• Parabaas
    Parabaas : পরবাস : বাংলা ভাষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতি
  • পরবাস | সংখ্যা ৩৮ | জানুয়ারি ২০০৭ | গ্রম্থ-সমালোচনা
    Share
  • মণি নাগ-এর `সেক্স ওয়ার্কার্স অব ইণ্ডিয়া' : মীনাক্ষী দত্ত

    দলিত, আদিবাসী, নানান উপজাতির দু:খ বেদনা নিয়ে অনেক আলোচনা ও গবেষণা হয়েছে কিন্তু মানবসমাজে সবচেয়ে নির্যাতিত ও অপমানিত যে-অংশটি সে-বিষয়ে আমরা রয়েছি প্রায় নীরব । সভ্যতার ইতিহাসের আদিকাল থেকে এঁরা দিয়েছেন বিনোদন এবং সবচাইতে এয়েছেন ধিক্কৃত ও শোষিত । আমরা চেষ্টা করি এঁদের ভুলে থাকতে, ভান করি তাঁরা যেন নেই । যে পুরুষরা এঁদের উপভোগ করেন, তাঁরাই এঁদের নাম দিয়েছেন `পতিতা' অথচ `পতিতা' ছাড়া সভ্যতার চলে না, ঠিক যেমন বহুতল বাড়ির বেসমেন্ট থাকে তেমনি সভ্যতা যতোই উপরে উঠছে ততোই তার প্রয়োজন হচ্ছে তলায় একটি পতিত অংশের ।

    গত পনেরো বছর ধরে এই `পতিতা'দের নিয়ে কাজ করছেন ড: মণি নাগ । সম্প্রতি এই বিষয়ে তাঁর Sex Workers of India বইটি দিল্লির অ্যালাইড পাবলিশার্স প্রকাশ করেছেন ।

    ড: নাগকে নানাজনে নানাভাবে চেনেন । কেউ তাঁকে জানে এক নৃতত্ত্ববিদ রূপে যিনি নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে উপকূল বসবাসকারী নিয়ে কাজ করেছেন -- এরা অপেক্ষাকৃত সাম্প্রতিককালে মালয় দ্বীপপুঞ্জ থেকে এসেছেন সাগর পার হয়ে । কিছু সময় কাটিয়েছেন শম্পেন ও ওঙ্গিদের মাঝে । আবার, অর্ধেক গোলার্ধ পার হয়ে আমেরিকায় গবেষণা করেছেন গ্রাণ্ড ক্যানিয়নে সবচাইতে দুর্গম, আধুনিক-সভ্যতা বহির্ভূত জগতে আমেরিকান আদিবাসীদের (আগে যাদের বলা হলো রেড ইণ্ডিয়ান, এখন নেটিভ আমেরিকান) সঙ্গে থেকে তাদের জীবন ও সমাজ নিয়ে গবেষণা করেছেন । অনেকের কাছে তাঁর পরিচয় কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকরূপে, যেখানে তিনি ছিলেন মার্গারেট মীডের সহকর্মী ।

    আমি অবশ্য তাঁকে চিনি চল্লিশ বছরের বেশি । যখন তিনি কলকাতার সি,এম,পি,ও-র সঙ্গে বস্তি-উন্নয়ন নিয়ে কাজ করছিলেন তখন থেকে । ফোর্ড ফাউণ্ডেশনের সাহায্যপুষ্ট ছিলো সি,এম,পি,ও ; পরে নাম হয় সি, এম, ডি, এ -- ক্যালকাটা মেট্রোপলিটান প্ল্যানিং অরগানাইজেশন পরিকল্পনা পর্যায়ের কাজ শেষে হলো ক্যালকাটা মেট্রোপলিটান ডেভেলপমেন্ট অথরিটি । এখনকার ইস্টার্ন মেট্রোপলিটান বাইপাস, বর্ষাপ্লাবিত কলকাতার জল নিষ্কাশনের ব্যবস্থা--এসব পরিকল্পনা বাস্তবায়নের চেষ্টা হচ্ছিলো । বামপন্থীরা প্রথম থেকেই ঝামেলা করছিলেন, সরকারের কাছে পেশ করার সময় হলে তাঁরা খুবই সোরগোল তুললেন, `বস্তি উন্নয়ন নয় বস্তির বিলোপ চাই' বললেন । সি এম পি ও-র বিদেশী বিশেষজ্ঞদের মধ্যে একজন, কলিন রসার, আমার সাংবাদিক স্বামীর সাহায্য চেয়েছিলেন । পরপর দুটি দীর্ঘলেখা `বস্তি ইম্প্রুভমেন্ট বিল'-এর তাত্পর্য ব্যাখ্যা করে বেরুলো স্টেটসম্যান পত্রিকায় । বিলটি পাশ হলো । সেই থেকে আমাদের মণি নাগের সঙ্গে পরিচয় যা আজ এই প্রবাসে গভীর বন্ধুত্বে পরিণত হয়েছে ।

    সেইজন্য খুব কাছ থেকে দেখার সৌভাগ্য পেয়েছি যে গত দেড়-দশক ধরে মণি কীভাবে যৌনকর্মী ও প্রান্তিক যৌনতার বিবিধ প্রকাশ নিয়ে কাজ করে চেলেছেন -- সমকামী, পুরুষ যৌনকর্মী, হিজড়ে, নারীদেহে বন্দী পুরুষ বা পুরুষদেহে বন্দী নারী--সকলেই তাঁর গবেষণার অন্তর্ভুক্ত । এঁদের প্রতি সহমর্মিতাটাকে উনি প্রায় একটা অন্দোলনে পরিণত করেছেন । মূল স্রোতের এঁরা এতো কাছে, বস্তুত, অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত, মানবজীবনে এঁদের প্রচণ্ড প্রভাব--অথচ আমরা সচেতনভাবে এঁদের যথাসাধ্য এড়িয়ে চলি । এ বিষয়ে মণি নাগের বই ২০০৬ সালে প্রকাশিত হলো -- Sex Workers of India

    বাঙালি মধ্যবিত্ত সমাজের মেয়ে আমি, যতো আধুনিক পরিবারেই লালিত হই না কেন, জন্ম থেকে মনে ধারণা গেঁথে গেছে যে এই পেশা ঘৃণ্য, চূড়ান্ত অনৈতিক, তাছাড়া কিছুটা অকারণ ভীতিও আছে । আমার এই অজ্ঞানতার ও ভীতির উদাহরণস্বরূপ একটি ঘটনা বলছি ।

    আমাদের এক ইংরেজ বন্ধু আছে, ক্রিস্টেন ডি লিণ্ডে, সংক্ষেপে ক্রিস । ব্রিটিস কাউন্সিলের প্রধান ক্রিস যে-ক'বছর কলকাতায় ছিলো বাঙালি হয়ে গিয়েছিলো, বলা চলে বেশি বাঙালি । আমাদের বাড়ি বিনা নোটিসে একদিন চলে এসে পরিচয় করেছিলো বাংলায় এই বলে : `নমস্কার । আমার নাম কেষ্ট । আলাপ করতে এলাম ।' রাতে-বিরেতে ডিপ্লোম্যাটিক অনুষ্ঠানের শেষে ও নিজে গাড়ি চালিয়ে এসে আমাদের শোবার ঘরে আলো ফেলে ফেলে আমাদের ঘুম ভাঙিয়ে জোর করে তুলে নিয়ে যেতো । রাতের পর রাত আমরা ঘুরেছি । এমনই এক রাতের কলকাতা দর্শন অভিযানে হঠাৎ তার গাড়ি ক্রিস সোনাগাছিতে ঢুকিয়ে দিয়েছিলো । আমার বন্ধু রঞ্জনা (ক্রিসের অক্সফোর্ডের সহপাঠিনী) ও আমি দুজনেই আর্ত চিত্কার করে উঠলাম, তাতেও সে কথা না-শোনায় আমরা চলন্ত গাড়ি থেকেই দরজা খুলে নেমে যাবার উপক্রম করলাম ' তখন সে বাধ্য হয়ে গাড়ি ঘোরালো । ক্রিস অবাক হয়ে প্রশ্ন করেছিলো, `তোমরা অতো ভয় পেলে কেন ! আমরা তো এতোজন ছিলাম !' আমাদের মনে হয়েছিলো যা বলা বাহুল্য তা জানতে চেয়ে ক্রিস অন্যায় করেছে এবং প্রচণ্ড রেগে গিয়েছিলাম ।

    এর অনেকদিন পরে বম্বেতে সাংবাদিক সলিল ঘোষ নিয়ে গিয়েছিলেন সে শহরের বিখ্যাত রেড লাইট ডিস্ট্রিক্ট কামাতিপুরায় `কেজ' অর্থাৎ `খাঁচা' দেখাতে । মেয়েদের শিকের খাঁচার মধ্যে দাঁড়িয়ে বা বসে থাকতে দেখে অসুস্থ বোধ করেছিলাম । পরে তারই পাশে এক পথ-নাট্যশালায় সলিল নিয়ে গেলেন । সেখানে এক এক করে মেয়েরা মঞ্চে এসে নিজেদের প্রদর্শিত করছে, নাচছে, গাইছে, অনেকে বেশ ভালোই নাচে গায়, কেউ ধুপধাপ লাফায় । দর্শকেরা হুল্লোড় করছে, কেউ কেউ উঠে গিয়ে টাকা ছুঁড়ে দিচ্ছে পচান্দমতো মেয়েটিকে, তাকে যে ভাবে বলছে সে ভাবে টাকা তুলতে হবে । কখনো দাঁত দিয়ে, কখনো কুকুরের ভঙ্গিতে, অপমানের চূড়ান্ত । দর্শকরা অধিকাংশই যাঁদের আমরা বলি `দ্য লোয়ার ক্লাশ' । সলিলের স্ত্রী কানে কানে বললেন, `সম্ভবত আমার ড্রাইভারও এখানে আছে কোথাও' । দঙ্গল দঙ্গল পুরুষের মধ্যে মাত্র সলিলের স্ত্রী ও আমি দুজন মহিলা । অস্বস্তি হচ্ছে । তার উপর সলিল পকেট থেকে টাকা বার করে আমাদের বলছেন, `যাও, গিয়ে দিয়ে এসো' । মঞ্চের সামনে গিয়ে টাকা দিতে হবে, মেয়েটি টাকা নিয়ে উইঙসে বসা বয়স্ক এক মহিলাকে টাকাটা দেবে, তিনি সেটা গুনে গেঁথে হাতবাক্সে ভরবেন ।

    শান্তিনিকেতনের বিখ্যাত ঘোষ বংশোদ্ভূত, শান্তিদেব ও সাগরময়ের ভাই সলিল বম্বেতে বাংলার বেসরকারি রাষ্ট্রদূত । বাংলাদেশ সংকটে উনি একাই বম্বেতে এক কোটি টাকা তুলেছিলেন, বাংলাদেশের লোক হয়তো তা জানেন না । বলাই বাহুল্য, অত্যন্ত আধুনিক, উদার, সংবেদী ও আনন্দময় ব্যক্তিত্ব ।

    এই পেশার মেয়েদের ব্যাপারে এইটুকুই আমার অভিজ্ঞতা ছিলো । মণির কারণে গত কয় বছর আমি তাদের কাছ থেকে দেখেছি, কারু কারু সঙ্গে পরিচয় হয়েছে । বিশেষত, এই বইটি প্রকাশের সময় কলকাতার প্রেস ক্লাবের অনুষ্ঠানে আমি গিয়েছিলাম, বহু যৌনকর্মী এসেছিলেন, কেউ কেউ বক্তৃতাও দিয়েছিলেন । একজন আমাকে চা আর ফিশফ্রাই এনে দিয়ে বলেছিলেন, `খান, দিদি' ।

    যে যৌনকর্মীর বক্তৃতা দিয়ে সভার কাজ শুরু হয়েছিলো তিনি কলকাতার যৌনকর্মীদের স্বাধীকার লাভের পরীক্ষায় সবচেয়ে সফল, দুর্বার মহিলা সমন্বয় সমিতির সেক্রেটারি ।

    সেক্স ওয়ার্কার শব্দটি এখন আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত, বাংলায় যৌনকর্মী ।১৯৯৭ সালে নভেম্বর মাসে প্রথম জাতীয় কনফারেন্স হয় যৌনকর্মীদের । সারা ভারত থেকে ৪,০০০ ছাড়াও নেপাল, বাংলাদেশ, আমেরিকা, ইংলণ্ড থেকে যৌনকর্মীরা এসেছিলেন । এঁদের দাবী ছিলো শ্রমজীবী মানুষ হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়া, যে কোনো কায়িক শ্রমের মতোই এঁরা পয়সার বিনিময়ে শ্রমদান করেন, তাই শ্রমিকের দাবী ও যৌনকর্মী শব্দের ব্যবহার চাই ।

    ১৯৯২ সালে অল ইণ্ডিয়া ইনস্টিট্যুট অব হাইজিন অ্যাণ্ড পাবলিক হেল্থ ( AIIHPP ) স্থানীয় কিছু এন,জি,ও-র সহযোগিতায় ও WHO (ওয়ার্ল্ড হেল্থ অরগানাইজেশন) এবং NACO -র (ন্যাশনাল এইড্স কন্ট্রোল অরগানাইজেশন) পৃষ্ঠপোষকতায় সোনাগাছিতে STD (সেক্সুয়ালি ট্রান্সমিটেড ডিজিজেস) ও HIV -নিবারণ প্রোগ্রামের জন্য প্রজেক্ট শুরু হলো । AIIHPP -র এপিডিমেওলজির অধ্যাপক ড: স্মরজিৎ জানা নেতৃত্ব দেন । যৌনকর্মীদের সচেতনতার সেই শুরু । এঁরা বুঝতে পারেন যে সঙ্ঘবদ্ধ হতে হবে, পুলিশ, দালাল ও গুণ্ডাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে । প্রজেক্টের একটা কার্যক্রম হলো ক্লিনিক । যৌনকর্মীদের মধ্যে থেকেই কর্মী অথবা Peer educator নেওয়া হলো । এতে, ডাক্তার ও অন্যান্য স্টাফ মেম্বার এবং সমাজসেবীদের সঙ্গে সমকক্ষের মতো কাজ করে এঁদের আত্মমর্যাদাবোধো আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি পেলো । STD বা AIDS থেকে রক্ষা পেতে গেলে কনডমের ব্যবহার বাধ্যতামূলক করতে হবে । সে জন্য এঁরা চেষ্টা করতে লাগলেন । আগে একজন যৌনকর্মী কনডম ছাড়া খদ্দের নিতে রাজি না হলে বেশি টাকা দিয়ে লোকে অন্যের কাছে যেতো । এখন সেটা বন্ধ করার চেষ্টায় এঁরা সংগঠিত হচ্ছেন, যাতে কনডম ছাড়া খদ্দের নিলে বাধা সৃষ্টি করা যেতে পারে ।

    ১৯৯৮ সালের মার্চ মাসে এঁদের দ্বিতীয় কনফারেন্স হয়েছে কলকাতায় ।

    তৃতীয়টির নাম মিলেনিয়াম মেলা, ২০০১ সালে ।

    ড: নাগের মতে যৌনকর্মীরা খুব কম স্বেচ্ছায় এ পথে আসেন । বইটিতে বেশ কিছু মেয়ের জীবনকাহিনী আছে । কখনো প্রেমিক, কখনো স্বামী, কখনো সমাজ-শাসকেরা, কখনো এমনকী বাবা-মা এদের এই পেশায় ঠেলে দেয় । কখনো মেয়েরা বাড়ির অত্যাচারে পালিয়ে যায়, দালালের হাতে পড়ে । এটা তো আজকের কথা নয় । বইটিতে দেখছি ১৮৫১ সালের ১লা মে তারিখে কলকাতার `সংবাদ ভাস্কর' পত্রিকার উদ্ধৃতি । এই পত্রিকা ২৯ জন যৌনকর্মীর সাক্ষাত্কার নেয় । তার মধ্যে ৭ জন কুলীন ব্রাহ্মণকন্যা যাদের বিয়ে হয়নি, ৫ জন উচ্চবর্ণ কায়স্থ বিধবা । আরো পাই, ১৮৭৩ সালে ইংরেজ সরকারের কাছে বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের রিপোর্ট । তিনি বলছেন হিন্দু মেয়েদের, বিশেষত হিন্দু বিধবাদের জীবন এতো কষ্টকর, এতো নি:সঙ্গ ও অন্ত:পুরবন্দী তাঁরা, যে অনেক সময় বাধা নিষেধ সহ্যের সীমা অতিক্রম করায় কেউ কেউ বাড়ি থেকে পালিয়ে যেতে বাধ্য হন । কিন্তু একবার যাঁরা বেরিয়ে আসেন, তাঁরা আর কোনোদিন ফিরতে পারেন না ।

    অথচ কামসূত্রের যে উদ্ধৃতি আছে বইটিতে তাতে দেখছি গণিকাদের কাছে দাবী দাওয়ার শেষ নেই । বাত্সায়ন আদর্শ গণিকা বিষয়ে বলেছেন : `গণিকা হবে সুন্দরী, তরুণী, মঙ্গলচিহ্নযুক্ত, প্রণয়শীলা, মধুরস্বভাবা । সে হবে বুদ্ধিমতী, উন্নতচরিত্র, রুচিশীলা, সৎ । সে কখনো বিষণ্ণ হবে না আবার অট্টহাস্যও করবে না । পরনিন্দা পরচর্চা থেকে নিরত থাকবে, অশ্লীল, খারাপ শব্দ ব্যবহার করবে না, গালিগালাজ করবে না, লোভী হবে না, বিষাদগ্রস্থ হবে না আবার চপলস্বভাবাও হবে না' ।

    কামসূত্রে আরো বলা হয়েছে, `যখন যে পুরুষের সঙ্গে গণিকাটি থাকবে তখন সে যেন সেই পুরুষটির প্রতিটি ইচ্ছা, রুচি, অনুভূতি ও চরিত্র বুঝে সেইমতো চলে । সে এমন ভান করবে যেন ওই পুরুষটিই তার একমাত্র প্রেমিক ও প্রভু যদিও কোনো একজনের প্রতি আকৃষ্ট বা অনুরক্ত হবার স্বাধীনতা কোনো বেশ্যার নেই' ।

    প্রতি-তুলনায় ১৯১৭ সালে লেখা হ্যাভলক এলিসের Studies in Psychology of Sex -এর উদ্ধৃতি দিয়েছেন লেখক : 'She (a prostitute) is much more on level with people belonging to the professional classes, who accept fees in return for services rendered; the amount of fee varies on the one hand in accordance with professional standing, on the other hand in accordance with clients' means and under special circumstances may be graciously dispensed with altogether.'

    হ্যাভলক এলিস ছিলেন ইংরেজ ডাক্তার, (যদিও প্য্রাকটিস করেননি) ফেবিয়ান সোসাইটির অন্যতম প্রধান সদস্যদের একজন এবং জর্জ বার্নার্ড শ'-এর বন্ধু } যৌনতা বিষয়ে ওঁর অনেক থিওরি ফ্রয়েড গ্রহণ করেছিলেন । সমকামিতা নিয়ে প্রথম বৈজ্ঞানিক বই ওঁর লেখা, এটাকে তিনি অসুখ বা অপরাধ বলে মনে করেননি ।

    Sex Workers of India বইটি আমাকে বিশেষ সাহায্য করেছে মেয়েদের এক বিপুল অংশ বিষয়ে নতুন করে ভাবতে, তাঁদের কোনোভাবে সহায়তা করার জন্য আগ্রহী হতে । এর জন্য মণি নাগকে ধন্যবাদ । তাঁকে কিছু প্রশ্ন করেছিলাম `পরবাস' পত্রিকার হয়ে । নিচে সেই সাক্ষাত্কার দেওয়া হলো :

    পরবাস : Sex worker বা যৌনকর্মী শব্দটি তুমি ব্যবহার করেছো কেন ? তুমি কি মনে করো এতে কিছু তফাৎ হয় বা লাভ হয় ?

    মণি : অবশ্যই । নামে অনেক তফাৎ হয়ে যায় । এই শব্দটি এখন আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত, WHO এই নাম গ্রহণ করেছে । এতে এঁদের কর্মী হিসেবে চিহ্নিত করা হচ্ছে, শ্রমিক হিসেবে মেনে নেওয়া হচ্ছে ।

    পরবাস : সত্যি কি তুমি মনে করো যে এটা অন্যান্য শ্রমজীবীদের পেশার সঙ্গে তুলনীয় ? এটা একটা ইণ্ডাস্ট্রি, যেমন ফিল্ম, স্টিল অনৈতিক নয়, এটা একটা ব্যবসা -- disorganised, stigmatised --কিন্তু অনৈতিক নয় ?

    মণি : কীসের অনৈতিক ! সবই চলছে, শুধু টাকা দিয়ে সেক্স করাটাই অনৈতিক -- কেন ? অনেক বিয়েও তো এইরকম, টাকার জন্য বিয়ে । এটা একটা ব্যবসা, আমার আপত্তি ওই stigma টা নিয়ে । আমার মতে কোনো stigma থাকা উচিত নয় । পুরুষরা যা খুশি করতে পারে, মেয়েরা সেই স্বাধীনতা চাইতে পারে না কি ? It's upto her. শুধু একটাই সমস্যা, সন্তান হলে সমস্যা অবশ্যই ।

    পরবাস : তোমার উদ্দেশ্য কী ? কী করতে চাইছো ? কেন এতো সময় ও পরিশ্রম ব্যয় করছো এ-বিষয়ে গবেষণা করে, বই লিখে ?

    মণি : অ্যানথ্রপোলজিস্ট হিসেবে প্রান্তিক মানুষদের বিষয়ে আমার আগ্রহ । আমি উপজাতি, আদিবাসীদের নিয়ে কাজ করেছি । স্ট্রিট চিলড্রেন ও ভিখারিদের সার্ভে করেছি । কিন্তু যারা সবচাইতে অবহেলিত, সমাজের সবচাইতে অসহায় victim , তারা হলো যৌনকর্মী । লক্ষ লক্ষ মানুষ অসহনীয় অপমান ও কষ্টের মধ্যে জীবন যাপন করছে । সারা ভারতে ২০ থেকে ৩০ লক্ষ যৌনকর্মী আছে । তাদের নিয়ে কি কিছু করা উচিত নয় ? অন্তত সত্যটা তুলে ধরা ? মানুষদের তাদের বিষয়ে সচেতন করা ? এই যে তোমরা অন্তত এ নিয়ে আলোচনা করছো, তাতেই আমি খুশি । এদের তো সবাই অত্যাচার করছে -- পুলিশ, দালাল, গুণ্ডা । এদের সন্তানের কোনো শিক্ষাব্যবস্থা নেই, কোনো স্কুল এদের ছেলেমেয়েকে নিতে চায় না । এরা তো সত্যিই পাপী নয়, পতিতা নয়, এদের জন্য তো কেউ কিছু করছে না । তাই আমি এ কাজে আগ্রহ বোধ করলাম ।

    কিছুটা অবশ্য accidental । আমি দীর্ঘদিন পপুলেশন কাউন্সিলে কাজ করেছি । ফোর্ড ফাউণ্ডেশন আর জন্স্‌ হপ্কিন্স্‌ মেডিকেল সেন্টারের হয়ে গ্রামের মেয়েদের অসুখ নিয়ে প্রজেক্টে কাজ করছিলাম, তিনজন আমেরিকান গবেষকদের সঙ্গে অ্যানথ্রপোলজিস্ট হিসেবে । তার থেকে গেলাম এইড্সে, মেয়েদের মধ্যে এইড্স । ৯৬-সালে বই লিখলাম Sexual Behavious and AIDS in India । যৌনকর্মীদের মধ্যেই প্রথম এইড্স ধরা পড়ে । কিছু এন, জি, ও আমাদের সঙ্গে ছিলো, তবে ডকুমেন্ট করার মতো তেমন কাউকে পেলাম না । নানান ইনস্টিটুশন ঘুরে টাটা ইনস্টিটুট অব সোসাল সায়েন্স ও বরোদা ইউনিভার্সিটিতে গেলাম । ফোর্ড ফাউণ্ডেশন প্রচুর টাকা দিয়েছিলো । কলকাতার `চাইল্ড ইন নীড', গুজরাটের `সেবা রুরাল' খুব সাহায্য করেছে ।

    পরবাস : এই পেশাটা যদি একেবারে খোলাখুলি হয়ে যায় ? ধরো তোমার বাড়ির পাশের মহিলাটি যদি যৌনকর্মী হন ? তাহলে তোমার কেমন লাগবে ?

    মণি : সামাজিকভাবে সম্পূর্ণ গৃহীত না হলেও, সমাজ হয়তো সইয়ে নেবে । Acceptance না হলেও tolerance আসবে । মেয়েরা যদি সত্যি সত্যিই কোনোদিন পুরুষের সমকক্ষ হয় তবে এভাবে prostitution থাকবে না । নারী পুরুষে একটা তফাৎ তো থেকেই যায়, equal access to sex, economic power and choice --তফাৎ এখনো অনেক । এই পেশায় যারা আছে তারা আমার কাছে কোনো সমস্যা নয়, অন্তত ethically I have no problem । আমি ওদের entertainer মনে করি এবং আমি ওদের বন্ধু । আর প্রতিবেশী যদি আমাকে বা আমার আশেপ[শে কোনো বিরক্ত বা গোলমাল না করে তাহলে আমার কী ? যদি না চ্যাঁচামেচি হয় বা মাতাল না আসে তবেই হলো ।

    পরবাস : বেশ অনৈতিক নয় ? তাহলে তোমার নিজের মেয়ে যদি এ পেশায় আসতে চায় তখন তুমি কী বলবে ?

    মণি : আমি অবশ্যই তাকে লেখাপড়া শেষ করে alternative পেশার কথা চিন্তা করতে বলবো । সব দিক দেখে শুনেও যদি সে এই কষ্টকর পেশায় যেতে চায়, যাবে । আমি সেজন্য তাকে পরিত্যাগ করবো না । তবে জানো তো, নিজের ইচ্ছায় এ পেশায় খুব কম আসে । অনন্যোপায় হয়েই এরা এ-পথে আসে । একবার এলে তো আর ফিরতে পারে না । একবার এক মিটিঙে এক লেখিকা এদের অন্য পেশার চেষ্টা কেন করে না প্রশ্ন করেছিলেন । একটি মেয়ে উঠে দাঁড়িয়ে প্রশ্ন করেছিলো, `আপনি দেবেন আমাকে আপনার বাড়িতে কাজ ?' আমার বইতে অনেক মেয়ের কথা আছে যারা বাবুর বাড়িতে কাজ করতে গিয়ে তথাকথিত ভদ্রলোক মনিবের দ্বারা sexually harrassed হয়ে পালাতে বাধ্য হয়েছে । অল্পবয়সী মেয়েদের পক্ষে বাড়ির কাজ বেশ বিপজ্জনক ।

    আজকাল দেশে বিদেশে কলগার্লের খুব প্রচলন হয়েছে, বাড়তি রোজগারের জন্য অনেকে কলগার্ল হয় । খুব বাছাই করে লোক নেয় । আজকাল ফোন সেক্সের ব্যবসা জমজমাট, কোটি কোটি ডলার খাটে । অনেক মেয়েই সেটা করছে বাড়তি রোজগারের জন্য । কলকাতায় আগারওয়ালীরা উঁচুদরের যৌনকর্মী । এঁরা অবাঙালি, mostly accomplished muslims, বোধহয় আগ্রা থেকে এসেছেন ।

    পরবাস : জাপানে যেমন গিশা আছে -- আমাদের দেশে কি তেমন কিছু, মানে সামাজিকভাবে কিছুটা স্বীকৃত, কেউ আছে, ধরো বাঈজীরা ?

    মণি : আরে বাঈজীই বলো আর গিশাই বলো, ওই যতোদিন যৌবন আছে, কিছু রূপ আছে ততোদিন । তারপর ওই বেশ্যাবৃত্তি করেই চালাতে হয়, sexual entertainer । শরত্চন্দ্রের বইয়ে যাঁদের কথা পড়ি তাঁদের জীবনে দেখা যায় না ।

    পরবাস : তুমি তো পুরুষ যৌনকর্মীদের বিষয়েও লিখেছো । তাঁদের সংখ্যা কেমন ? কী ধরনের পুরুষ এ পেশায় আসেন ও কাদের জন্য ?

    মণি : হ্যাঁ, এদের কথা লিখেছি । এদের কাউকে কাউকে আমি চিনি, ইন্টারভিউ করেছি । এরা সংখ্যায় মেয়েদের চেয়ে অনেক কম । খুবই গোপনে এদের কাজ করতে হয়, প্রথমত homosexuality বিষয়ে stigma , দ্বিতীয়ত ইণ্ডিয়ান পেনাল কোদের ৩৭৭ ধারা অনুযায়ী anal sex বেআইনি (carnal intercourse against the order of nature) । মেয়েরা নয়, পুরুষরাই -- homosexual বা bisexual --এদের ব্যবহার করে । পয়সা দিয়ে যৌনকর্মী নেওয়ার ব্যাপারে মেয়েদের ইনহিবিশন খুব স্ট্রং । তবে একদম যে নেই তা নয়, উঁচু মহলে আছে । কলকাতায় প্রায় দু'হাজার পুরুষ যৌনকর্মী আছে । হিজড়েরাও যৌনকর্মীর কাজ করে সমকামীদের জন্য । একটি পুরুষ যৌনকর্মী আছে, বি,কম, পাশ, আমার কলকাতার বাড়িতে আসে, বেশ মার্জিত কথাবার্তা । সে এখন peer educator

    পরবাস : দূর্বার মহিলা সমন্বয় কমিটি বিষয়ে কিছু বলো ।

    মণি : ১৯৯৫ সালে DMSC শুরু হয় । ১৯৯২ সালে সোনাগাছি প্রজেক্টের বাইপ্রোডাক্ট হিসেবে যৌনকর্মীরা প্রজেক্টের স্টাফ মেম্বারদের সহায়তায় নিজেদের সংস্থা শুরু করে । প্রথমে সোনাগাছিতে, তারপর পশ্চিমবাংলার নানান অঞ্চলে । এই সংস্থা এদের সংগঠিত ও একতাবদ্ধ করেছে, নিজেদের উপর কিছুটা কর্ত্বত্বের ক্ষমতা দিয়েছে । তাদের প্রায় ৬০টি শাখা ও ৬০,০০০ সদস্য হয়েছে, এর মধ্যে কিছু পুরুষ কর্মী ও হিজড়েও আছে । এটা এদের অদ্ভুত সাহস ও শক্তি দিয়েছে । স্বাস্থ্য ও মানবিক অধিকার রক্ষা করার জন্য এরা একত্রে লড়াই করেছে ।

    একবার বইমেলায় যৌনকর্মীরা `গতর খাটিয়ে খাই/শ্রমিকের অধিকার চাই' শ্লোগান তুলে পুস্তিকা বিতরণ করেছিলো । আশা সাধুখাঁ নামে একটি যৌনকর্মী এতে নেতৃত্ব দিয়েছিলো । She was very courageous.. পুলিশ, গুণ্ডা, দালালের হাতে মার খেতেই এরা অভ্যস্ত ; এ ফিরে মারতে শুরু করে, নিজের জীবন বিপন্ন ক'রে । কলকাতার যৌনকর্মীরা সারা ভারত কেন, সারা পৃথিবীর সামনেই এক আদর্শ উপস্থিত করতে সক্ষম হয়েছে । এরা ঊষা মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ হাউসিং সোসাইটি নাম দিয়ে যে কো-অপারেটিভ করেছে তার এখন অ্যানুয়েল টার্নওভার ৯ কোটি টাকা, সারা পৃথিবীতে যৌনকর্মীদের বৃহত্তম কো-অপারেটিভ সোসাইটি । সদস্যদের দৈনিক অন্তত পাঁচটাকা বা মাসিক ১০০ টাকা দিতে হয় । এদের কালচারাল উইংও আছে, তাতে নাচ-গান-নাটক হয় । যৌনকর্মীদের কনফারেন্সে তারা নাটক করেছে । জেনিভার দ্বাদশ এইড্স কনফারেন্সে কোমলগান্ধার `শান্তি' নামে নৃত্যনাট্য করে নাম করেছে । এদের এডুকেশনাল প্রোগ্রাম আছে, টেলিফোন কাউন্সেলিং আছে--অনেক কিছু এরা করেছে ।

    Sex Workers of India বইটিতে তত্ত্ব নেই, উপদেশ নেই, সমালোচনা নেই ; তথ্য আছে, সংখ্যা আছে, পরিসংখ্যান আছে । ওই মেয়েদের প্রতি (এবং পুরুষদের প্রতি) লেখকের সহানুভূতি ও বন্ধুভাবের কোনো প্রকাশ নেই, শুধু এক জায়গায় লিখছেন : তাঁর সহজ ও সহানুভূতিপূর্ণ ব্যবহারে তাদের (যৌনকর্মী) বিস্ময়ের অবধি ছিলো না-- 'they continued to be amazed' । এখন কিন্তু মণি তাদের বড়ো ভাই-এর আসনে । তাঁর স্ত্রী করবী এবং তিনি একবার যৌনকর্মীদের মিছিল দেখবার জন্য গিয়েছিলেন, হঠাৎ একটি মেয়ে গাড়ির জানালা দিয়ে তাঁকে দেখে `দাদা এসেছে', `দাদা এসেছে' আওয়াজ তোলে । তারা তাঁকে গাড়ি থেকে নামিয়ে মিছিলে সামিল করে নেয় ।

    কলকাতায় দূর্বার সমিতির এক নেত্রীর সঙ্গে মণি একবার আমার আলাপ করিয়ে দিলেন । মেয়েটি আমাকে তার ইউনিক ভাষায় বললো, `দাদা এক পিস মাল', অর্থাৎ দাদা একজনই, অনন্য, আর কেউ এমনটি নেই । এরপর যখন সে দাদার কন্ঠলগ্ন হয়ে ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়ে তাদের ছবি তোলার হুকুম জারি করলো, তখন এমনকি মণিও একটু অস্বস্তিতে পড়লেন এবং কাতর ভাবে আমাকে ডাকলেন তাদের সঙ্গে ছবিতে যোগ দিতে । মেয়েরা সব ঘাড় হেলিয়ে হেলিয়ে হাসছে দাদার দুরবস্থা দেখে । আমি বললাম, `কেন, তোলো না ছবি' । মণি বললেন, `না না, এসো তো ! করবী আবার কী ভেবে বসবে' । টাটা ইনস্টিট্যুট অব সোসাল সায়েন্স থেকে পাশ করা, নিউ ইয়র্কের বিখ্যাত হাসপাতাল কলাম্বিয়া প্রেসবাইটেরিয়ানের সোসাল ওয়ার্কার করবী নিশ্চয়ই কিছু মনে করতেন না, কারণ এইসব মেয়েরা তাঁদের কলকাতার বাড়িতে আসেন, মণি তাঁদের খেতে ডাকেন ও তাদের নানা সভাসমিতি বা অনুষ্ঠানে সস্ত্রীক ও সবান্ধবে উপস্থিত থাকেন । আমার মতো অনেককেই তিনি বাধ্য করেন যেতে ।

    তাঁর কলকাতার বাড়িতে এমনই এক টিপার্টিতে তিনি লেখক সমরেশ মজুমদারকে ডেকেছিলেন । সমরেশ আমাকে বলেছেন যে তিনি যুগপৎ বিস্মিত ও আনন্দিত হয়েছিলেন ওই সব মেয়ের `সুরুচিপূর্ণ কলেজের মেয়েদের মতো সাজ' ও স্বচ্ছন্দ, স্বাভাবিক ব্যবহার দেখে । রবিবারের আনন্দবাজারের পাতায় এই নিয়ে একটি বড়ো লেখা সমরেশ লেখেন ।

    সমরেশের একটি উপন্যাস আছে এক যৌনকর্মীকে নিয়ে, যে বিদেশে যায় কনফারেন্সে যোগ দিতে, অনেক exposure পায় কিন্তু শেষমেষ তার জীবনে কোনো আলো ঢোকে না, যে অন্ধকার সে অন্ধকারেই থেকে যায় । মণির ইচ্ছে উনি আর একটি উপন্যাস লিখুন যাতে মেয়েটি অন্ধকার পেরিয়ে আলোয় আসবে, জীবনযুদ্ধে জয়ী হবে ।

    মানুষ হিসেবে, শ্রমিক হিসেবে স্বীকৃতির লড়াই দীর্ঘ, হাজার হাজার বছরের অন্যায় একদিনে কি একটি দুটি বইয়ে শেষ হবার নয় । কিন্তু পরিবর্তনের সবচেয়ে বড়ো অস্ত্র বই । বই আমাদের চিন্তার, চেতনার বদল আনে, আর সামাজিক পরিবর্তন তো আসে চেতনার পরিবর্তন থেকেই । আমাদের চেতনার পরিবর্তন আনতে এ বইটিও তেমনই সাহায্য করবে, যেমন করেছিলো ১৯১৭ সালে লেখা হ্যাভলক এলিসের Studies in Psychology of Sex








    (পরবাস-৩৮; ডিসেম্বর, ২০০৬)

  • এই লেখাটি পুরোনো ফরম্যাটে দেখুন
  • মন্তব্য জমা দিন / Make a comment
  • (?)
  • মন্তব্য পড়ুন / Read comments