পুরনো বন্ধুর সঙ্গে সাক্ষাৎ হলেই উচ্ছ্বাস দেখাতে হবে কেন ------- তারও কোনও অর্থ পাই না । শিশু আর বৃদ্ধরা তো সবচেয়ে স্বার্থপর !
এই তো সেদিন স্কুলে যেতাম । এই তো । কবে ? কতদিন ? হিসেব করলে মনে হয় খুব শিগগির মরে যাব ।
একটা ছোট্ট টুসকির মতো জন্ম আর মৃত্যু...
ও চাঁদ বৃষ্টি ফুল পাখি শিশু গান এবং বৃদ্ধরা
আমার প্রাণের বন্ধুরা
তোমরা এভাবে আমাকে ডেকো না
খাওয়া-দাওয়া ? হরিমতি বস্তির কমলা এসে রাঁধে । আমার চেয়েও ঠিক সাড়ে তিন বছরের ছোট । নারায়ণ গাড়ি ধোয় । সাফসুতরো রাখে বাড়িঘর । কমলার চার মেয়ে রোগা ডিগডিগে । নারায়ণ ? আটটি পেটের ভার মাথার ওপর । অতএব, সংসার আমার, কে জানে কার মুখপানে চেয়ে রয় !
কমলা শুধোয়, সংসারে ঠাকুরের ছবি একটা নেই ? নারায়ণ মুখ ফুটে বলতে পারে না । নীরব সমর্থনে দাঁড়ায় কাছেই । যেন, জোট বেঁধে আসা দুই অধিকার সচেতন যুবা ------- সরাসরি ঈশ্বরের পক্ষ নিয়ে নেয় ।
রথের মেলার থেকে নারায়ণ এনে দিল নারায়ণী আঁকা ছবি পট । প্যাঁচার সাথেই তাঁর শ্রীমুখের মিল পাই বেশি । কীসের ঢিপিতে যেন বসে আছে প্যাঁচামুখো দেবী এলোকেশী ।
কমলা বলল, দিদি, শাঁখ তবে এনে দিও কিনে । সাঁঝবেলা আমিই বাজাব । নারায়ণ নিয়ে এল টবমঞ্চে তুলসীর চারা । গাছে রোজ জল দেয় বেচারা নিজেই । ওদেরই নিষেধ । মেয়েদের তুলসীকে জল দিতে নেই ।
সেই থেকে আমার কর্ডুরয় ট্রাউজারে পকেটে পকেটে ------- পটের অচলা লক্ষ্মী করেন বসত । পুণ্য হয় কার ? যে শাঁখ বাজায় ? নাকি যার শাঁখ বাজে, তার ?
(পরবাস-৪৬, সেপ্টেম্বর, ২০১০)