• Parabaas
    Parabaas : পরবাস : বাংলা ভাষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতি
  • পরবাস | সংখ্যা ৯৭ | জানুয়ারি ২০২৫ | গল্প
    Share
  • মুক্তিধাম : অরিন্দম গঙ্গোপাধ্যায়

    —বুঝলি লল্লা, এই কাশীধাম ভোলেনাথের তিরশূল পর বিঠায়ে হুয়ে হ্যাঁয়। তভি য়ঁহা দাহ-সংস্কার হোনে সে ভোলেনাথ খুদ আ কর মৃতকো কো প্রণব সুনাকর মুক্ত কর দেতা হ্যায়। আমি তাদের শিউজির চরণমে লে আতা হুঁ। কোশিস করি কেবল।

    আরে, ক্যায়া হুয়া, চা'য় তো পিও। নিজের চায়ের গ্লাসে এক লম্বা চুমুক দিয়ে সুবোধ ভাইয়া বলে।

    আমার গা গুলোচ্ছিল। চা তো নয়, চিনির গোলা। তা ছাড়া মণিকর্ণিকা ঘাটের অদূরে এই চায়ের টাপড়িতেও ধেয়ে আসছে মাংসপোড়া গন্ধ। তার ওপর একটু আগেই সুবোধ ভাইয়া ডোমের থেকে বাঁশ নিয়ে একটা নিবু-নিবু চিতায় মড়া নেড়ে-চেড়ে দিচ্ছিল আর বলছিল, বিস-বাবিস সাল কা লড়কা, মা-বাপ কো পতা হোতা তো কিতনা দুখ হোতা।

    আমি শুধু দেখলাম, ধিকিধিকি আগুনে কালো হয়ে আসা একটা খুলি আর তার সঙ্গে ব্যাঙাচির লেজের মত মেরুদণ্ডের অবশেষ। এক পর্যায়ে বাঁশের ঘায়ে খুলিটা ফাটিয়ে দিল সুবোধ ভাইয়া। পটপট করে ঘিলু জ্বলতে লাগল। ততক্ষণে আমাদেরও ডাক এল, সুকৃতের দাদাজির চিতা জ্বালাবার পালা এসে গেছে।

    এইসব দেখার পরে কি আর চা গলা বেয়ে নামে। সুবোধ ভাইয়া কিন্তু নির্বিকার, নিজেই দোকানে রাখা কাচের বয়াম থেকে লেড়ো বিস্কুট বের করে কামড় দিল, দোকানির চোখে সম্ভ্রমের দৃষ্টি দেখলাম।

    চারদিন আগে যখন লাল বাহাদুর শাস্ত্রী এয়ারপোর্ট থেকে সুকৃৎদের পৈতৃক গ্রামে যাবার জন্য গাড়িতে উঠেছিলাম তখন আমরা বারাতি। আমি আর রাজেন। সুকৃৎ জয়সওয়াল, বম্বেতে আমাদের কলীগ। সুকৃতের হলদি, সঙ্গীত, বিয়ে, সম্ভব হলে একদিন বাবা বিশ্বনাথ, গোদৌলিয়ার রাবড়ি, চাটএইই প্ল্যান ছিল। কিন্তু সুকৃতের ফুলশয্যের রাতও ভোর হল, আর ওর দাদাজিও দেহ রাখলেন। নব্বই হয়েছিল। তবুও এক মুহূর্তে বাড়ির আবহাওয়া পাল্টে গেল। এদিকে শ্মশান নেই কাছেপিঠে। হলই বা ষাট কিলোমিটার দূর, তবু গঙ্গামাঈয়ার লাগোয়া মণিকর্ণিকা, হরিশ্চন্দ্র ঘাটের কমপিটিশনে গাঁয়ের এলেবেলে শ্মশান কি টিঁকতে পারে? অতএব চলো বনারস!

    সুকৃৎ বলল, তোরা আর একটা দিন থেকে যাবি? যাবি বনারস? রাজি না হবার কারণ ছিল না। বাকেট লিস্ট তো ছিলই, শ্মশানটা নাহয় যোগ হল। শুধু রাজেন বলল, আমি বরং সারনাথটা দেখে আসি।

    এখন মনে হচ্ছে সারনাথ গেলেই হত, এইসব দৃশ্য দুর্বল কলিজায় হজম হলে হয়। কিন্তু তাহলে এই যোগাযোগটা হত না।

    চায়ের দাম দিতে গেলে দোকানি কিছুতেই নিল না। আপ বাবাজিকে মেহমান হ্যায়। বাবা কিতনে লোগোঁ কো মুক্তি দিলওয়াতা হ্যাঁয়। ফির আইয়ে।

    ভাগ্যিস চা শেষ হয়েছিল, নইলে বিষম খেতাম। ধুতি-উতি পরে থাকলেও সুবোধ ভাইয়াকে কি বাবাজি বলে মানা যায়! তাছাড়া হাসপাতালে, শ্মশানঘাটে আবার এসো বলতে আছে! দোকানি কিন্তু সিরিয়াস। ভাবল আমি বিশ্বাস করছি না, সে আবার বলল, আপনি জানেন না, ইয়ে সন্ত আদমী আছে। অস্পতাল, মুর্দাঘরোঁসে বে-বারিশ লাশোঁকো সদ্গতি করবাতে হ্যাঁয়। পোলিসওয়ালে ভি বহোত মানতে হ্যাঁয়। আমি বুঝলাম কেন সুবোধ ভাইয়া এসে পড়ার পর ডোমের অফিসে লোকেদের ব্যবহারই অন্যরকম হয়ে গেছিল। তার আগে এত হুজ্জুত করছিল যে বলার নয়।

    সুবোধ ভাইয়া দেখি মিটিমিটি হাসছে।

    আমাকে বলল, তু আজ রহ যা লল্লা।

    আমার শ্রীরামপুরের পুরনো পাড়া মনে পড়ছিল। বসাক লেনের বারো ঘরের বাসিন্দাদের ঘরকন্না। সুবোধ ভাইয়াদের খাপড়ার চালের বাড়ির দাওয়ায় ফুচকা বেলে শুকোতে দিত চাচি। কাঠির আগায় ন্যাকড়া বেঁধে কাক তাড়াতো। আমাদের ভাড়া বাড়ির দোতলার বারান্দা থেকে দেখা যেত। তিওয়ারি চাচার ঘুগনি, ফুচকা, আলুকাবলির হাতগাড়ি ছিল। রোজ বিকেল হলে গাড়ি ঠেলতে ঠেলতে বটতলার দিকে চলে যেত তেওয়ারি চাচা।

    পাড়াটাতে আরো অনেক ইন্টারেস্টিং লোক ছিল। যেমন নারায়ণদার বাবা। ভোররাত থাকতে খেঁটো ধুতি পরে জাল হাতে বেরিয়ে যেত। মাছ ধরে পাইকেরের কাছে পাল্লায় বেচে এসে বেলা দশটা নাগাদ সরষের তেল মেখে কুয়োতলায় চান করতে বসত।

    পাড়ায় কারো সিনেমার টিকিটের দরকার হলে বাচ্চুর বাবা ছিল। টিমটিম করে চলা একমাত্র সিনেমাহলের আশার।

    বাবা ইসকুলে পড়াত বলে ওনার পাড়ায় পরিচিতি ছিল মাস্টার বলে। সেই সুবাদে আমি ছোট মাস্টার। পড়ি মোটে ক্লাস থ্রি-তে, কিন্তু তাতে কি, মাস্টারের বেটা বলে কথা। একমাত্র চাচিই আমাকে লল্লা বলে ডাকত, পরে দেখাদেখি সুবোধ ভাইয়াও। তখন সতেরো আঠেরো। একবার ফেল করে লেখাপড়া ছেড়ে দিয়েছে। পাড়ায় কারো অসুখ-বিসুখ হলে বুক দিয়ে পড়ে। মারা গেলে শ্মশানে ছোটে।

    বাপ-ব্যাটা দুজনেই শিবভক্ত। দুজনেরই ডান হাতে ভোলেবম লেখা উল্কি। চাচা তো শ্রাবণ মাসে ফি সোমবার তারকেশ্বর ছুটবেই।

    আবার কী একটা গান গাইত, তারকব্রহ্ম তারকেশ্বরে ডাক রে আমার মন।

    ভক্তিভরে ডাকলে পরে দয়া করেন পঞ্চানন

    বাবা শ্মশানে থাকে, গায়ে ভস্ম মাখে

    দিবানিশি রাম বলে ডাকে...

    ও গান আর কোথাও কাউকে গাইতে শুনিনি। আজ কুড়ি বছর পরে মণিকর্ণিকা ঘাটে ওই গান শুনেই আমার এ্যান্টেনা খাড়া। শব্দ অনুসরণ করে দেখি মোটামুটি পরিষ্কার ধুতি ফতুয়া পরা, লম্বা, দাড়িগোঁফের জঙ্গল, একটা মাঝবয়েসী লোক চিতা সাজাতে সাজাতে গাইছে। তারপর তার ডান হাতটা লক্ষ্য করতে যেটুকু সময় লাগে। ডেকে বললাম, আপ সুবোধ ভাইয়া না?

    পাড়া ছাড়ার সময় শুনেছিলাম চাচির নাকি কী বীমারি হয়েছে, বাঁচার আশা নেই। ততদিনে তেওয়ারি চাচা চলে গিয়েছেন। সুবোধ ভাইয়া চাচার হাতগাড়ি নিয়ে বার কয়েক বের হলেও দোকান চালানো তার ধাতে নেই। তখন থেকে দোকানটা পাশের বাড়ির বাচ্চু চালায়, মাসান্তে চাচিকে কিছু ধরে দেয়। তারপর একবার দেওয়ালির সময় পুরনো পাড়ায় বেড়াতে গিয়ে শুনলাম চাচির খেয়াল চেপেছে, মরতে হলে কাশীতেই মরতে হবে। মা বেটায় যুক্তি করে, ঘরে তালা দিয়ে কাশী চলে গেছে।

    —কি রে লল্লা, আজ থাকবি তো? আর দুটো বডির ব্যবস্থা করেই তোকে বাসায় নিয়ে যাবো। মা খুশি হবে দেখেইত্তে দিনোঁ বাদ। পর বুডঢি পহেলে জৈসী ভোলিভালি নহি রহি। বহোত ডাটতি হ্যায়।

    এদিকে সুকৃৎ সমানে ইশারা করছে, পালিয়ে চল... লোকটার মাথায় ছিট আছে। কথাটা হয়ত ঠিকই, কিন্তু চাচির কথা মনে পড়ে দুর্বল হয়ে যাচ্ছিলাম। চাচি বেঁচে আছে! না-ফোলা, বাতিল গোলগাপ্পার চূরণ দিয়ে চাট বানিয়ে দিতো চাচি। পালা-পার্বণে ঘরে ঠেকুয়া, খুদের পায়েস হলে তোলা থাকত আমার জন্য। আমার হিসেবমত চাচির এখন সত্তর-পঁচাত্তর হবে। দেখা করতে হলে এখনই সময়।

    সুবোধ ভাইয়া আমার হাত ধরে টানল, চলো, অস্থি বিসর্জন করনা হ্যায়, গঙ্গামাঈয়ামেঁ এক ডুবকী লগাকে আতে হ্যাঁয়। আমার অন্য কনুইটা ধরে ফেলল সুকৃৎ। বলল, অসম্ভব। ওখানে বেশুমার অস্থি-বিসর্জন হয়ে আছে। ওখানে আমরা কেউ ডুব দেব না। নাইতে হলে অসি ঘাট চলো। সুকৃতের আপত্তি দেখে ওর বড় ভাই একাই গেল। ঠিক একা না, সুবোধ ভাইয়া তো যেতই।

    আমরা চবুতরায় বসেই রইলাম। ততক্ষণে চাচিদের কাশীবাসের গল্প সুকৃতেরও শোনা হয়ে গেছে। কাশীতে এসে চাচি উঠেছিল এক মুমুক্ষু সদনে। ঘাটগুলোর কাছে এরকম অনেক দাতব্য ভবন আছে। সেখানে থেকে কয়েক মাস সকালে গঙ্গাচান করে, মন্দির পরিক্রমা করে, ছত্রে খেয়ে চাচির বেশ কেটে গেল। ততদিনে সুবোধ ভাইয়ার শ্মশানের লোকেদের সঙ্গে দোস্তি হয়ে গেছে। কাজটা তো আগে জানতোই, তার উপর মিনি-মাগনায় কাজ সেরে দেয়... চা-বিস্কুট, কখনো-সখনো লাড্ডু-পুরী পেলেই খুশি। টাকা-পয়সার খাঁই নেই, যে সব শবযাত্রীর লোকবল, টাকাপয়সা তেমন নেই, তাদের জন্যও জান লড়িয়ে দেয়। তারপরে তো এই... পুলিশের লোকজনও খাতির করে আজকাল। শুধু চাচির সময়মত মরা হয়ে ওঠেনি। বরং মেজাজ হয়েছে আংরার আগুনের মত। ছেলের ভরসায় না থেকে নিজেই ঘুগনি আর গোলগাপ্পা নিয়ে বসে রবিদাস গেটের কাছে। এক কামরার ভাড়া বাড়িতে মা-ব্যাটার চলে যাচ্ছে দিন।

    সুকৃৎ একটা কাঁচা খিস্তি করল যাবার আগে, কিন্তু আমার সুটকেসটা কাল পাঠিয়ে দেবে বলে আশ্বস্ত করে গেল। কথা বলতে বলতে মদনপুরা আর বাঙালিটোলার মাঝখানে একটা গলির মুখে এসে দাঁড়িয়েছি। বেলা প্রায় সাড়ে তিনটে। একটা ভাঙা-চোরা বাড়ির সামনে দেখলাম চাচি, ঘুগনির ডেগ, ফুচকার বাক্স-টাক্স নিয়ে রিকশায় ওঠার তোড়-জোড় করছে। ছাপা শাড়ি নয়, সাদা শাড়ি, কালো পাড়, অসম্ভব শীর্ণ শরীরে গৌরবর্ণ, যেন আলো বেরচ্ছে।

    ছেলেকে দেখে চাচির মুখে যে কী খেলে গেল বলতে পারি না। ক্রোধ, হতাশা, মায়া... অসহায়তা... ঠিক জানি না। একবার দপ করে জ্বলেই যেন নিভে গেল, ক্লান্ত স্বরে বলে উঠল, খানা ঢাকা দেওয়া আছে।

    সুবোধ ভাইয়া হাসে, বলে, আরে মৈয়া, দেখ তো কোন আয়া। বসাক লেনের ছোটা মাস্টার, অপনা লল্লা।

    বুড়ির বলিরেখাঙ্কিত মুখে এবার হাসি ফুটল... লল্লা, ইত্তে দিনো বাদ! একটু আরাম করে নে বাবু, আমি ফিরে এসে খুদের পায়েস বানাবো, আজ থাকবি তো। রিকশা নিয়ে চাচি চলে গেল।

    সে রাতটা ছিলাম।

    চাচির দেরি দেখে দুই ভাই মিলে রাতে চাল-ডাল-আলুর খিচুড়ি ফুটিয়ে নিলাম। সঙ্গে আচার আর পাঁপড়।। চাচি ফিরল সাড়ে নটা নাগাদ। কিছুতেই শুনল না, পায়েস খাওয়াবে বলে একস্ট্রা দুধের প্যাকেট কিনতে গেছিল, না পেয়ে রাবড়ি নিয়ে এসেছে। গল্প করতে করতে খাওয়া হল। পুরনো পাড়ার গল্প, কাশীর গল্প। কথা বলতে বলতে এঁটো হাতেই শুকোল।

    —বুঝলি লল্লা, ডাকটরজি বলেছিল ছে মহীনা, লেকিন শিউজি দেখিয়ে দিলেন, মরব বললেই মরা যায় না। আমার আগে থেকে কতশত লোক এসে বসে আছে, কত বুডঢি, কত ঔরত। কারো বাড়ি থেকে খত আসে, কারোকে কোঈ পুছে না। ইধর যমরাজভি বেখবর। হাভেলিভর লোগ মওতকে ইন্তেজার মেঁ, এটা একটা কথা হল?

    আমারও ছয় মাস শেষ হয়ে বছর ঘুরে গেল। পাশের ঘরের সাবিত্রীমাঈ, আজীবন শুদ্ধাচারে থেকে আটাত্তর বছরে একদিন ছত্রে পুরী আর লৌকির সবজি খেয়ে দাস্ত-বমি করে মারা গেল। ডোমেরা বাঁশে জড়িয়ে হাড় ক'খানা তুলে নিয়ে গেল। কেয়া ভ্যাঙ্কর অন্ত্, বোলো! তখনই আমি ঠিক করলাম, এভাবে চলবে না। কঙ্গন বেচে সামান কিনলাম। সু কে বাপু তো গোলগপ্পে বেচতা থা, বনানা তো মুঝেই পড়তা থা। আভি খুদ বনাকে বেচতি হুঁ। আপনা মর্জিকে মালিক। বেটা ভি সাথ রহতে হ্যায়। আমাকে নিতে হলে মওতকো কষ্ট্ করকে আনা পড়েগা, হাঁ।

    —তাহলে বসাক লেন কী দোষ করল চাচি? ফিরে যাচ্ছ না কেন?

    —ম্যায় তো তৈয়ার হুঁ। পর ইয়ে জায়েগা? শিউজি কে পেরাইভেট সকটরি জো বনে হ্যায়, লোগোঁকো মুক্তি দিলওয়াতা হ্যায়।

    সুবোধ ভাইয়া দেখি থালায় আঁচড় কাটছে।

    —পর এক বাত হ্যায়। মেরা ফৈসালা গলত থা, ফিরভি বেটেনে সাথ দিয়া। অব ও কুছ ভি করে, সাথ দেনা তো পড়েগা না! আমার তো কেটে যাবে লল্লা, কিন্তু হো সকে তো ভাইয়া কা জরা খয়াল রাখিও।

    চিরকাল ঘোমটা টানা, নরম-সরম ভীতু চাচিকে দেখে এসেছি। এবার অচেনা লাগছিল, ভাল লাগছিল।


    ফিরে এসে বারকয়েক ফোন করেছি। প্রথমে মাসে-দুমাসে। তারপর বছরে দুবার, একবার করে। সব ঠিকই আছে। তারপর যা হয়, ভাইয়া তো সত্যযুগের লোক, চাচিরও স্মার্টফোন নেই, সোশ্যাল মিডিয়া নেই।

    বছরখানেক হল, পুরনো নম্বরে ফোন করলে বলছে, ইয়ে নাম্বার গলত হ্যায়।



    অলংকরণ (Artwork) : রাহুল মজুমদার
  • মন্তব্য জমা দিন / Make a comment
  • (?)
  • মন্তব্য পড়ুন / Read comments