নর্ডিক বসন্তে ফিনদেশে
এখনও রেখেছি প্রাণে
গুণে গেঁথে সাবধানে
এরকমই দুএকটা অলীক বিকেল।
হঠাৎই উদ্বেল হবে ন্যাড়ান্যাড়া ডালগুলো
আচমকা ভেসে যাবে সবুজের ষাঁড়াষাঁড়ি বানে,
বিস্ময়ের হঠাৎ প্লাবনে মন ভেসে যাবে
অনন্ত রাতের শেষে বসন্তের অন্তহীন দিনে।
এখন এখানে
ডানার ধাতব শব্দে আকাশ ভরিয়ে দিতে
অচেনা পাখীর ঝাঁক উড়ে যায় আমার দুপাশে,
উড়ে যায় আরেক আকাশে,
বুঝি আকাশ পেরিয়ে যায় তারা আজ
গুলিবিদ্ধ স্বাধীনতা পেতে।।
অধুনা বসন্ত দিনে দুর্নিবার রূপের রায়ট।
একটি রোবট তবু হেঁটে যাবে ব্যাকপ্যাকে অন্ধকার বয়ে।
কিছু বুঝি অভিমান বাকিটুকু নিদারুণ ঘৃণা
এখানে ছড়িয়ে যাবে নিরাসক্ত যান্ত্রিক মানব।।
এখন সমস্ত গান কেড়ে নিয়ে বয়ে যায় এলোমেলো হাওয়া।
চাও যদি ভুলো
যা তুমি রেখেছো প্রাণে, গুণে গেঁথে সাবধানে
অলীক বিকেল জুড়ে ভরে থাকা বসন্তের
স্নিগ্ধ স্মৃতিগুলো।।
সারিসেল্কা: ফিনল্যাণ্ড
একটি স্বপ্নের থেকে অন্যকোনো স্বপ্নের ভেতরে
ক্রমশ হারিয়ে যায় অনুগত শব্দরাশি গুলি;
শেষ কবিতাটি বুঝি লেখা হবে সুসংহত শব্দের শাসনে,
অসীম স্পর্ধায় তাকে কবিতার নৃপতিকে ভিক্ষা দিতে চেয়ে
স্বপ্ন থেকে স্বপ্নের ভেতরে আমি উড়ে গেছি ব্রুমস্টিকে ভেসে;
বাতাসে শাণিত শিস, কারা যেন অন্তরালে হাসে
উত্তর মেরুর কাছে সারিসেল্কা নগরীতে এরকমই নৃশংস সময়ে
আপাতত স্থাণু আমি পরাক্রান্ত কবিতার পরাজিত শবদেহ বয়ে।।
সারিসেল্কা শহরের নীলরঙা ম্যাজিক পাহাড়ে আমি যাবো আজ
কবিতার শবদেহ বয়ে;
স্বপ্ন কিংবা জাগরণে স্মৃতি কিংবা বিস্মৃতির মাঝে
সমস্ত শব্দের রেণু উড়ে যাবে স্বপ্নঘন নীল পাহাড়েতে।
হাতছানি দিয়ে ডাকে কবিতার নৃশংস ঘাতক
নতুন তুষারে শুধু আমার জুতোর ছাপে কবিতার প্রতিহিংসা আঁকা;
শব্দ নেই কোনো,
লাল কাঠবেড়ালীটা দেখেছে নির্বাক চোখে চেয়ে:
আধো স্বপ্ন জাগরণে সমস্ত কবিতা আমি হারিয়ে ফেলেছি।।
সবটুকু কলস্বর স্তব্ধ হোলে তবু জাগে আলোকিত অনুভূতিটুকু,
দুহাতে অঞ্জলি ভরে শুষে নেবো তাকে আমি এই স্বপ্নে ম্যাজিক পাহাড়ে,
সমস্ত শব্দেরা মৃত, সমস্ত কবিতা মৃত, এসব পেরিয়ে
অশরীরী সুর এক ঠিক দেখি জেগে ওঠে প্রাণে
রূপের বাহারে, জাগে কবিতার মতো;
তাকে ডেকে নেবো।
এখনও দাঁড়িয়ে আমি সারিসেল্কা শহরেতে, উত্তর মেরুর কাছে
নীলরঙা ম্যাজিক পাহাড়ে।।