ্ঞার সঙ্গে কাটা পোনা-র দিকে অঙ্গুলিনির্দেশ করে— ফিফটি রুপিজ এ কিলো। এই অভূতপূর্ব প্রত্যুৎপন্নমতিত্বে আপ্লুত হয়ে বাজার কমিটি আরও আড়াইশো গ্রাম শুঁটকি ভূপেনবাবুকে পুরস্কার দেয়।

    কিন্তু এই ‘কোনো মিউচুয়াল নাই’ টাইপের অদম্য মনোভাব দিয়ে সবসময় আত্মসম্মান রক্ষা করা যায় না। গলফ গ্রিন-এ ওএনজিসি-তে কাজ করা কিছু রাশিয়ান কর্মী একসময় বসবাস করেছিলেন। তাঁদের একজনের স্ত্রী দুটি দুর্দমনীয় বাচ্চাকে একটি দু-মুখো কুকুরবাঁধা বেল্টে বেঁধে নিতুদার মুদি-কাম-দশকর্ম ভাণ্ডার-এ এসে দিস, দ্যাট ইত্যাদি বলে কেনাকাটা সেরে ফেলার, পর চাঁদমালা দেখে কৌতূহলী হয়ে জিজ্ঞেস করলেন হোয়াট ইজ দ্যাট? নিতুদা বললেন ওয়েট, ওয়েট। তারপর পিছনের দরজা দিয়ে বেরিয়ে হাওয়া হয়ে গেলেন। মহিলা মিনিট পনেরো অপেক্ষা করে অগত্যা ফিরে গেলেন। ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর বন্ধুরা বলল তুই এটা কী করলি? নিতুদা বলল, ‘ফাগল নাকি, ইংরাজিতে চাঁ-চাঁ- চাঁদমালা বুজাইমু ক্যামনে?’ উত্তেজিত হলে নিতুদার একটু কথা আটকে যেত। কিন্তু নিতুদা আমাদের শিখিয়েছিল যে বক্তিয়ার খিলজি না হয়ে খিড়কি দিয়ে পশ্চাদপসারণ একটা গৌরবজনক পদ্ধতি।

    সে অবশ্য অনেকদিন আগে রকথা। এখন নিতুদার সেই দোকান ঝকঝকে আধুনিক। সেখানে নিতুদার নাতি গুগল ট্রানস্লেটার দিয়ে হরেক কিসিমের খদ্দের অনায়াসে সামলায়, বিজয়গড় ময়দান রাত্তিরে আলোয় ঝকমক করে, জোনাকিরা উধাও। আগে আমরা পুজোর সময় ‘অফবিট’ ঘাটশিলা যাওয়ার প্ল্যান করতাম, এবারে সবাই ধরে বসল মালয়েশিয়া যাব, এই তো কাছেই।

    সকাল ঘেঁষে কুয়ালালামপুর এসে নামলাম। আধ কিলোমিটার টাক হেঁটে ইমিগ্রেশন করতে গিয়ে চক্ষুস্থির। একটা মাঝারি আকারের হল ঘরে কয়েক হাজার মানুষের ভিড়। পাক্কা আড়াই ঘণ্টা লাগল সেই পারাবার অতিক্রম করতে। কলকাতা থেকে এখানে উড়ে আসতে এর চেয়ে সামান্য বেশি সময় লেগেছে আমাদের। যাইহোক, এখন বাঙালরা হাই টেক। ফটাফট দুটো ‘গ্র্যাব’ ট্যাক্সি যোগাড় হয়ে গেল। আমরা প্রায় সওয়া ঘণ্টায় পৌঁছে গেলাম আমাদের এয়ার বিএনবি-র আস্তানায়। এলাকাটা অনেকটা আমাদের রাজারহাট-এর মতো। আমাদের ফ্ল্যাট আটত্রিশ তলায়। ব্যালকনি থেকে সরাসরি দেখা যায় কুয়ালালামপুরের বিখ্যাত টুইন টাওয়ার পেট্রনাস টাওয়ার। বিশেষত রাত্তিরে যখন বিভিন্ন বহুতল আর তাদের ঘিরে চলে যাওয়া বহুস্তর সর্পিল রাস্তাগুলোতে আলো জ্বলে ওঠে সে বড় মোহময়।

    কিন্তু এই শহর বড্ড আধুনিক, চোখ-ধাঁধানো, বিশালকায় এক পরীক্ষাপত্র। অল্পদিনে এ ভেদ করা যাবে না। আমরা তার চেষ্টাও করিনি। আগে থেকেই আমাদের পরের দিন সক্কালে টিকিট কাটা ছিল কোটাকিনাবালু-র, বোর্নিওর অংশ সাবা অঞ্চলের রাজধানী এক মনোরম সৈকতশহর। বিমান যখন নীচে নামছে চোখ জুড়িয়ে গেল। নীল জলের পাশে শান্ত চেহারার এক জনবসতি। ছোট্ট বিমানবন্দরের কাছেই এক নিরিবিলি পাড়ায় আমাদের এয়ার বিএনবি— একটা সুদৃশ্য দোতলা বাড়ি, পুরোটাই আমাদের। আগের বাড়িটায় সব থেকে ধাক্কা খেয়েছিলাম বই-এর তাক থেকে একটা বই টেনে পড়তে গিয়ে। রয়েছে শুধু শক্ত মলাটের খোল। ভিতরটা বিলকুল ফাঁপা, সেরেফ শূন্যগর্ভ মলাট রাখা আছে সারি- সারি যাতে বসার ঘরটা পরিশীলিত চেহারা পায়। অনেক দক্ষিণা দিয়ে এইসব ইনটিরিওর ডেকরেটরদের পাওয়া যায়। এখানে ঘরের মধ্যে দিয়ে দোতলায় উঠে যাওয়া সিঁড়ির নীচে সত্যিকারের বইয়ের সংগ্রহ। অনেকগুলো ঘর, প্রশস্ত বসার আর সংযুক্ত রান্নাঘর, তাতে সব বন্দোবস্ত রয়েছে, দেখেই মন ভালো হয়ে গেল। মনে হল অনেক কম মেকি জায়গায় এসে পড়েছি।

    ভোরবেলা আমরা বেরোলাম বান্দারায়া মসজিদ— যেটা ভাসমান মসজিদ বলে খ্যাত। নীল রঙের বিশাল গম্বুজওয়ালা চমৎকার গড়নের এই মসজিদ ঘিরে রয়েছে এক স্বচ্ছ জলাশয়। তাই কোনো কোনো দিক থেকে একে ভাসমান মনে হয়। আমাদের ইচ্ছে যখন দিনের আলো ভালো করে ফুটে ওঠেনি আর মসজিদের বিভিন্ন মিনারগুলোয় তখনও আলো জ্বলে রয়েছে সেই চেহারায় একে দেখতে পাওয়া। দেখতে পেলামও।

    কোটাকিনা বালু-র আসল খ্যাতি তার সৈকতগুলোর জন্যে। আমাদের বাড়তাআ(??) বলা ছিল নিকটতম সৈকত পাঁচ মিনিটের রাস্তা। সেকথা ঠিক— তবে হেঁটে নয়, ট্যাক্সিতে পাঁচ মিনিট। কোটাকিনাবালুতে যথেষ্ট ট্র্যাফিক থাকা সত্ত্বেও বাহনের গতিবেগ মোটামুটি মিনিটে এক কিলোমিটার। এবার আমাদের বেড়াবার আয়োজন আমরা নিজেই করেছি। প্রচণ্ড উত্তেজনার সঙ্গে একটা ল্যাপটপ গোটা চারেক স্মার্ট ফোন সমানে আন্তর্জাল চষে ফেলছে কী কী করা যায়, কেমনভাবে করা যায় তার সন্ধানে। সভাশেষে স্থির হল আমরা এক দ্বীপ থেকে আরেক দ্বীপে লাফিয়ে বেড়িয়ে আমোদ-আহ্লাদ করার চেষ্টা করব। তবে আজ আর এটা হবে না, দেরি হয়ে গেছে।

    আমাদের আরও দুই দোস্ত ঘাঁটি গেড়েছিল শহরের প্রাণকেন্দ্র ঘেঁষে। বিকেলে তারা যখন আড্ডা মারতে এল খবর পাওয়া গেল ওদিকে ফুর্তির ব্যবস্থা ভালোই। অতএব প্রথমে গ্রাব বাহনে যাওয়া হল তানজুম আরা সৈকতে। সত্যি অপরূপা এক বেলাভূমি। তার তীর ঘেঁষে মূলত খাবার, জামাকাপড় আর টুকিটাকি জিনিসের সব দোকান ঝিকমিক করছে। রয়েছে প্রচুর চেনা আর অচেনা ফলের দোকান। গোটা এলাকা ম-ম করছে ডুরিয়ান-এর গন্ধে। এই কাঁটা কাঁটা ফলটির খ্যাতি এবং দুর্নাম দুইই আমরা শুনে এসেছি। কোনো কোনো আবাসনে পরিষ্কার লেখা থাকে ডুরিয়ান নিয়ে প্রবেশ নিষেধ। গন্ধ আমাদেরও মনে হল একটু বেশি তীব্র। তাই সেখান থেকে আমরা সরে পড়লাম শহরের কেন্দ্রের দিকে, যেখানে আজ বসেছে নাইটবাজার, সাপ্তাহিক হুল্লোড়ের বন্দোবস্ত আর কি! সারা শহর সপ্তাহান্তে ভেঙে পড়েছে সেখানে। একটা বড়ো বাঁধানো চাতালের এক মাথায় একের পর এক গানের দল উঠে নেচে গেয়ে ফাটিয়ে দিচ্ছে, ফেরিওয়ালারা ঘুরে বেড়াচ্ছে, লোকজন ভিড় করে বসে দাঁড়িয়ে, খেতে-খেতে, গল্প করতে-করতে মজলিশ বসিয়েছে জমজমাট। আমরা সেই আনন্দের হিল্লোলের মধ্যে কিছুক্ষণ থেকে একটা ছোট্ট রেস্তোঁরায় আড্ডা গাড়লাম। দেখা গেল সেটাও মূলত পানশালা। তবে সেখানেও এক স্থানীয় তরুণী একের পর এক চমৎকার সব গান গাইছে। জানিননা পৃথিবীর সব পানশালাতেই বেশির ভাগ গান ইংরেজিতে হয় কি না। তবে ব্লুজ আর রক বোধহয় মদ্যপায়ীদের প্রিয়।

    পরের দিন আমরা জড়ো হলাম লঞ্চঘাটায়। বড়ো একটা হলঘরে সারি-সারি টিকিট কাউন্টার। সেখানে আমাদেরর পাখিপড়া করে বোঝান হল কী করিতে হইবে এবং কী করা যাবে না। নানা কোম্পানির লঞ্চ যায় বলে প্রতিযোগিতা বেশ প্রবল। প্রথম যে দর হাঁকা হয়েছিল আমরা সামান্য মিনমিন করতেই তা প্রায় অর্ধেক হয়ে গেল। আমরা দুটি দ্বীপ মাত্র যাব, বিকেলে আবার আমাদের যেতে হবে অনেকটা দূরে এক নদী বিহারে।

    প্রথম গন্তব্য মামুটিক দ্বীপ। শেখানে গিয়ে জানা গেল যেহেতু সেটা টুঙ্কু আবদুল রহমান নেচার পার্কের অন্তর্গত সেখানে ঢোকার আবার আলাদা প্রবেশমূল্য আছে। লঞ্চঘাটায় এটা বেমালুম চেপে যাওয়া হয়েছিল। দুর্দান্ত নীল জলের সমুদ্র। কিন্তু কয়েকহাত দূরেই দড়ি দিয়ে সীমানা নির্দেশ করা আছে কদ্দুর পর্যন্ত স্নানার্থীরা যেতে পারবে। ও হরি এ তো হাঁটুজল। আবার কায়দা করে বলা হয়েছে আমরা চাইলে স্নর্কলিং করতে পারি। সেই গোড়ালি ভেজানো জলেই দু-চারজন দেখলাম মুখ ডুবিয়ে চেষ্টা করছেও। আমাদের যে স্নর্কলিং-এর সরঞ্জামগুলো ভাড়া দেওয়া হয়েছিল আমরা কেউ দেখতে পাবার আগেই সেগুলো চটপট ব্যাগের মধ্যে লুকিয়ে ফেললাম।

    মালয়েশিয়ায় ইসলাম বিরাজ করে। সমুদ্রস্নান ইত্যাদির পোশাকাশাক সম্বন্ধে নানা সাবধানবাণী এদিকে-ওদিকে লেখা থাকলেও দেখলাম খুব কড়াকড়ি নেই। বিদেশিরা সমুদ্রস্নানের উপযুক্ত পোশাকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। স্থানীয় মেয়েরা একটা আচ্ছাদন গায়ে দিয়ে সমুদ্রতীরে এসে দিব্যি সেটা উন্মোচিত করে সাঁতারের পোশাকে জলকেলিও করছেন, সেলফিও তুলছেন। আমরা ওই হাঁটু জলেই কিঞ্চিত মাতামাতি করে স্থির করলাম পরের দ্বীপটা দেখে নেওয়ার। মূল ভূখণ্ড থেকে ঘন-ঘন মোটরবোটেরা আসছে। আপনাকে অপেক্ষা করতে হবে আপনার টিকিট যে-কোম্পানির তার বোটের জন্যে। সে এল এবং আমাদের নিয়ে গেল পরের দ্বীপে।এখানে বেলাভূমি বেশ দীর্ঘ।সেখানের মাতন শেষে আমাদের আবার নামিয়ে দেওয়া হল জেসল্টন লঞ্চঘাটায়।

    বাড়ি ফিরে স্নান করে তরতাজা হয়েই আবার এক দীর্ঘ মোটরযাত্রা। আমরা এসে নামলাম কাওয়া কাওয়া নদীর তীরে এক নির্জন লঞ্চঘাটায়। শহর ছাড়িয়ে অনেকটা চলে এসেছি আমরা। এবারের নদীভ্রমণের দু-দিকে যে ঘন জঙ্গল তা সেই বোর্নিওর সুপ্রসিদ্ধ অরণ্যের অংশ। সেই ভেবেই আমরা রোমাঞ্চিত। নৌকোঘাটার তীরে এক প্রশস্ত ছাউনি। সেখানে এক পাশে চা, কফি, সামান্য জলখাবারের আয়োজন। সবারই দেড়শো কিলোমিটারের ওপর যাত্রার পরে খিদে পেয়েছিল। খাওয়া শেষ হতেই নির্দেশ এল হ্যাঙারে টাঙানো লাইফ জ্যাকেট টেনে নিয়ে পরে ফেলার। একটু পিচ্ছিল পথে বোটে উঠে রওনা হতে না হতে দেখি বাঁ- দিকে নদীপাড় থেকে বেরিয়ে আসা এক গাছের ডালে গা এলিয়ে শুয়ে আছে এক মনিটর লিজার্ড। তারপরের আধঘণ্টায় একটি কাঠঠোকরা আর গোটা কয়েক বাঁদর ছাড়া কিছুই দেখা গেল না। কিন্তু সেই দু-দিক থেকে ঝুঁকে থাকা নিবিড় বনের বুক চিরে মিনিট পঁয়তাল্লিশ ঘুরে বেড়ানোও জান্নাত। এবার ঘুরে উলটো মুখে চলল নৌকা। এবং আলো যখন নিভে আসছে দীর্ঘ এক গাছের মাথায় দেখা গেল বহুকাংখিত দীর্ঘনাসা বাঁদরদের। ফেরার পর নির্দেশ এল আবার গাড়িতে ওঠার। আরও এক কিলোমিটার দূরে সমুদ্রের পাড়ে আরেক ছাউনিতে আমাদের নৈশভোজের বন্দোবস্ত। সাগরতীরে সূর্যাস্ত দেখা ফাউ। এখানে খাওয়া স্টিকি রাইস আর ন্যুডলস, সঙ্গে রয়েছে মাছ আর বিফ কারি, মিষ্টি। ডিনার শেষ হতে হতে অন্ধকার বেশ ঘনিয়ে এলে আবার আমাদের আমাদের নৌকাঘাটায় ফিরিয়ে আনা হল। কাপ্তান আমাদের বার বার সাবধান করে দিলেন আমরা যেন কোন আলো না জ্বালি আর টুঁ শব্দটি যেন না করি। মিনিট পনেরো যাওয়ার পর বোটের ইঞ্জিন বন্ধ করে দেওয়া হল। নিঃসাড়ে কয়েক মুহূর্ত প্রতীক্ষা তারপর নদীপাড়ের একাধিক ঝোপে জ্বলে উঠল পুঞ্জ পুঞ্জ আলোর কণিকা— জ্বলা-নেভা করতেই থাকল কে জানে অল্পক্ষণ না অনেকক্ষণ, আর সেই স্বল্পালোকিত নক্ষত্রবীথি ধরে ফিরে এল আমাদের অলৌকিক জলযান।

  • মন্তব্য জমা দিন / Make a comment
  • (?)
  • মন্তব্য পড়ুন / Read comments