হারিয়ে গেছে অনেক কিছুই হারিয়ে গেছে সব হারিয়ে গেছে কোথায় যেন ছোট্ট সে শৈশব । রামধনুটাও হারিয়ে গেছে কোথায় যেন দূরে ছেলেবেলার কী দুর্দশা স্বপ্ন ভেঙে-চুরে । আগেও যারা ছোট্ট ছিলো পুতুল খেলার দিনে ক্ষীরের পুতুল, বুড়ো-আংলা আনতো বাবা কিনে । ঠাক্মা-দাদুর ফোকলা গালে ধরতো না আর হাসি রাজপুত্তুর-রাজকন্যের গল্প রাশি রাশি । পাগলা দাশু, আবোল তাবোল অমল সুধার দল কল্প-রঙিন দিন-দুনিয়ার আজব জাদুর কল । পদি পিসীও বাক্স নিয়ে বর্মা মুলুক থেকে আনতো খুশি, মন ভোলানো খুশবু আতর মেখে । |
এখন যারা ভীষণ ছোটো তাদেরও শৈশব বন্দী দশায়, হাতছানি দেয় বিত্ত ও বৈভব । মাম্মি ভাবেন ডাক্তারিতে ড্যাডির ভীষণ শখ ইঞ্জিনীয়ার বনবে সোনা চলছে তারই মক্ । কে বুঝাবে একটু ওদের এখন কী তার চাই ! ছোট্টোবেলার মতন কি আর একটু কিছুই নাই ? নাই কি গো আর লাটাই-ঘুড়ি নাই কি গো আর মাঠ ? চাইলে কী আর মিলবে না কি নীল আকাশের পাঠ ! কম্পিউটার গেমের ভেতর স্বপ্নগুলো ঢুকে যন্ত্র-মুখীর যন্ত্রণাতে যাচ্ছে চুকে-বুকে । |
যাচ্ছে, তা-যাক চলছে চলুক এমনি করেই দিন কাটছে কাটুক, হাত গুটিয়ে-- সবাই দিশাহীন । আমরা আছি, তোমরা আছো একটু এসো ভাবি দিই ফিরিয়ে ওদের হাতে স্বপ্নপুরীর চাবি । আবার রাঙা সূয্যি উঠুক, সূয্যি বসুক পাটে জীবন-জোড়া সিলেবাসের সমগ্র এই পাঠে । |
(পরবাস-৪৬, সেপ্টেম্বর, ২০১০)