• Parabaas
    Parabaas : পরবাস : বাংলা ভাষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতি
  • পরবাস | সংখ্যা ৯২ | অক্টোবর ২০২৩ | নাটক
    Share
  • দংশন : কৌশিক সেন





    আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের একটি শহরের পটভূমিকায় পাঁচ অঙ্কের নাটক

    পাত্রপাত্রী

    রথীন বসু (প্রধান চরিত্র)
    অঙ্গনা বসু (রথীনের স্ত্রী)
    সুজিত চৌধুরী (রথীনের বন্ধু)
    নীপা চৌধুরী (সুজিতের স্ত্রী)
    ইসাবেলা চাভেজ (আগন্তুক মহিলা)
    মাইক (রাস্তের গুণ্ডা)
    জিম (রাস্তার গুণ্ডা)
    বেলি (রথীনের ছোটবেলায় দেখা আদিবাসী মহিলা)
    জমিদার (রথীনের ঠাকুর্দা)
    গুণীন (পুরুলিয়ার গ্রাম্য ওঝা)
    কিশোর রথীন




    (সাইকিয়াট্রিস্ট ডঃ মেহতার চেম্বার। রথীন ও ডঃ মেহতা)

    Dr. Mehta: Good afternoon Mr. Basu. Tell me about last week

    রথীন: No change doctor. The same bloody nightmares. মাঝরাত্রে ঘুম ভেঙ্গে যাচ্ছে, সারা গা তখন ঘামে ভেজা, হাত পায়ে, চোয়ালে অসহ্য যন্ত্রণা।

    Dr. Mehta: Your muscles are going into spasm during nightmares. ওষুধগুলো ঠিক মতন খাচ্ছেন? জাদা ড্রিঙ্ক করছেন না তো?

    রথীন: Sorry Doctor, মদ না খেলে আমি এক ঘন্টাও ঘুমোতে পারব না। আমি পরিষ্কার বুঝতে পারছি আমার চারপাশের লোকজন বদলে যাচ্ছে, বিশেষ করে আমার স্ত্রী। She is becoming different. I mean becoming evil!

    Dr. Mehta: Mr. Basu let us revisit your dream. আপনার ছোটবেলার একটা ঘটনা, you pretty much forgot the incidence, until-

    রথীন: Until that witch showed up in our lives. তার আগে তো আমি ভালোই ছিলাম। সুখী ছিলাম, আমি আর অঙ্গনা। আমি টাকা রোজগার করি, ও সংসার সামলায়। আমাদের সেই ছবির মতন সংসার... (দুই হাতে মুখ ঢাকে)

    Dr. Mehta: Please don’t be so upset Mr. Basu. I think you need some psychoanalytic therapy rather than medications. আচ্ছা আপনি রিলাক্স করে বসুন, আঁখ বন্ধ করে try to go back to your childhood experience. যা মনে আসে বলে যান, কিছু লুকাবেন না।

    রথীন: আমাদের আদি বাড়ি ছিল পুরুলিয়ায়। আমার দাদু ছিলেন এস্টেটের শেষ জমিদার, উনি মারা যাবার পরে বাবা সবকিছু বিক্রি করে কলকাতায় সেটল করেন। That was the last day I saw my grandfather. আমার বয়েস তখন আট বছর। পুজোর ছুটিতে আমরা দেশের বাড়ি যেতাম।

    (মঞ্চ অন্ধকার হয়ে আসবে। আলো ফুটলে দেখা যাবে পঁচিশ বছর আগে পুরুলিয়া গ্রামে কিশোর রথীনের অভিজ্ঞতা। হাত-পা বাঁধা এক আদিবাসী মেয়ের সামনে রথীনের জমিদার দাদামশায় এবং এলাকার গুনিন)

    জমিদার: কি রে বেলি, কেমন লাগছে এখন?

    গুণীন: কর্তাবাবু, একটু সাবধানে। মেয়েটার লক্ষণ কিন্তু খুব খারাপ!

    জমিদার: কি বলছিস? এই সব ছোটলোকের দল আস্কারা পেয়ে ধরাকে সরা দেখছে। এত সাহস যে আমার নামে নালিশ করতে যায়!

    গুণীন: কর্তা, ওর ঘাড়ের পিছনে ওই উল্কিটা দেখছেন? আর ওই দাঁতগুলোর দিকে একবার তাকিয়ে দেখুন! দোহাই বলছি এই মেয়েকে বিছানায় নেবেন না কর্তাবাবু। সর্বনাশ হয়ে যাবে।

    জমিদার: তাই নাকি? যত্তসব গেঁয়ো গপ্পোগুজব তোদের। দেখি তো কি রকম দাঁত। (চুল ধরে মেয়েটিকে টেনে আনে, মেয়েটি নিঃশব্দে দাঁত দেখায়)

    গুণীন: অত কাছে যাবেন না কর্তা!

    জমিদার: কি, কি ভেবেছিস? যখন তখন আসবি, পেট ভরে খাবি, তারপর ফুড়ুৎ করে উড়ে যাবি হ্যাঁ? চল আজ দেখি কোন পার্টি তোকে বাঁচায়।

    বেলি: তুই মরবি! মরবি! (দাঁত দেখায়, অদ্ভুতভাবে হাসে)

    গুণীন: কর্তা, সাবধান!

    জমিদার: কেন রে, কামড়ে দিবি নাকি। পাগলি কুত্তী কোথাকার! দেখি দেখি, আর কোথায় কোথায় উল্কি আছে তোর?

    (বেলি জমিদারের ঘাড়ে দাঁত বসিয়ে দেয়। কিশোর রথীন ছুটে আসে)

    রথীন: ছেড়ে দাও। আমার দাদুকে ছেড়ে দাও!

    (বেলি জমিদারের ঘাড় থেকে দাঁত তুলে নেয়, রথীনের দিকে তাকিয়ে খিলখিল করে হাসে। জমিদার গড়িয়ে পড়ে যায়)

    রথীন: দাদু!

    (গুণীন বেলির দিকে কিছু একটা ছুঁড়ে দেয়। বেলি চিৎকার করে পিছু হটে। গুণীন রথীনকে টেনে নিয়ে বেরিয়ে যায়। মঞ্চ আবার অন্ধকার হয়ে যায়। আলো ফুটলে দেখা যাবে ডঃ মেহতা রথীনকে এক গ্লাস জল দিচ্ছেন। রথীন হাঁপাচ্ছে)

    রথীন: পরের দিন দাদু মারা গেলেন। ডাক্তার বললো স্ট্রোক, কামড়ের জন্য ক্যারোটিড আর্টারি ড্যামেজ। বাবা-মা আমাকে নিয়ে কলকাতায় ফিরে এলেন। মেয়েটার কি হল জানি না।

    Dr. Mehta: A very traumatic event indeed. Calm down Mr. Basu, you are in a safe space. Let us now explore the day that started the recent crisis. তো অব বতাইয়ে কি হয়েছিলো সেদিন?

    রথীন: দিনটা শুরু হয়েছিল ভালোই। আমি অঙ্গনা, আমাদের বন্ধু সুজিত আর নীপা, সবাই মিলে ছুটিতে গেছিলাম। পাহাড়ের ওপরে একটা সুন্দর লগ কেবিন। সন্ধ্যাবেলা থেকে বৃষ্টি শুরু হলো, তারপর হঠাৎ করেই ঝড় আর শিলাবৃষ্টি। ফোরকাস্টে কিন্তু এতটা ছিল না-




    (পাহাড়ের ওপরে একটি লগ কেবিন। রথীন, অঙ্গনা, সুজিত ও নীপা একসঙ্গে উইকএন্ড কাটাতে এসেছে)

    রথীন: আরে কি বিচ্ছিরি ওয়েদার এসে গেল বলতো। ভাবলাম বাইরে গ্রিল করবো--

    সুজিত: আরে গ্রিল নাই বা হলো। ফ্রিজ ভর্তি বিরিয়ানি, তন্দুরি চিকেন আর নীপার সিগনেচার ডেসার্ট- স্ট্রবেরি শর্ট কেক।

    অঙ্গনা: কেন আমার তো বেশ লাগছে। পাহাড়ে বৃষ্টি আর হাওয়ার শব্দ, কেমন যেন একটা গা ছমছমে রোম্যান্টিক পরিবেশ (গেয়ে ওঠে) পাগলা হাওয়ার বাদল দিনে।

    নীপা: পাগল আমার মন জেগে ওঠে। চেনাশোনার কোন বাইরে, যেইখানে পথ নাই নাইরে ...

    অঙ্গনা ও নীপা (একসঙ্গে): সেইখানে অকারণে যায় ছুটে।

    সুজিত: বা, বা দারুণ হচ্ছে, চালিয়ে যাও।

    (বাজের আওয়াজ)

    রথীন: আমার কিন্তু একটুও ভালো লাগছে না। এই ওয়েদারে একটাই কাজ করার আছে (হুইস্কির বোতল বার করে গ্লাসে ঢালে) কি ব্যাপার মহিলামহল কি বলছে? যদি হুইস্কি পছন্দ না হয় তাহলে আমার কাছে অন্য জিনিষও আছে। জিন, ভডকা, টেকিলা, কি চাই বল?

    অঙ্গনা: ওঃ রথী, তুমি না আমাদের মুডটাই নষ্ট করে দিলে। আচ্ছা মদ না খেয়ে বুঝি কিছু এনজয় করা যায় না। ওই শোনো, বৃষ্টির শব্দটা কেমন বদলে যাচ্ছে। যেন আকাশ জুড়ে তবলা বাজাচ্ছে কেউ। দাদরার ছন্দ।

    সুজিত: শিলাবৃষ্টির শব্দ। সত্যিই তো ওয়েদার ফোরকাস্টে এরকম কিছু তো দেখিনি। আচ্ছা ঠান্ডা লাগছে না তোমাদের কারো? এই মে মাসে এরকম ঠান্ডা তো হয় না।

    নীপা: চলো না ভূতের গল্প করি। মানে তোমাদের কি কোন পার্সোন্যাল অভিজ্ঞতা আছে। না থাকলে পরোয়া নেই, এক রাউন্ড হরর মুভি দেখলেও হয়!

    রথীন: নীপা, প্লীজ এসব জিনিষ এতো লাইটলি নিও না। অ্যাট লিস্ট এখানে নয়। শহরে ফিরে প্যারানর্ম্যাল নিয়ে গপ্পগাছা করার সময় পাবে অনেক। এই পাহাড় আর এই ঝোড়ো হাওয়া, এরা আসলে জীবন্ত, এদের চোখ আর কান আছে, ওরা সব শুনতে পায়।

    সুজিত: বাপ রে তুই তো সিরিয়াস কথাবার্তা বলছিস। আমরা ভাট বকছি, বুঝতে পারছিস না?



    (আলো দপদপ করে। দরজা ধাক্কানোর আওয়াজ শোনা যায়)

    নীপা: কিসের শব্দ। কেউ যেন দরজা ধাক্কাচ্ছে!

    সুজিত: আরে কিছু না, ঝড়ের শব্দ। এটা প্রাইভেট প্রপার্টি, আমাদের ভাড়া দিয়েছে, রাতদুপুরে কারো ট্রেসপাস করার প্রশ্নই আসে না।

    (দরজায় আবার ধাক্কা)

    অঙ্গনা: মনে হচ্ছে কেউ একটা বিপদে পড়েছে। দাঁড়াও আমি দেখছি!

    রথীন: না না, যেয়ো না, আজেবাজে লোক হতে পারে।

    নীপা: ভালুকটালুকও হতে পারে।

    অঙ্গনা: আরে না না মনে হচ্ছে একটা গলা পাচ্ছি। মেয়ের গলা!

    (আলো কমে যায়। ঝড়ের শব্দ বাড়ে। বাইরে থেকে একটা ক্ষীণ চিৎকার ভেসে আসে - help me. Please open the door. ফায়ারপ্লেসের কাঁপা কাঁপা আলোয় পরিবেশ আরও অদ্ভুত হয়ে ওঠে)

    রথীন: একি? আলো নিভে গেল কি করে?

    সুজিত: ব্যাস, এই নাও, ঝড়ের ধাক্কায় পাওয়ার চলে গেছে। অন্ধকারে আর কিছুই করার নেই, সুতরাং মাল খেয়ে রাত্তিরের মতন বডি ফেলে দাও, কাল সকালে উঠে দেখা যাবে।

    রথীন: হয়ে গেল। এর মধ্যে পাওয়ার লস। সোনায় সোহাগা!

    নীপা: তার মানে ইন্টারনেট নেই। এই পাহাড়ের ওপর ফোন সিগন্যালও নেই।

    রথীন: অঙ্গনা, এর মধ্যে দরজা খুলতে যেয়ো না প্লীজ। আমি কিন্তু কিছু শুনতে পাইনি। তোরা পেয়েছিস?

    নীপা: মনে হল একটা কি শুনলাম।

    সুজিত: হ্যাঁ আমারও মনে হল।

    অঙ্গনা: আমি কিন্তু শিওর যে আমি একটা মেয়ের গলা শুনেছি। আচ্ছা তোমরা কি বলতো? এই ঝড়ের মধ্যে একটা মেয়ে বিপদে পড়েছে, কোথায় সাহায্য করবে, না যত্তোসব!

    সুজিত: দাঁড়াও আমি দেখছি। (দরজার দিকে এগোয়, আবার ফিরে আসে) বাপরে, কী-হোল দিয়ে বাইরে কিচ্ছু দেখা যাচ্ছে না, একেবারে ঘুটঘুট্টি অন্ধকার।

    অঙ্গনা: তাহলে কি ভূতে দরজা ধাক্কাছে। সরো-

    (দরজা খোলে। বাইরে একটি মেয়ে দাঁড়িয়ে আছে। মেয়েটি আহত, ঠান্ডায় কাঁপছে, কপাল বেয়ে রক্ত গড়িয়ে পড়ছে। অঙ্গনা ওকে ভেতরে ঢুকিয়ে দরজা বন্ধ করে দেয়।)

    রথীন: এ কি? এ কোথা থেকে এলো। অঙ্গনা তুমি ঠিক আছো?

    (অঙ্গনা মেয়েটিকে সোফায় শুইয়ে দেয়)

    অঙ্গনা: চেঁচিয়ো না, আমি ঠিক আছি, কিন্তু এই মেয়েটির ইনজুরি হয়েছে মনে হচ্ছে। ইস, বেচারা শুধু শুধু এতক্ষণ বাইরে দাঁড়িয়ে ভিজলো। নীপা শিগগিরি দ্যাখ…

    Isabella: Hi, I am Isabella. Thank you all so much for letting me in. My car got completely wrecked. There was a tree on the road. Sorry to barge in like this!

    (নীপা তাড়াতাড়ি এগিয়ে যায়)

    নীপা: Please don’t worry Isabella, you are safe now. I am a nurse, please let me see your wounds. Sujit get me some towels and check if there is ice in the fridge and Rathi-da hand me over that bottle of whisky please so I can wash her wounds.

    রথীন: মানে জল দিয়ে হবে না? আচ্ছা এই নাও। সুজিত দেখ দেখি বরফ পাস কিনা, আমি দেখছি ব্যাগে ওষুধপত্র কি আছে।

    (রথীন ছাড়া বাকি সবাই ইজাবেলার শুশ্রূষায় অংশ নেয়)

    নীপা: নাঃ, মনে হচ্ছে জাস্ট কাটস অ্যানড ব্রুজেস, হাড়গোড় কিছু ভাঙেনি।

    অঙ্গনা: Relax Isabella, you are in good hands. Let’s give you some food and a change for night. You need to rest.

    ইসাবেলা- You are all so kind, how can I thank you enough. By the way, my friends call me Bella.

    (রথীন ছাড়া সবাই নিজের নাম বলে। মেয়েরা বেরিয়ে যায়)

    সুজিত: কি রে তুই এরকম স্ট্যাচু বনে গেলি কেন? খেপেছিস মনে হচ্ছে। আরে, আমরা মাল খেয়েছি, অনু খায়নি বলে দরজায় আওয়াজটা বেটার শুনতে পেয়েছে, তাতে হলটা কি?

    রথীন: যা বুঝিস না তা নিয়ে কথা বলতে যাস না! সাহস? নিকুচি করেছে সাহসের। একে এই অবস্থা তার মধ্যে আরেকটা হাঙ্গামা এনে হাজির করলো। যতো সব গোঁয়ার্তুমি!

    সুজিত: কি বলছিস কি তুই। একটা মেয়ে ইনজিওরড হয়েছে, ঝড়বৃষ্টির মধ্যে বিপদে পড়েছে, তাকে হেল্প করতে যাওয়াটা গোয়ার্তুমি? হাঙ্গামা! মাই গড রথী!

    রথীন: বাঃ, তুই তো ব্যাপারটা একেবারে জলের মতন বুঝে ফেলেছিস। গাড়ি রেক হওয়ার গল্প বললো আর তোরা সোনামুখ করে শুনলি। ও পুলিশ ডাকার বদলে এতটা রাস্তা চড়াই ভেঙে অচেনা বাড়ির দরজা ধাক্কাতে শুরু করলো কেন, সেটা জানার দরকার নেই। ও মেয়ে যে কাউকে খুন করে আসেনি, তার প্রমাণ কি? যদি ওর পিছু পিছু অন্য লোকজন এসে হাজির হয় তাহলেই বা কি হবে? আচ্ছা মেয়েটাকে দেখেও তোর কিচ্ছু অ্যাবনর্মাল মনে হলো না? ওই রকম অদ্ভুত পোশাকআশাক, মেকআপ, ওই নাক, কান ফোঁড়ানো আর ওইসব ট্যাটু-

    সুজিত: ট্যাটু?! ট্যাটু মানে...

    রথীন: বল, দেখিসনি? ঘাড়ের পিছনে উল্কি, দেখতে অনেকটা পাখা মেলা বাদুড়ের মতন, হাতের ওপরে আরেকটা--

    (নীপা ঘরে ঢুকতে ঢুকতে রথীনের কথা শুনে হেসে ওঠে)

    নীপা: কি বললে? বাদুড়ের মতন। আরে ওটা একটা অর্কিড, খুব সুন্দর দেখতে। আচ্ছা রথীদা, তুমি কি খুব হরর মুভি দেখো? এটা তো আমাদের জানা ছিলো না!

    রথীন: আমি কিন্তু এর মধ্যে হাসির কিছু পাচ্ছি না। এনিওয়ে এখন শোবার ব্যবস্থা কি হবে। বেডরুম তো মাত্র দুটোই।

    নীপা: আমরা মেয়েরা একটা ঘরে শোবো, তোমরা ছেলেরা আরেকটা ঘরে। সিম্পল। কেন একটা রাত বউকে ছেড়ে ঘুমোতে পারবে না? নাকি উল্কির স্বপ্ন দেখবে?

    রথীন: সব সময় ইয়ার্কি ভালো লাগে না নীপা। কেন এই কাউচটার মধ্যেই তো পুল আউট বেড আছে, ও, মানে মেয়েটি তো এখানেও শুতে পারে।

    নীপা: রথীদা, মেয়েটা ইঞ্জিওর্ড, শেকেন আপ। ও অলমোস্ট ঘুমিয়ে পড়েছে। ওকে এখন অন্যজায়গায় গিয়ে শুতে বলাটা ইনহিউম্যান। আই ক্যান্ট বিলিভ মাই ইয়ারস যে তুমি এতোটা –

    রথীন: কি? এতটা কি?

    নীপা: যেতে দাও--

    সুজিত: কি পাগলামি শুরু করেছিস বস। চল, ভালোই হয়েছে, আমরা মাল খেতে খেতে ঘুমিয়ে যাবো, কাল সকালে দেখবি সব ঠিকঠাক হয়ে গেছে। মীনহোয়াইল এঞ্জয় দা থ্রীল। পাহাড়ে স্ট্র্যান্ডেড, আলো নিভে গেছে, ঝড়বৃষ্টি, আগন্তুক সুন্দরী মহিলা।

    <


    (রথীন ও সুজিত, দুই বন্ধু রথীনের বাড়ির লিভিংরুমে বসে আছে, দুজনের হাতেই বিয়ার। রথীন ঝিমোতে ঝিমোতে চিৎকার করে ওঠে)

    সুজিত: আচ্ছা তোর কি হয়েছে বল তো রথী?

    রথীন: (অন্যমনস্কভাবে) হ্যাঁ, কি হয়েছে?

    সুজিত: (হুইস্কির গ্লাসটা সরিয়ে নেয়) ঢপ মারার চেষ্টা করিস না, তোকে আমি ছোটবেলা থেকে চিনি। সারাদিন মুখ ভেটকে পড়ে আছিস, আর এই যে, যখনতখন মাল খেয়ে ভুলভাল চিৎকার করছিস। অঙ্গনা বলেছে যে আজকাল তুই নাকি ঘুমোতে পারিস না, মাঝরাতে উঠে বসে থাকিস। না, না, তোর ডাক্তার দেখানো দরকার।

    রথীন: ডাক্তার কি করবে? শালা সংসারে অশান্তি, কিচ্ছু ভালো লাগছে না--

    সুজিত: সরি বস, অশান্তিটা কিন্তু তুইই পাকাচ্ছিস। অনু সেদিন নীপার কাছে কান্নাকাটি করছিল।

    রথীন: তুই জানিস না সুজিত! সেই হতচ্ছাড়া পাহাড়ের ট্রিপ থেকে ফেরার পর অনু একদম বদলে গেছে। আর ইজাবেলা বলে ওই উটকো মেক্সিকান মেয়েটা আমাদের ফ্যামিলিতে যেন উড়ে এসে জুড়ে বসেছে। অসহ্য!

    (নীপা আর অঙ্গনা ঢোকে)

    অঙ্গনা: এই যে, দিনে দুপুরে মদ খাওয়া শেষ হলো তোমাদের? এইবার দয়া করে যদি লাঞ্চটা খেয়ে নাও, তবে আমরাও নিশ্চিন্তে একটু শপিং করতে যাই।

    নীপা: কিংবা একটা মুভি দেখে আসি। তোমরা তো এখন বসে বসে খেলা দেখবে আর বিয়ার গিলবে।

    রথীন: অনু! অঙ্গনা! এটা কি করেছো?

    অঙ্গনা: কি গো? এমন অদ্ভুতভাবে তাকিয়ে আছো কেন বলতো?

    রথীন: মানে এইরকম স্টাইলে তুমি তো চুল বাঁধতে না! কোথায় শিখলে?

    অঙ্গনা: এই লোকটা না খেপে গেছে। আরে এটা মেক্সিকান স্টাইল, বেলা শিখিয়েছে, ভালো লাগছে কি না তাই বলো?

    রথীন: না ভালো লাগছে না। আজকাল ওই মেয়েলোকটা যা শেখায়, তুমি তাই নকল করো!

    নীপা: ডোন্ট বি মীন রথীদা! ইজাবেলার ওপর এতো রাগ কেন তোমার? খুব মিশুকে মেয়েটা, আমাদের সঙ্গে তো বেশ বন্ধুত্ব হয়ে গেছে।

    সুজিত: আচ্ছা তুই এরকম অবুঝ ব্যবহার করছিস কেন রে। দ্যাখ এইজন্যই বাজারে বদনাম যে বং রা বং ছাড়া কারো সঙ্গে মিশতে পারে না। হতে পারে যে মেয়েটার চেহারা আলাদা, কালচার আলাদা, কিন্তু শী ইজ আ নাইস হিউম্যাম বিয়িং।

    অঙ্গনা: ছেড়ে দাও সুজিতদা। বিয়ে করে এদেশে আসা থেকে তো ওর বন্ধুরাই আমার বন্ধু, ওর সমাজই আমার সমাজ। আমার তাই নিয়ে তো কোন নালিশ নেই। হঠাৎ করে একজনের সঙ্গে বন্ধুত্ব হয়ে গেছে, সেটা আমার দোষ? তাও যদি ছেলে হতো বুঝতাম। অদ্ভুত সত্যি ! (চুলটা খুলে ফেলতে ফেলতে বেরিয়ে যায়)

    নীপা: অনু দাঁড়া! সত্যি রথীদা, কি হয়েছে কে জানে বাবা তোমার। শুধু শুধু মেয়েটাকে-- (রেগে বেরিয়ে যায়)

    রথীন: দেখলি ব্যাপারটা? অঙ্গনাকে এরকম রাগ করতে দেখেছিস কোনোদিন? সব ওই মেয়েটার ইনফ্লুয়েন্স! কোথাকার একটা বেজন্মা ট্র্যাশ, ফ্যামিলি বলতে কিছু নেই, যেমন ইমমডেস্ট জামাকাপড়, এখানে ওখানে উল্কি আর পিয়ার্সিং। এগুলো কি জানিস? ট্রাইবাল মেন্টালিটি, কেউ কেউ বলে রি-বার্বারাইজেশন। কথাটা শুনেছিস?

    সুজিত: না শুনিনি, শুনতে চাইও না। আচ্ছা তোর লজ্জা করে না বয়েসে ছোট একটা মেয়েকে যা নয় তাই বলে গালাগালি দিচ্ছিস! হ্যাঁ ওর মা সিঙ্গল পেরেন্ট ছিলেন, ও একটা ব্যান্ডে গান গায়, একটু গথিক টাইপের পোশাক পরে। তাতে হলটা কি? শী ইজ সেলফ সাফিসিয়েন্ট। ওকে কোনদিন অসভ্যতা করতে বা নেশা করতে দেখেছিস তুই? আর অঙ্গনা কি কচি খুকি নাকি যে ওকে তুই বাইরের কারো সঙ্গে মিশতে দিবি না!

    রথীন: তোরা বুঝতে পারছিস না শি ইজ ইভল। ও অনুকে একটু একটু করে বদলে দিচ্ছে। সেদিন অনু কি বললো জানিস? বললো যে বেলার মতন একটা ট্যাটু করবে, ওই সেম জায়গায়! ভাবতে পারিস তুই?

    সুজিত: ভালোই তো রে, বউ সাজগোজ করছে, ট্যাটু করছে, তোর তো খুশি হওয়া উচিত। নীপা তো হাসপাতাল আর বাচ্চাদের এডুকেশন ছাড়া বাকি সব কিছু শিকেয় তুলে দিয়েছে। কিন্তু তুই কবে থেকে এতো কনসারভেটিভ হলি বলতো? তোর মাথায় কি ঢুকেছে জানি না কিন্তু এটা বলে রাখছি, ইসাবেলার রীতিমতন বয়ফ্রেন্ড আছে, তোর ঘাবড়ানোর কোনো কারণ নেই।

    রথীন: একটা বয়ফ্রেন্ড! তুই জানিস না, মেয়েটা আসলে--

    সুজিত: ব্যাস চুপ! আর আজেবাজে বকবি না। চল খেলা দেখি (একটু থেমে আস্তে আস্তে বলে) দেখ একটা কথা বলি, কিছু মনে করিস না। অনুকে এবার একটু বাইরে যেতে দে। এতদিন তো একা হাতে তোর সংসার সামলালো। ছেলেমেয়েরা বড়ো হয়ে গেছে, ওর এখন একটা আউটলেট দরকার।

    রথীন: জ্ঞান দিচ্ছিস! তোদের সবার মগজ ধোলাই করেছে ওই ডাইনিটা। আমি জানি, আমি এই সব মেয়েদের লক্ষণ দেখে বুঝতে পারি।

    সুজিত: ডাইনি? মেয়েদের লক্ষণ! নাঃ আর নিতে পারছি না। এইটুকু বুঝছি যে তোর ডাক্তার দেখানো দরকার। তিনমাস আগের সেই আউটিংটা, যখন বেলার সঙ্গে প্রথম দেখা হল, সেদিন থেকেই তুই ক্ষেপে গেছিস। শালা তোকে নির্ঘাত কোন জঙ্গুলে ভাইরাস ধরেছে, আবার বলছি তুই ডাক্তার দেখা। এনিওয়ে আমি উঠছি, ভাট বকা অনেক হয়েছে। এই মেয়েটা একা হাতে দুটো বিজনেস চালায় জানিস তুই? হ্যাভ সাম রেস্পেক্ট!

    রথীন: সেই ভয়ঙ্কর রাতে আমি যা দেখেছিলাম কেউ তা বিশ্বাস করবে না জানি। অনেকটা হুইস্কি খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ার চেষ্টা করেছিলাম, কিন্তু মাঝরাতে বাজের শব্দে ঘুম ভেঙে গেল। সুজিত আমার পাশে নাক ডাকিয়ে ঘুমোচ্ছে। আমি কিরকম যেন ঘোরের মধ্যে পায়ে পায়ে লিভিংরুমের দিকে এগোলাম। দেখলাম ফায়ারপ্লেসের সামনে অঙ্গনা আর ওই মেয়েটা বসে আছে। আমার পায়ের শব্দ পেয়ে মেয়েটা মুখ ঘুরিয়ে আমার দিকে তাকালো, আমি পরিষ্কার দেখতে পেলাম ওর মুখে রক্ত লেগে আছে। আর ওর চোখে সেই বীভৎস চাউনি। বেলি, বেলা, ডাইনি, ভ্যাম্পায়ার! চোখের সামনে সব অন্ধকার হয়ে গেল, তারপর আর কিছু মনে নেই।




    (রাস্তার মোড়। রথীন ও ডঃ মেহতা হাঁটছেন)

    Dr. Mehta: It seems you are quite shaken up Mr. Basu. Are you taking your medications properly? I told you that they interact with alcohol.

    রথীন: আমার দম বন্ধ হয়ে আসছে। Thank you for taking me out in the open.

    Dr. Mehta: All right, carry on Rathin babu.

    রথীন: Within a few weeks of that encounter everything in our life started changing. মেয়েটা আমাদের শহরেই থাকে, she runs a beauty salon and a bistro, serving all kind of disgusting punks and trash elements. অঙ্গনা আর নীপা ওখানে যেতে শুরু করলো। Don’t you think something is unnatural? Something satanic? কোন বাঙালি মেয়ে ওই সব জায়গায় যায়?

    Dr. Mehta: There could be some rational explanation of your “somethings” Mr. Basu. Like that night in the log cabin when you were intoxicated and saw Mrs. Basu with Isabella. In fact, she was hungry, your wife was offering her some strawberry shortcake. That was it and you thought she is drinking her blood!

    রথীন: (রেগে যায়) You don’t get it, do you! She even offered Angana a job. She is totally under her influence now and she is lying to you. Enough of this bullshit therapy doc, no longer need your help. যা করার, আমাকেই করতে হবে।

    Dr. Mehta: Mr. Basu. Listen. আপকা তবিয়ৎ ঠিক নেহি হ্যায়. Let’s return to office.

    রথীন: Feel free to return doc, I don’t need your advice anymore. ফালতু পয়সা নষ্ট অনেক হয়েছে।

    Dr. Mehta: Please be careful. You are crossing the limit.

    (ডঃ মেহতা হতাশভাবে বেরিয়ে যান। রথীন পাগলের মতন পায়চারি করে)

    রথীন: ডাইনিটাকে খুন করতে হবে। ওর জন্য আমার সংসারটা ছারখারে যাচ্ছে। আমিও ছাড়বো না! ওই তো পন শপ, ওখানে বন্দুক পাওয়া যায়। সোনার চেনটা নিয়ে এসেছি।

    (দুই রাস্তার গুণ্ডা, জিম এবং মাইক ঢোকে, কিছুক্ষণ রথীনের পিছু নেয়, রথীন লক্ষ্য করে না। জিম হঠাৎ সামনে এসে, পিস্তল বার করে রথীনের দিকে তাক করে)

    Jim: Hand over your wallet. Don’t make noise and no one will be hurt.

    (রথীন ভয়ে সিঁটিয়ে আছে। মাইক ওর ব্যাগ হাতায়, জ্যাকেট ঘড়ি আর আংটি খুলে নেয়)

    Mike: Now get the fuck out of here--

    (রথীন হঠাৎ চমকে উঠে চিৎকার করতে থাকে)

    রথীন: Bro, one minute. Listen bro!

    Mike: Shut up or we’ll shoot yah. Get lost.

    রথীন: Do you want more money? A lot more? Here, take this (ভেতরের পকেট থেকে সোনার চেন বার করে). Please listen to me. Is that a real gun?

    Jim: What kind of question is that! You want to try it out? (Holds up the gun to his head)

    রথীন: Ok Ok, its real. Well listen, do you do murder bros?

    Mike: What! (রথীনের পেটে ঘুষি মারে। রথীন পেট চেপে ধরে বসে পড়ে) Get out of here you crazy bastard!

    (মাইক চলে যাচ্ছে, জিম ওকে আটকায়)

    Jim: Listen Mike, we can make something big out of this weirdo. Let’s talk to him.

    Mike: Are you crazy too, Jim. I mean, murder! Forget it, Let’s go, get some weeds before the cops show up. Enough bullshit for one night.

    Jim: Listen man, we won’t murder nobody. This guy is out of his mind, we’ll just take his money and disappear. (রথীনের কলার ধরে তুলে দাঁড় করায়). Yes, we do murder.

    রথীন: What is your rate.

    (দুই গুণ্ডা মুখ চাওয়াচাওয়ি করে)

    Mike: It’s 3000 dollars. I mean per murder.

    রথীন: 3000 is too much. It’s a lady, no hassle. Make it 2000 plus the gold chain.

    Jim: Are you bargaining motherfucker? 2500 and 1000 advance. Last price.

    রথীন: Deal. Give me back my phone and credit cards and show me the nearest ATM. Now, here is the person you have to murder (Jim hands over the phone, Rathin shows a photos) Take a pic. She has a bat tattoo on her neck and a red flower tattoo on her left arm. Now listen, don’t go too close to her. This is her address, it’s a beauty salon, next to a bistro. Do it tonight.

    Mike: Yo man, she is hot. So, you are the jealous husband?

    Jim: Too sexy for you man! Now move, there’s the ATM.




    (রথীনের বাড়ি। রথীন ঢুকছে, অঙ্গনা বেরোবার জন্য তৈরি)

    অঙ্গনা: আরে তোমার এতো দেরি হল যে আজ? শোনো না, মনে আছে বলেছিলাম আজ ফ্রাইডে, আমাদের গার্লস নাইট আউট একটু ডিনারে বেরোচ্ছি, নীপা আর বেলার সঙ্গে। রাগ কোরো না প্লীজ।

    রথীন: (কাঁপতে থাকে, চোখ মুখ অস্বাভাবিক) অনু, তুমি এটা কি করেছো!

    অঙ্গনা: ও এটা-- (বাঁ হাতের দিকে তাকায়) এটা টেম্পোরারি, বেলা কিছুতেই ছাড়লো না। বললো, দেখবে তোমার হাবির ভালো লাগবে। কেমন লাগছে বললে না তো? আচ্ছা তুমি না চাইলে মুছে ফেলবো, কেমন? শোনো এমনিতেই খুব দেরি হয়ে গেছে, আমি না পালাই। (বেরিয়ে যায়)

    রথীন: অঙ্গনা, শোনো এক মিনিট। আমার কথাটা শুনে যাও। শুনে যাও প্লীজ। যেও না, ওখানে বিপদ আছে!

    (গাড়ি স্টার্ট দেবার আওয়াজ শোনা যায়)

    রথীন: (পাগলের মতন সারা ঘরে পায়চারি করে) I should have stopped her! I should have stopped her. অঙ্গনা বেলার সঙ্গে থাকবে। ভয়ঙ্কর একটা রিস্ক নেওয়া হয়ে গেল। ওর যদি কিছু হয়ে যায়? ওর হাতেও তো ওই একই ট্যাটু। ওরা যদি ভুল করে! (বোতল বার করে মদ খায়, পকেট থেকে ওষুধ বার করে খায়। আলো কমে যায়, স্টেজে কুয়াশার মধ্যে মাইক ও জিম ঢোকে। রথীন আচ্ছন্নের মতন সোফায় শুয়ে আছে)

    Mike: Which one?

    Jim: The one on the left. Look at the tattoo on her arm.

    Mike: Shit, they have their hairs down man. Can’t see the neck.

    Jim: This one with black dress has long sleeves. That one in red, I can clearly see the tattoo.

    রথীন: (চিৎকার করে উঠে দাঁড়ায়) No, no, don’t shoot. She is my wife. I love her. I love her (বন্দুকের শব্দ) সব শেষ। আমি একজন হত্যাকারী। আমাকে, আমাকে এখুনি পুলিশের কাছে যেতে হবে!

    (আলো জ্বলে ওঠে। বেলুন, কেক আর ফুল সমেত হইহই করে অঙ্গনা, সুজিত, নীপা, ইজাবেলা সবাই ঢোকে)

    অঙ্গনা: হ্যাপি বার্থডে টু মাই পাগল বর। নিজের জন্মদিনটাও ভুলে গেছো নাকি?

    রথীন: অঙ্গনা তুমি ঠিক আছ? তোমার কিছু হয়নি তো? ওঃ বাঁচলাম--

    অঙ্গনা: আমার আবার কি হবে? তোমার কি হয়েছে, এরকম ঘামছো আর হাঁপাচ্ছ কেন?

    নীপা: তুমি আবার একলা একলা নেশা করে বসে আছো রথীদা। কাম অন, লেটস সেলিব্রেট নাইসলি।

    রথীন: তুমি যে বললে বেলার সঙ্গে ডিনার। মানে কেউ তোমাকে গুলি করেনি তো?

    সুজিত: গুলি। মদের সঙ্গে গাঁজা গুলিও ধরেছিস নাকি? আরে তোকে সারপ্রাইজ দেবার জন্য এতো কাণ্ড, বুঝতে পারলি না গাধা কোথাকার। শালা, কি চেহারা করেছিস, মনে হচ্ছে বাবা ঘুটঘূটানন্দের চ্যালা।

    নীপা: দেখো রথীদা, আমরা সবাই মিলে তোমার ফেভারিট ডিসগুলো বানিয়েছি। অঙ্গনা দই মাছ, বেলা পেরুভিয়ান চিকেন, সুজিত বিরিয়ানি আর আমি--

    Isabella: Of course Neepa made strawberry shortcake. Shuvo jonmodin Rathi-da, ami ajkaal ekTu ekTu Bangla bolte pari.

    রথীন: থ্যাঙ্ক ইউ বেলা। আমি সরি, মানে, I owe you an apology.

    Isabella: Not at all Rathi-da. I am so happy to know you guys.

    সুজিত: আশা করি ওর মাথা থেকে ভূত নামবে এবার।

    রথীন: (জোরে শ্বাস ফেলে) থ্যাঙ্ক ইউ অল। অঙ্গনা, আমাদের একটা গান শোনাবে? অনেক দিন হয়ে গেল তোমার গান শুনিনি।

    অঙ্গনা: হুম। বেলা লেটস স্টার্ট দেন--

    (অঙ্গনা আর বেলা গাইছে)

    Should auld acquaintance be forgot, And never brought to mind? Should auld acquaintance be forgot, And days o’ lang syne! For auld lang syne, my Dear, For auld lang syne, We’ll tak a cup o’ kindness yet, For auld lang syne.


    (নীপা বাংলায় গেয়ে ওঠে- পুরানো সেই দিনের কথা। ইজাবেলা আস্তে আস্তে রথীনের দিকে সরে আসে। রথীন একদৃষ্টিতে ওর দিকে তাকিয়ে আছে। ইসাবেলা হাসে, ঠোঁটের ফাঁকে তীক্ষ্ণ দাঁত দেখা যায়। পর্দা নেমে আসে)



    অলংকরণ (Artwork) : অনন্যা দাশ
  • মন্তব্য জমা দিন / Make a comment
  • (?)
  • মন্তব্য পড়ুন / Read comments