• Parabaas
    Parabaas : পরবাস : বাংলা ভাষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতি
  • পরবাস | সংখ্যা ৪৮ | মে ২০১১ | প্রবন্ধ
    Share
  • ফিনল্যাণ্ডের চিঠি (অমিয় চক্রবর্তীর একটি অসংকলিত রচনা) : সুমিতা চক্রবর্তী



    ।। ফিনল্যাণ্ডের চিঠি ।।


    ..... উড়ো জাহাজ এইমাত্র ফিনল্যাণ্ডের ঘাটে এসে পৌঁছল। বাল্‌টিক[১] সাগরের জল রোদ্দুরে ঝলমল করছে, এখন সকাল আটটা। ওবো[২] - শহরে নেমেছি - ঘন্টা-কয়েক থাক্‌ব। তার পর ট্রেনে ক'রে হেলসিংফোরস্‌[৩] যাব। কি সুন্দর দেশ! হাওয়া আলো এখন ঠিক আমাদের দেশের মত - ঠিক রকমের ঠাণ্ডার স্পর্শ, আকাশ নির্মল-নীল। ট্রামে[৪] ক'রে শহরের বাগানে একটা কাফেতে এসে বসেছি - সাম্‌নে ছোট্ট অরা[৫] নদী, ছোট্ট ছোট্ট নৌকো, মোটর-বোট ভাস্‌ছে, ওপারে বাগানবাড়ী, এপারে ঘাসের তট, বাগানে ফুল ফুটেছে। এখনও কেউ আসে নি এই কাফেতে খেতে - ভাষা তো বোঝা অসাধ্য[৬], তাই হাত পা নেড়ে বোঝালাম, কফি আর প্রাতরাশ চাই। এখনই আনবে। তার পর ছোট্ট শহর ঘুরে দেখব। এখানকার বিশ্ববিদ্যালয় এবং বিদ্যার্থী-পরিষদে খবর দিয়েছে সুইডেন[৭] থেকে, তাদের প্রতিনিধি দুপুরবেলা আমাকে নিয়ে ঘুরবে, আতিথ্য দেবে।

    বহুকাল থেকে মনে স্বপ্ন ছিল ফিনল্যাণ্ড দেখব - এত দিনে সার্থক হ'ল। অরণ্য, হ্রদ এবং দ্বীপের এই দেশ - নানা জাতি নানা ভাষার আদিম মিশ্রণ এখানে, শীতকালে বরফে সমস্ত জীবন-সংসার বন্দী হয়ে থাকে, তখন ধূসর-শুভ্র মেরুর প্রকাশ পাইন-বন থেকে সমুদ্র পর্য্যন্ত। বাকী সময় প্রাণের উচ্ছ্বসিত প্রাচুর্য্য, গ্রামে শহরে নূতন কালের আনন্দিত আত্মপ্রকাশ। রাশিয়া এবং সুইডেনের দুই প্রান্ত এসে ঠেকেছে ফিনল্যাণ্ডের সীমানায়, এদের সভ্যতায় তার পরিচয়। অথচ ভাষায় ব্যবহারে শিল্পে এদের সম্পূর্ণ স্বাতন্ত্র্য এবং আধুনিক কালে এরা দ্রুত এগিয়ে গেছে। জীবনযাত্রার ব্যবস্থায় এরা কারও চেয়ে কম নয় - সুইডেনের মত এখানেও ইলেকট্রিসিটি যুগান্তর এনেছে; এদের মাছের ব্যবসা, কারুশিল্পের প্রচলন বিজ্ঞানকে ব্যবহারে লাগিয়েছে। হায় রে ভারতবর্ষ! এখনও দেশে বহু লোক ভাবছে বিদেশী তাড়িয়ে কোন মতে পাড়াগাঁর ডোবায়, মন্দিরে, ম্যালেরিয়ায় অভিভূত হয়ে থাকতে পারলেই মোক্ষলাভ হবে। বিদেশীর হাত হ'তে নিষ্কৃতি যে-প্রবল জাগ্রত বুদ্ধির যোগে সম্ভবপর হবে সেই বুদ্ধি জ্ঞান-বিজ্ঞানকে দূরে রাখে না, সে-বুদ্ধি পাণ্ডা পুরোহিতকে দূর ক'রে পঞ্জিকা পুড়িয়ে জ্ঞানের উন্নত গগনে নূতন কালে আপনাকে জানতে চায়। হয়ত সেই চেতনা আমাদের দেশে আজ সক্রিয় হয়ে উঠছে, কিন্তু দেশের কাগজে তার তেমন পরিচয় পাই না, দেশের সাহিত্যেও তার সহজ আগ্রহ দেখি না। ফিনল্যাণ্ডের সামান্য সাধারণ কাঠুরে বা মাঝি যে-স্বাধীনতাকে প্রাত্যহিক অভ্যাসে, চিন্তায় স্বীকার করতে চায়, আমাদের দেশী বহু নেতা বা শিষ্যদল তাকে অস্বীকার ক'রে চক্রান্ত এবং মিথ্যা আন্দোলনের যোগে রাষ্ট্রিক মুক্তি কামনা করছেন।

    জহরলালের[৮] মত মনস্বী নেতা দুর্লভ, আশা করা যায় তিনি কিছু পরিমাণে দেশের মন বদলাতে পারবেন। সুভাষ বাবুকে ত শাসনতন্ত্র বন্দী ক'রেই রাখ্‌ল ।[৯] বাংলা দেশে নূতন মননের নেতা আজ কোথায়? হয়ত কলেজ স্কোয়ারে বাংলার গ্রামের কোণায় এখানে-ওখানে তাঁরা জাগছেন - তাঁরা যেন ফিনল্যাণ্ডকে মনে রাখেন। অর্থাৎ আগামী ভারত-সভ্যতাকে নূতন যুগের চোখে, পৃথিবীর মানুষ জাতির আত্মীয় রূপে চেয়ে দেখেন। তবেই ভারতবর্ষ রাষ্ট্রে, লোক-ব্যবহারে, আধ্যাত্মিক সত্যবোধে জীবন-কর্মে মুক্ত হবে।

    আমার এই পশ্চিম-ভ্রমণ তীর্থযাত্রা হয়ে দাঁড়িয়েছে - তীর্থযাত্রা, কিন্তু আপন আত্মীয়মণ্ডলীর মহলে মহলে আনাগোনা। যে-অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করলাম তাতে জীবন সার্থক হ'ল, জানলাম, স্বীকার করলাম, মানুষের পৃথিবীতে এসে প্রাণকে ভালোবাসলাম। প্রাণের জয়গান শুন্‌লাম দ্বীপে দ্বীপে, বন্দরে বন্দরে, কত নিভৃত সুদূর লোকালয়ে। দুঃখ, অন্যায় অসত্যকে ছিন্ন ক'রে দেশে দেশে এই ওঙ্কার উঠেছে জীবনযাত্রার - কত সন্ধ্যায় কত লোকের বাড়ীতে, উৎসবে, নিভৃত আলাপে মনে মনে বলেছি এই তো পেয়েছি! আজ স্বদেশে ফেরার কালে ভাবছি, কি ভাবে দেশের আলোয় লোকালয়ে পুনর্মিলনের সুরে শুন্‌ব প্রাণের এই আহ্বান, প্রাণের এই স্বীকৃতি। আর কিছু নয়, জীবন থেকে বিদায় নেবার আগে দেশে শুনতে চাই সত্যের সুরে স্বাধীনতার সঙ্গীত, যেন দেখতে পাই এখনকার নবীন বাঙালীর জীবনে মানব-সংসারের বিশ্বভূমিকা।

    অনেক সময়েই ভিড়ের মধ্যে থাকি, হোটেলে, মিটিঙে নিমন্ত্রণ পর্বে, অল্প সময়ে অনেক কিছু কর্‌তে হয়, তাই হুড়োহুড়ি অনিবার্য্য। ..... সুইডেনে আশ্চর্য্য সমাদর পেয়েছি; হামবুর্গের[১০] প্রকাণ্ড কন্‌ফারেন্সের কাগজপত্র ছবি হয়ত এত দিনে পৌঁছেছে। কি বিরাট আয়োজন - একমাত্র জার্মান জাতিই এমন নিপুণ, সুন্দর ব্যবস্থা করতে পারে। জার্মানদের আধুনিক রাষ্ট্রিক ব্যবহারে বহু অন্যায় প্রবল হয়ে রয়েছে, কিন্তু ওদের ভিতরকার বীর্য্য মরে নি - কন্‌ফারেন্সের প্রতি পালায় তার পরিচয় পেয়েছি ওদের অকৃত্রিম সৌজন্যে, বুদ্ধির প্রসন্ন নির্মল প্রকাশে, জ্ঞানের গভীরতায়। সমস্ত শহর জুড়ে এই Welt Congress[১১]- এর উৎসব - সে যে কি প্রকাণ্ড ব্যাপার তা আরও বই ছবি যখন বেরবে তখন জানা যাবে।

    সময় পেলে উড়োপথের বিবরণ লিখব - আকাশযাত্রীর ভারতীয় চোখে পশ্চিমদেশ দর্শন। কি আরামে ঘুরেছিলাম কি বল্‌ব! এখন এই বাল্টিকের ছোট্ট জাহাজও বেশ লাগছে - এর কবিত্ব অন্য রকম। এক পৃথিবীর জীবনে কতখানি ধরে!


    প্রবন্ধ - পরিচিতি

    প্রবন্ধ : ফিনল্যাণ্ডের চিঠি


    অমিয় চক্রবর্তী (১৯০১-১৯৮৬) ছিলেন রবীন্দ্রনাথের বিশেষ ঘনিষ্ঠ অনুজ কবি। অনেকদিন - ১৯২৫ থেকে ১৯৩৩ পর্যন্ত কাজ করেছিলেন রবীন্দ্রনাথের সাহিত্য-সচিব রূপে। অমিয় চক্রবর্তী ১৯৩৩ সালে শান্তিনিকেতনে রবীন্দ্রনাথের সচিবের দায়িত্ব ছেড়ে অক্‌স্‌ফোর্ড-এ চলে যান ইংরেজি সাহিত্য বিষয়ে গবেষণা করবার জন্য। অক্‌স্‌ফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি বৃত্তি পেয়েছিলেন। প্রথম মহাযুদ্ধ-উত্তর ইউরোপীয় কবিতা নিয়ে গবেষণা করবার ইচ্ছা ছিল তাঁর। তিনি প্রখ্যাত অধ্যাপক ও সমালোচক ল্যাসেলেস অ্যাবারক্রম্‌বি (Lascelles Abercrombie, 1881-1938)-র তত্ত্বাবধানে কাজ শুরু করেন। তাঁর গবেষণার বিষয় ছিল টমাস হার্ডি (Thomas Hardy, 1840-1928) রচিত, নেপোলিয়ন-এর যুদ্ধ অবলম্বন করে লেখা কাব্যনাট্য 'দ্য ডাইনাস্ট্‌স্‌' (প্রথম খণ্ড ১৯০৪, দ্বিতীয় খণ্ড ১৯০৬, তৃতীয় খণ্ড ১৯০৮) এবং তার পরিপ্রেক্ষিতে মহাযুদ্ধোত্তর ইউরোপীয় কবিতার গতি-প্রকৃতি। গবেষণা-সন্দর্ভের শিরোনাম ছিল 'দ্য ডাইনাস্ট্‌স অ্যাণ্ড দ্য পোস্ট ওয়র এজ ইন পোয়েট্রি' (The Dynasts and the Post War Age in Poetry)। তাঁর গবেষণা সমাপ্ত হয় ১৯৩৭ সালে; ঐ সালেই মার্চ মাসে অমিয় চক্রবর্তী ডক্টরেট উপাধি অর্জন করেন।

    অক্‌স্‌ফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পূর্বোক্ত শিরোনামে তাঁর গ্রন্থ প্রকাশিত হয় ১৯৩৮ সালে।

    অমিয় চক্রবর্তী ১৯৩৩ থেকে ১৯৩৭ সাল পর্যন্ত টানা অক্‌স্‌ফোর্ড-এ ছিলেন। এই সময়ে তাঁর ভ্রামণিক বৃত্তি বিশেষভাবে সজীব ও সক্রিয় হয়ে উঠেছিল। ইউরোপের বিভিন্ন স্থানে প্রচুর ভ্রমণ করেছিলেন তিনি। তার কিছু কিছু উল্লেখ ও সংক্ষিপ্ত বিবরণ পাওয়া যাবে রবীন্দ্রনাথকে লেখা তাঁর বিভিন্ন চিঠিপত্রে (দ্রষ্টব্য 'কবির চিঠি কবিকে', ভূমিকা - টীকা-সম্পাদনা নরেশ গুহ, প্যাপিরাস, কলকাতা, ১৯৯৫)।

    জার্মানির হামবুর্গ শহরে ১৯৩৬ সালের ২৩ জুলাই থেকে ৩০ জুলাই একটি আন্তর্জাতিক আলোচনা-চক্র অনুষ্ঠিত হয়েছিল। আলোচনা-চক্রের বিষয় ছিল 'অবসর, সময় এবং সৃষ্টিমূলক উপভোগ' (Leisure, Time and Recreation)। অমিয় চক্রবর্তী সেই সম্মেলনে একটি প্রবন্ধ পাঠ করেন। প্রবন্ধটির নাম ছিল 'লিজার অ্যাণ্ড দি মডার্ন ইয়ুথ ইন্‌ দ্য ওয়েস্ট অ্যাণ্ড দ্য ইস্ট' (Leisure and the Modern Youth in the West and the East)। এই প্রবন্ধটি প্রকাশিত হয়েছিল 'বিশ্বভারতী কোয়ার্টারলি' পত্রিকার ১৯৩৬-৩৭ সালের নভেম্বর-জানুয়ারি সংখ্যায়। প্রবন্ধের সঙ্গে পাদটীকায় উল্লেখিত হয়েছিল হামবুর্গ-এর সম্মেলন ও তাতে অমিয় চক্রবর্তীর অংশ গ্রহণের কথা।

    এই আলোচনা-চক্রের শেষে অমিয় চক্রবর্তী এক দিনের জন্য বেড়াতে গিয়েছিলেন ফিনল্যাণ্ড। তারিখটি ছিল ৫ অগাস্ট ১৯৩৬। ঐ তারিখে লেখা চিঠিতে তিনি রবীন্দ্রনাথকে জানাচ্ছেন - "এখানে আমাদের Conference হয়ে গেল - আজ Finland -এ যাচ্চি, সেখান থেকে লিখব।" (কবির চিঠি কবিকে, ভূমিকা-টীকা-সম্পাদনা নরেশ গুহ, প্যাপিরাস, কলকাতা, ১৯৯৫, পৃ. ১৬৪)।

    সেই পর্যটনের সংক্ষিপ্ত এই বিবরণী প্রকাশিত হয়েছিল 'প্রবাসী' পত্রিকার কার্তিক ১৩৪৩ (১৯৩৬) সংখ্যায়। পত্র-রীতিতে রচিত এই বিবরণী। তবে লেখার ভঙ্গি থেকে মনে হয় কোনো বন্ধুকে প্রকৃতই পত্র লিখেছিলেন। ব্যক্তিগত সম্পর্কের একটা সুর আছে লেখাটির শেষের দিকে। পত্রিকায় প্রকাশকালে চিঠির প্রথমাংশ বর্জিত হয়েছিল বলে পত্রের প্রাপক কে তা নিঃসংশয়ে জানা যাচ্ছে না। রামানন্দ চট্টোপাধ্যায়ের পুত্র কেদারনাথ চট্টোপাধ্যায় হওয়া অসম্ভব নয়। কেদারনাথের সঙ্গে অমিয় চক্রবর্তীর বন্ধুত্বের সম্পর্ক ছিল। রবীন্দ্রনাথ যখন ১৯৩২ সালের এপ্রিল-মে মাসে ইরান ও ইরাক ভ্রমণে গিয়েছিলেন তখন প্রতিমা দেবী ছাড়া অমিয় চক্রবর্তী ও কেদারনাথ চট্টোপাধ্যায় ছিলেন তাঁর সঙ্গী। সংক্ষিপ্ত লেখাটিতে জার্মান, ফিনল্যাণ্ড ও ভারতের প্রসঙ্গ মিশে আছে। কোথাও এই লেখাটি সংকলিত হয়নি। অমিয় চক্রবর্তীর প্রবাসী কন্যা শ্রীমতী সেমন্তী ভট্টাচার্য পিতার যাবতীয় অসংকলিত রচনা ব্যবহার করবার অনুমতি আমাকে দিয়েছেন। তাঁকে কৃতজ্ঞতা জানাই।


    টীকা :


    (বড়ো করতে ক্লিক করুন)
    [১] বল্‌টিক (Baltic) - স্ক্যানডিনেভীয় পেনিনসুলা এবং ডেনমার্ক সংলগ্ন যে অঞ্চলটিতে আটলান্টিক মহাসাগরের একটি অংশ ঢুকে গেছে - সেই জলরাশিকেই বলে বলটিক সাগর। প্রকৃতপক্ষে এই বিশেষ অংশটিকে বলটিক সাগরের একটি শাখা (Archipelago sea) বলা যেতে পারে।


    (বড়ো করতে ক্লিক করুন)
    [২]ওবো - সুইডিশ ভাষায় Åbo, ইংরেজি উচ্চারণে ওবো (Obo), ফিনিশ-এ তুর্কু (Turku), - বলটিক সাগর সংলগ্ন, ফিনল্যাণ্ড-এর একটি ছোটো শহর। ফিনল্যাণ্ডের প্রাক্তন রাজধানী ও প্রাচীনতম শহর।


    [৩]হেলসিংফোর্‌স (Helsingfors) - ফিনল্যাণ্ডের বর্তমান রাজধানী হেলসিংকি (Helsinki)-র সুইডিশ নাম। এই ট্রেনটি এখনো চালু, খুবই সুবিধাজনক ও আরামদায়ক।


    (বড়ো করতে ক্লিক করুন)
    [৪] তুর্কুর শেষ ট্রামটি এখন একটি আইসক্রিমের দোকান। যদিও হেলসিংকিতে এখনো সাবেকি ও অতি আধুনিক, দু'রকম ট্রামই চলে।





    (বড়ো করতে ক্লিক করুন)
    [৫] অরা (Aura) নদী। ফিনিশ ভাষায় এর সম্পূর্ণ নাম Aurajoki. অরা নদী তুর্কুতে আর্কিপেলাগো সমুদ্রের সঙ্গে মিশেছে।






    [৬] এখন অবশ্য অধিকাংশ তরুণ-তরুণী ইংরেজিতে সাবলীল। ১৯৩৬ সালে অবস্থা অন্যরকম ছিল।


    (বড়ো করতে ক্লিক করুন)
    [৭] ইউনিভার্সিটি-টি সম্ভবত Åbo Akademi, সুইডেনের বাইরে একমাত্র এখানেই সুইডিশ ভাষায় স্নাতকস্তরের শিক্ষা দেওয়া হয়; হেলসিংকিতেও অবশ্য সুইডিশ-ভাষী একটি ছোট স্কুল অফ ইকনমিকস আছে।


    [৮] অমিয় চক্রবর্তীর সঙ্গে জওহরলাল নেহরুর সুসম্পর্ক ছিল ১৯৩০ সাল থেকেই। ক্রমে তা হৃদ্যতায় পরিণত হয়। স্বাধীন ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু-র সঙ্গে শেষ পর্যন্ত তাঁর প্রীতি-সম্পর্ক বজায় ছিল।

    [৯] অমিয় চক্রবর্তীর এই ভ্রমণ বিবরণীটি রচনাকালে সুভাষচন্দ্র কোনো স্বতন্ত্র রাজনৈতিক পদক্ষেপ গ্রহণ না করলেও কংগ্রেস দলের সংখ্যাগরিষ্ঠের সঙ্গে তাঁর অনুগত একটি গোষ্ঠীর মতপার্থক্য স্পষ্ট হয়ে উঠেছিল। কিছুকাল পরেই তিনি গান্ধীজি-র মনোনীত প্রার্থী পট্টভি সীতারামাইয়াকে পরাস্ত করে কংগ্রেস সভাপতি নির্বাচিত হন। তারপরে সে পদ তিনি ত্যাগ করেছিলেন (১৯৩৮)। সুভাষচন্দ্রের গতিবিধির উপর ব্রিটিশ সরকারের নজর ছিল। উদ্ধৃত বাক্যে এই ইঙ্গিতই আছে বলে মনে হয়। কংগ্রেসের নেতৃবৃন্দের অনেকের সঙ্গেই অমিয় চক্রবর্তীর পরিচয় ছিল। তিনি সুভাষচন্দ্রকে ১৯৩২ সাল থেকে চিনতেন। সুভাষচন্দ্র ১৯৩৩ সালে চিকিৎসার জন্যে ইউরোপে যান। জার্মানিতে থাকাকালীন ১৯৩৪ - ৩৫ এ তাঁর সঙ্গে অমিয় চক্রবর্তী-র পুনরায় সংযোগ স্থাপিত হয়।

    [১০]হামবুর্গ (Hamburg) - উত্তর জার্মানির এক প্রধান নগর ও বন্দর।

    [১১]Welt Congress - জার্মান ভাষায় 'ওয়েল্ট' (Welt) শব্দের অর্থ 'বিশ্ব' (World)। হামবুর্গ শহরে যে আন্তর্জাতিক বিশ্ব-সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল (দ্রষ্টব্য প্রবন্ধ-পরিচিতি অংশ) তার কথাই এখানে বলা হয়েছে।



    অলংকরণ (Artwork) : ফিনল্যাণ্ডের ছবিঃ নিরুপম চক্রবর্তী
  • এই লেখাটি পুরোনো ফরম্যাটে দেখুন
  • মন্তব্য জমা দিন / Make a comment
  • (?)
  • মন্তব্য পড়ুন / Read comments