• Parabaas
    Parabaas : পরবাস : বাংলা ভাষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতি
  • পরবাস | সংখ্যা ৮৩ | জুলাই ২০২১ | কবিতা
    Share
  • দুটি কবিতা : আর্যা ভট্টাচার্য


    প্রতিচ্ছবি

    এই বাড়ি বর্তমানে তক্ষক আবাস। অদ্ভুত
    আওয়াজ করে কাকে যেন আগা করে সে তক্ষক, ভুষোকালি লেপে দিলে পুরোটা আকাশ।

    একখানা ছেঁড়া চট দরজায় দড়ি দিয়ে ঝুলছে এখনো, আব্রুর স্মৃতি গায়ে লেখা।

    কিছু ভাঙা কলসাদি। ভেতরে ক্লান্ত সাপ কুণ্ডলীতে নিশ্চুপ নিঃসাড়। পল্লববিহীন চোখ খোলা।

    হিম দিয়ে বোনা যেন, নিটোল বিশাল কিছু মাকড়সার জাল, মশারি হয়েছে ছাদে ঝুলে।

    দেওয়ালের জলছাপে ফটো একখানা।
    কালো নয় সাদা নয়, বাদামীও নয়।
    নোনাধরা রঙহীন।

    যেমন ছিলাম একদিন
    তুমি আমি এ কোটরে, এ শহরে, চাপা পড়ে অস্তিত্ব জঞ্জালে।

    বুকের হাপর থেকে খোঁড়া বৈরাগীর মতো টেনে টেনে চলেছিল পন্নগ জীবন।

    পরিত্যক্ত সময়ের নির্ভুল চিহ্ন কিছু
    এখানে এখনো আছে পড়ে। প্রদীপ নিভলে তবু কুলুঙ্গিতে মোহাঞ্জন কিছু লেগে থাকে।।


    || অন্তেবাসী ||

    মনে হয় ঝড়ের মধ্যে বসে আমি।
    খুব যেন উথালপাথাল ঝড়।
    পুবদিক থেকে উপোসী পশুরা ছুটে এসে
    কড়া নাড়ছে বিপুল আবেগে।

    জানলার শার্সি ভেঙে ঐ বুঝি এসে গেল বরফ পাহাড়--
    সাইবেরিয়ার থেকে প্রলয় আক্রোশে ধাওয়া
    নটরাজ--আকাশ অম্বর!
    ঘূর্ণি হাওয়ার মতো টান উড়িয়ে নিয়ে যায় বুঝি ঘর বাড়ি, অসহায় দেওয়াল উঠান।

    শনশন শব্দ করে হৃৎপিণ্ড শতখান ফাটছে চৌচির, খর বৈশাখ দিনে শিমুলের বীজ।

    সে আঘাত ঘাতক শীতের, মুছে দিতে
    সহস্র আঙুলে, লড়ে যাচ্ছ একা। ছোট কোনো শিশু যেন, পুঁটুলিতে সাপটিয়ে জড়িয়েছো বুকে, ভালোবেসে আমার হৃদয়। ধুকপুক।

    মধু দিচ্ছো কালচে, বিবিক্ত দুই ঠোঁটে।
    ওম্ দিচ্ছো সবটুকু দিয়ে। ব্যঙ্গমী যেমন
    বুক চিরে রক্ত দেয়, চোখ ফোটায়, প্রায় মৃত ছানার শরীরে।

    ধীর পায়ে একটি দুটি শব্দ কাছে আসে।
    জন্ম নেয় রূপকথা, অন্তেবাসী ব্যাধের
    আবাসে।




    অলংকরণ (Artwork) : অলংকরণ - অনন্যা দাশ
  • এই লেখাটি পুরোনো ফরম্যাটে দেখুন
  • মন্তব্য জমা দিন / Make a comment
  • (?)
  • মন্তব্য পড়ুন / Read comments