[নিম্নলিখিত কথোকথনের কোনো কোনো শব্দের অর্থ লিপিকারের জানা নেই। সত্যি কথা বলতে গেলে এই কথাবার্তার স্থান-কাল-পরিস্থিতি কোনো বিষয়েই তিনি কিছু জানেন না। বক্তাদের পরিচয়ও তিনি জানেন না। তিনি বলেছেন – যে হাওয়া সর্বক্ষণ সারা দুনিয়া জুড়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে, সেই বাতাসেই তিনি এসব শুনেছেন। কিন্তু সেটা তার প্রলাপ মনে করে উড়িয়ে দেওয়াই ভালো। কোথা থেকে জানলেন, ঠিক জানলেন কি ভুল জানলেন, সেটা এখানে অবান্তর। এই কথোপকথন হয়তো কারও কারও কাছে একটা জবর খবর হবে – যাকে বলে ইন্টেরেস্টিং ফেক্ ন্যুজ. – সেটাই প্রকাশকের আশা।
লিপিকার জানিয়েছেন যে সংলাপ থেকে শুধু একজনের নামই সঠিক জানা যাচ্ছে। অন্যজনের কন্ঠস্বর অনেকটা প্রয়াত গায়ক শ্রীযুক্ত বিশ্বাসের ঐশ্বরিক কন্ঠস্বরের মত। তাই তাঁকে লিপিকার বিশ্বাসদা বলে অভিহিত করেছেন।]
কার্তিক—আসতে পারি, স্যার?
বিশ্বাসদা—কে? ও কার্তিক! এসো এসো। আমার হিসাবের কাগজগুলো সব পড়ে গিয়ে এলোমেলো হয়ে গেছে। এত বড় হিসেব, যে নসমা থেকে বার করে বস্তুতে রাখতে হয়েছে। নইলে নব্বই পাতায় গিয়ে আগের পাতার সংখ্যাগুলো নসমায় রাখতে পারছিলাম না।
কার্তিক—কী কাণ্ড!
বিশ্বাসদা—তা যাই হোক্। আটাশি পাতাটা কী হল জানি না, খুঁজে পাচ্ছি না। তাও কোনো মতে হিসেবটা শেষ করেছি।
কার্তিক—কিসের হিসেব, স্যার?
বিশ্বাসদা—বলছি একটু পরে। তোমার সব খবর ভালো তো?
কার্তিক—হাঁ স্যার।
বিশ্বাসদা—বসো। বসো।
কার্তিক—থ্যাঙ্কিউ স্যার।
বিশ্বাসদা—তোমাকে ডেকে পাঠালাম এই কারণে যে সেদিন যে ধীন্তুগুলো নিয়ে কথা হচ্ছিল, তাদের বস্তু-প্রকৃতি ঠিক করে ফেলেছি।
কার্তিক—সে তো দারুণ খবর স্যার! কেমন হবে ব্যাপারটা?
বিশ্বাসদা—ওদের একটা খাঁচার মধ্যে পুরে ফ্যালো।
কার্তিক—মানে? সব ধীন্তুদের খাঁচায় পুরব? সবাইকে একটা খাঁচার মধ্যে রেখে দেব?
বিশ্বাসদা—না না, প্রত্যেককে নিজের নিজের খাঁচায়।
কার্তিক—ও! তাহলে…
বিশ্বাসদা—খাঁচার মধ্যে থেকে ওরা কিছুই জানবে না। তাই ওরা যাতে চারপাশের সব কিছু না হোক, কিছুটা অন্তত ঠাহর করতে পারে, তার জন্য ওদের খাঁচায় কিছু ইন্দ্রি লাগাতে হবে।
কার্তিক—ঠিক বুঝলাম না, স্যার।
বিশ্বাসদা—যেমন মনে করো…
(একটু থেমে)
বিশ্বাসদা—এই যে বিশাল ব্রহ্মাণ্ড। তার বিভিন্ন মাত্রা তো তাদের অনুভব করতে হবে?
কার্তিক—আজ্ঞে।
বিশ্বাসদা—কিন্তু মাত্রা তো অগুন্তি, অসংখ্য। সব যদি ওদের অনুভব হয়, তাহলে তো আমাদের এই খেলাটা ঠিক করে এগোবে না। সব ঘোল পাকাবে। তাই না?
কার্তিক—তা তো বটেই!
বিশ্বাসদা—সেই জন্য ওদের কয়েকটা বাছা বাছা ইন্দ্রি দিতে হবে। আমি ভাবছিলাম পাঁচটা কি ছ’টা দেব।
কার্তিক—কিন্তু তাতে তো ওরা কিছুই বুঝবে না, স্যার!
বিশ্বাসদা—কিছুই বুঝবে না?
কার্তিক—না, মানে, কিছুটা বুঝবে ঠিকই। কিন্তু এত কম বুঝবে, যে… তাতে কি কিছু লাভ হবে? মানে খেলাটা কি এগোবে?
বিশ্বাসদা—তুমি ক’টা ইন্দ্রি দিতে চাও?
কার্তিক—অন্তত শ’ খানেক দিলে হয় না?
বিশ্বাসদা—এই অসংখ্য মাত্রার মধ্যে ওরা যদি একশটা উপলব্ধি করে, তাহলে ভালো হবে বলছ?
কার্তিক—কিম্বা দু’শটা।
বিশ্বাসদা—দু’শ? তুমি কি অংকটা কষেছ?
কার্তিক—না স্যার, ওটা তো আমার বিভাগে ঠিক পড়ে না…
বিশ্বাসদা—একদম ঠিক কথা। তোমার বিভাগে পড়ে না। আমি অংকটা কষেছি। এই অংকটাই ওই কাগজে লেখা। খুব ইন্টেরেস্টিং অংক হে।
কার্তিক—সে তো হবেই। একটা পাতা তো পাচ্ছেন না বললেন।
বিশ্বাসদা—ও ঠিক আছে। অংক শেষ হয়ে গেছে।
কার্তিক—তা, কী মীমাংসা পেলেন?
বিশ্বাসদা—এ কি লংকার যুদ্ধ পেয়েছ, যে মীমাংসা পাবে? এ হচ্ছে কুরুক্ষেত্রের সংকট। আমি দেখলাম খুনোখুনি আর আধ্যাত্মিকতা ব্যালেন্স করতে গেলে, বস্তু ও অবাস্তবের ভারসাম্য রাখতে হলে, এই অংকের একটা আপোষের সমাধান হল ওই পাঁচ কি ছয়।
কার্তিক—খুনোখুনি স্যার?
বিশ্বাসদা—অবশ্যই! লোভ, মূর্খতা, হিংসা এবং খুনোখুনি অনিবার্য।
কার্তিক—তাহলে আর লাভ কী হল স্যার?
বিশ্বাসদা—হয়, হয়, জা.নতি পারো না।
কার্তিক—খেলা এগোবে বলছেন?
বিশ্বাসদা—এগোবে মানে? জমে উঠবে। অন্তত সে রকম আশা রাখাই ভালো।
কার্তিক—ঠিক আছে স্যার। তাহলে ওই পাঁচ-ছ’টা ইন্দ্রি কী কী হবে স্যার?
বিশ্বাসদা—তড়িৎ-চুম্বকীয় তরঙ্গ জানো তো?
কার্তিক—মানে অশরীরী নাচ স্যার?
বিশ্বাসদা—শরীর-টরির বলে ব্যাপারটা ঘোলাটে করো না। ভূ-ঢেউ বলো। তার একটা অংশকে ওরা আলো হিসাবে বুঝতে পারবে। এই ইন্দ্রিটাকে বলা যাক দৃষ্টি।
কার্তিক—ঠিক আছে স্যার।
বিশ্বাসদা—ভূ-ঢেউ-এর আর একটা অংশকে ওরা তাপ হিসাবে বুঝবে। এবং যে ইন্দ্রি দিয়ে তাপ বুঝবে, সেই ইন্দ্রিতে স্পর্শও পাবে।
কার্তিক—একটু খটোমটো লাগছে স্যার। স্পর্শ মানে স্যার?
বিশ্বাসদা—আমি বিস্তারিত বিবরণ পরে দেবে। আপাতত উপর উপর জেনে নাও।
কার্তিক—ঠিক আছে স্যার।
বিশ্বাসদা—তৃতীয় ইন্দ্রিটা হল বস্তু-ভিত্তিক চাপ-ঢেউ। সেটাকে বলব শ্রবণ।
কার্তিক—বেশ।
বিশ্বাসদা—চার নম্বরটাও ভাবছি বস্তভিত্তিক করবে। কিছু কিছু অপেক্ষাকৃত বড় আকারের অণুর মাধ্যমে আরেক ধরনের স্পর্শ। এটাকে বলব ঘ্রাণ।
কার্তিক—দুটো স্পর্শ?
বিশ্বাসদা—না না, দুটো আলাদা, এক নয়। পরে বোঝাবে। ট্যাবরেলারিতে করে দেখাব না হয়।
কার্তিক—ঠিক আছে স্যার।
বিশ্বাসদা—পাঁচ নম্বরটাও তোমার ভাষায় আরেকটা স্পর্শ। ওদের খাদ্য সংক্রান্ত, যা খাঁচা রক্ষার জন্য প্রয়োজন। ওদের বিবর্তনের শুরুর দিকে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। এটাকে বলব স্বাদ।
কার্তিক—বাব্বা! তিনটে স্পর্শ!
বিশ্বাসদা—হ্যাঁ।
কার্তিক—কিন্তু বিবর্তন থাকবে বলছেন?
বিশ্বাসদা—অবশ্যই! বিবর্তন ছাড়া কোনো খেলাই নেই। সেটাই তো আসল খেলা। বস্তুর বিবর্তন, প্রাণের বিবর্তন, বুদ্ধির বিবর্তন, বোধের বিবর্তন। এই অবিরাম পরিবর্তন থেকেই তো খেলা এগোবে।
কার্তিক—আর অ-বাস্তব আধ্যাত্মিক দিকটা?
বিশ্বাসদা—তুমি ঠিক আমার কথা অনুসরণ করতে পারছ না। ধীন্তুগুলো কী তাহলে?
কার্তিক—ওরা বস্তু নয়?
বিশ্বাসদা—অবশ্যই নয়! খাঁচার বস্তুর মধ্যে অবাস্তব ধীন্তু। কেমন আইডিয়াটা বলো?
কার্তিক—অসাধারণ স্যার! একেবারে মৌলিক!
বিশ্বাসদা—ধীন্তুর বাইরে আর কোনো আধ্যাত্মিকতা এই আলোচনায় অপ্রাসঙ্গিক।
কার্তিক—ঠিক আছে স্যার।
বিশ্বাসদা—জানি তুমি সবগুলো ইন্দ্রি ঠিক বুঝতে পারোনি। কুছ পরোয়া নাই। পরে বুঝিয়ে দেব। ঠিক কী কী বুঝলে তা-ই বলো।
কার্তিক—ধীন্তুগুলো থাকবে এক-একজন এক-একটা খাঁচার মধ্যে। খাঁচায় থাকবে পাঁচটা কি ছ’টা ইন্দ্রি। তাই দিয়ে তারা ব্রহ্মাণ্ডের অসংখ্য মাত্রার যৎকিঞ্চিত একটা অনুভব পাবে।
বিশ্বাসদা—ইন্দ্রির সংখ্যাটা আরেকটু বাড়তেও পারে। হয়তো সেটার মধ্যেও একটা বিবর্তনের খেলা থাকতে পারে। ভেবে দেখিনি এখনো। আরো ভাবতে হবে। কিন্ত খাঁচার মধ্যে আসলে একজন নয়, কয়েকজন থাকবে। এক একটা খাঁচায় কয়েকজন থাকবে, যাদের মধ্যে একজন হবে প্রধান। ইন্দ্রিগুলোর মাধ্যমে যে খবর খাঁচার ভিতরে যাবে, তা সবার আগে সেই প্রধান ধীন্তুর কাছেই পৌঁছবে। বেশিরভাগ সময় সে নিজেকেই মনে করবে খাঁচার একমাত্র বাসিন্দা। যদি তা না হয়, তাহলে অনাবশ্যক দ্বন্দ্ব আর গোলযোগের সৃষ্টি হবে।
কার্তিক—খাঁচায় থাকবে একাধিক জন, অথচ প্রধান জন মনে করবে সে-ই একা? অদ্ভুত লাগছে স্যার!
বিশ্বাসদা—কিছুই অদ্ভুত নয়। বা হয়তো সবই অদ্ভুত। সে তর্কে না গিয়ে, বলো আর কোনো প্রশ্ন আছে?
কার্তিক—ধীন্তুটা তাহলে কী? বা কে? আধ্যাত্মিক দিকটা…
বিশ্বাসদা—আবার আধ্যাত্মিক? ধীন্তুটা ধীন্তু। খাঁচাটা খাঁচা।
কার্তিক—খেলবে কে?
বিশ্বাসদা—তুমি, আমি, খাঁচা, ধীন্তু। সক্কলে।
কার্তিক—বু-বুঝেছি স্যার।
বিশ্বাসদা—আর… মহাকাশের জায়গাটা ঠিক হয়ে গেছে তো?
কার্তিক—হ্যাঁ স্যার। ওই অযুত নিযুত লক্ষ কোটি অমুক তমুক দ্রিঘাংচু সংখ্যার কোণে যে নক্ষত্রটা ঘুরবে তার তৃতীয় গ্রহেই শুরু হবে নাটক।
বিশ্বাসদা—গ্রহটা নক্ষত্রের চারপাশে নিখুঁত গোল কক্ষপথে ঘুরবে না তো?
কার্তিক—না স্যার, আপনি তো বলেছেন অধিবৃত্ত করতে। কখনো গ্রহটা নক্ষত্রের কাছে আসবে, কখনো দূরে যাবে, যাতে শীত গ্রীষ্ম সম্ভব হয়। আর গ্রহটা নিজেও নিজের অক্ষে ঘুরবে, যার থেকে হবে দিন আর রাত্রি।
বিশ্বাসদা—একদম ঠিক।
কার্তিক—একটা প্রশ্ন করব স্যার?
বিশ্বাসদা—করো।
কার্তিক—আপনি কি সিরিয়াস? মানে, কিছু মনে করবেন না, আপনি একটা অন্ধকার কোণে একটা নগণ্য আধখেঁচড়া গ্রহকে একটা ছোট্ট নক্ষত্রের চারদিকে ঘোরাবেন। আর যখন ওই গ্রহটা পাক খেতে খেতে চলতে থাকবে, তার উপরে তখন চলতে থাকবে বস্তুর বিবর্তন আর প্রাণের বিন্যাস। এই ভাবে চলতে চলতে একসময়ে সেখানে প্রকাশ পাবে অজস্র খাঁচা, যার এক একটাতে থাকবে একাধিক ধীন্তু। খাঁচায় থাকবে অতি অল্প সংখ্যক ইন্দ্রি, যা দিয়ে ব্রহ্মাণ্ডের বিশেষ কিছুই বোঝা যাবে না। উপরন্তু এক একটা খাঁচায় শুধু একজন ধীন্তুই সেই ইন্দ্রিগুলো সরাসরি ভোগ করবে, বাকিদের সে গ্রাহ্যও করবে না। এই নিয়ে চলবে আপনার খেলা। আর আপনি বিশ্বাস করেন যে এই থেকে খেলা জমে উঠবে। আমার, স্যার, বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছে।
বিশ্বাসদা—তুমি একটা কথা ভুলে যাচ্ছ।
কার্তিক—কী স্যার?
বিশ্বাসদা—বিশ্বাসে মিলায় বস্তু।
কার্তিক—আজ্ঞে?
বিশ্বাসদা—আমার কল্পনায়, থুড়ি, আমার পরিকল্পনায়, এই সব খাঁচায় ভরা ধীন্তুদের বুদ্ধি থাকবে ঠিকই, তার উপর বোধও থাকবে। কিন্তু বোধ আর বুদ্ধির নিচে – বলতে পারো, ভিত্তিতে, বা গোড়ায় – থাকবে আবেগ আর বিশ্বাস। ইমোশান ওদের তাড়া করে বেড়াবে। ওরা সারাক্ষণ বিশ্বাসের মহাসমুদ্রে সাঁতার কাটবে। অযৌক্তিক দৃঢ় বিশ্বাস, যা দিয়ে ওরা একে অন্যের ক্ষতি করতেও দ্বিধা করবে না। যখন বুদ্ধির বড়াই করবে ওরা, বুঝবেও না যে ওরা চলছে বিশ্বাস নিয়ে, যুক্তি দিয়ে নয়। অর্ধেক সময় লক্ষ্যও করবে না আবেগের চোরা স্রোত।
কার্তিক—সে কি স্যার! তাহলে তো সর্বনাশ হবে। এত কিছু করার পরেও কিছুই হবে না।
বিশ্বাসদা—দেখা যাক্।
কার্তিক—আমার মাথা গুলিয়ে যাচ্ছে স্যার। বুদ্ধিও থাকবে, বোধও থাকবে, কিন্তু ওরা সারাক্ষণ বিশ্বাসের ঘোলাটে জলে সাঁতার কেটে বেড়াবে!
বিশ্বাসদা—এ এক অতি সূক্ষ্ম লাইন হে! এক পাশে মহান মহিমা, অন্য পাশে উদ্ভট উপহাস। কোন দিকে যাবে, কে জানে!
কার্তিক—সাঁতার কাটবে, স্যার? ইন্দ্রির অনুভূতি – তা সে যত সীমিতই হোক্ না কেন – তা অগ্রাহ্য করে, বুদ্ধির আগুন নিবিয়ে, যুক্তির ধার ভোঁতা করে, তর্কের শক্তি ছেড়ে দিয়ে ওরা শুধু বিশ্বাসের স্রোতে গা ভাসাবে? আপনার এত চেষ্টা, এত কল্পনার পরও যদি সব ভেস্তে যায়?
বিশ্বাসদা—শেষে যদি কিছুই না হয়, আমরা আবার নাহয় নতুন করে শুরু করব। সময়ের তো অভাব নেই।
কার্তিক—আজ্ঞে স্যার।
(একটু পর)
কার্তিক—আজ তাহলে উঠছি স্যার।
(একটু পর)
কার্তিক—স্যার, এই তো আপনার হারিয়ে যাওয়া আটাশি পাতা! শেষের দিকে কী ভয়ঙ্কর কাটাকাটি দেখছি।
বিশ্বাসদা—ও আর দরকার নেই। উত্তরটা পাঁচ কি ছয় কি বড় জোর সাত। ওর কাছাকাছিই হবে।
কার্তিক—আর হিসেব করার দরকার নেই?
বিশ্বাসদা—না রে বাবা! কিন্তু শোনো…
কার্তিক—আজ্ঞে?
বিশ্বাসদা—গ্রহটা নক্ষত্রের চারপাশে অধিবৃত্ত কক্ষপথে ঘুরবে আর গ্রহটাও নিজের অক্ষে ঘুরবে। সেটা ঠিক আছে। এতে ঋতু পরিবর্তন আর দিন-রাতের বন্দোবস্ত হল।
কার্তিক—হ্যাঁ স্যার।
বিশ্বাসদা—শুধু ওর নিজের অক্ষটা যেন কক্ষপথের অক্ষের সমান্তরাল না হয়। গ্রহের অক্ষটা সামান্য একটু বেঁকিয়ে দিও, যাতে গ্রহটা একটু কাত হয়ে ঘুরতে থাকে। তাহলে ঋতু পরিবর্তনের মজাটা আরো জমবে। একই সময়ে কোথাও হবে শীত, কোথাও হবে গ্রীষ্ম।
কার্তিক—আচ্ছা স্যার।
বিশ্বাসদা—আজ এই অবধি থাক, কেমন?
কার্তিক—ঠিক আছে স্যার। আজ তাহলে উঠছি স্যার। থ্যাঙ্কিউ স্যার।
বিশ্বাসদা—এসো।