নীল নদের ধারে অপরূপ এক ধ্বংসস্তূপের মধ্যে আলো হয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে এডফুর মন্দির। ফ্যালকন দেবতা হোরাসকে উৎসর্গ করা এ মন্দির দেখে চোখ জুড়িয়ে যায়। কি বিশাল, কি অসম্ভব শিল্পসুষমা ও ভাস্কর্যের কারুকাজ এই বিশাল মন্দির জুড়ে। রামসেস -৩ এর সময়কালে এ মন্দিরের নির্মাণ পর্ব।
প্রাচীন মিশরের ধর্মে কুমিরকে দেবতা রূপে উপাসনা করা হত। কুমিরকে নিয়ে মিশরীয় সভ্যতায় অনেক গল্পকথা রয়েছে। এবং কুমিরকে সযত্নে মমি করে মিউজিয়ামও করা রয়েছে। এডফুর বিখ্যাত ক্রোকোডাইল মিউজিয়াম দেখার অভিজ্ঞতা অতুলনীয়।
এডফু থেকে আসওয়ান পৌঁছে খুব জরুরি এক টিম মিটিং বসেছিল আমাদের ক্রুজের বলরুমে। আলোচ্য বিষয় ছিল পৃথিবী বিখ্যাত আবু সিম্বেল টেম্পলে গিয়ে আমরা সানরাইজ দেখতে চাই কি না? যদি চাই তাহলে মধ্য রাতে আমাদের যাত্রা শুরু করতে হবে। সড়কপথে পুলিশি এসকর্ট নিয়ে প্রায় তিন ঘন্টার নিশি সফর করে ভোরের প্রথম আলোয় বিখ্যাত আবু সিম্বেল টেম্পলকে দেখে চোখ মনকে জুড়িয়ে ফিরে আসতে পারি। আর নয়তো সকালে বেরিয়ে ডে ট্রিপ করতে পারি আবু সিম্বে্ল দেখার জন্য।
মিটি-এ অনেক টানাপোড়েনের শেষে ঠিক হয়েছিল, আমরা মধ্য রাতেই সড়ক সফরে পৌঁছে যেতে চাই টেম্পল-এর কাছে। তাহলে ভোরের প্রথম আলোয় দেখতে পাব পৃথিবীর এক আশ্চর্য সুন্দর মন্দিরকে। তাই মধ্যরাতেই শুরু হয়েছিল আমাদের ভ্রমণ। ঘড়িতে তখন রাত ২.৩০। শহর নিঝুম। চারপাশ শান্ত, নিস্তব্ধ।
গাড়ি ছাড়ল আসওয়ান থেকে। ক্রুজ থেকে নেমে এসে লাক্সারি বাসে করে যেতে হয়েছে ২৮৫ কিমি পথ। অনেক গাড়ি একসাথে চলল। কনভয় করে যাওয়াই এপথের কানুন। সীমান্তে সুদান!..
দারুণ বিলাসবহুল বাস। বাসের চালকের পাশের সিটে বসে আছেন দীর্ঘদেহী সুঠাম এক সুপুরুষ - মিশরীয় যুবক। সে আমাদের সশস্ত্র রক্ষী। তাঁর কোমরে রিভলবার। ব্যাপারটা বেশ গা ছমছমে। দারুণ রোমাঞ্চকর। একে মধ্যরাতে বেরিয়ে ভ্রমণে যাচ্ছি, তার ওপর প্রতিবেশী দুটি দেশের সুসম্পর্ক না থাকার দরুণ উত্তেজনা রয়েছে সীমান্তে, এই সব জেনে বুঝে ভ্রমণে যাওয়ার একটা বাড়তি আকর্ষণ তো থাকেই!
ভোরের প্রথম আলোয় অপরূপ সূর্যোদয় দেখব বলেই এই মধ্যরাতের ভ্রমণ অভিযান। সূর্যের প্রথম আলোয় পৃথিবী বিখ্যাত আবু সিম্বেল টেম্পলকে কেমন অপরুপ দেখায় তা নিজের চোখে দেখার আগ্রহ নিয়েই এই মরুভূমির পথে পাড়ি।
আমাদের সব পরিশ্রম সার্থক হয়েছে, ঠিক সময়মত পৌঁছে নাসের লেকের আড়াল থেকে সূর্যোদয় দেখার বিস্ময় আনন্দ কোনওদিন ভুলব না। আর সেই প্রথম আলোয় আবু সিম্বেল দেখার অভিজ্ঞতাও আশ্চর্য সুন্দর।
নাসের লেকও অপূর্ব। চারপাশের জলরাশি কি শান্ত ছিল সেই সকালে। হ-হু বাতাস বইছিল। শীতল বাতাস। শিরশিরে ঠান্ডা অনুভব করেছি। বড় ভালো লেগেছিল সেই সকালের অপরূপ সূর্যোদয়।
এই টেম্পল-এর ইতিহাস খুব বিস্ময়কর। মূল টেম্পলকে সযত্নে পুনর্নির্মাণ ও পুনঃস্থাপন করা হয়েছে। বিজ্ঞান ও কারিগরি সহায়তার অকল্পনীয় দক্ষতায়। একবারের জন্যও মনে হয় নি, মূল মন্দিরটা জলের অতলে চলে গিয়েছিল। তারপর ইউনেস্কোর সহায়তায় সেই অতল থেকে উদ্ধার করে তাকে আবার নতুন জায়গায় নতুন করে পুনঃস্থাপন এত নিখুঁত ও অসাধারণ দক্ষতায় সুসম্পন্ন হয়েছে যে তাকে আশ্চর্য হয়ে শুধু দেখতে হয়। আর এ দেখার আনন্দ এই মিশর ভ্রমণের সেরা প্রাপ্তি।
আসওয়ান থেকে রাতের অন্ধকারে পাড়ি দিয়েছিলাম। তখন ঠিক বুঝতে পারি নি এপথের মরুভূমির সৌন্দর্য। দিনের আলোয় ফেরার পথে তপ্ত মরুভূমির রুক্ষতার সৌন্দর্য দেখলাম। আহা সেও ছিল এক মন জয় করা আনন্দ অনুভব। ফিরে এসে বিকেল বেলার ছোট্ট ভ্রমণটাও ছিল অসাধারণ। নীল নদের জলে যন্ত্রচালিত নৌকোয় চেপে পৌঁছে গেলাম নুবিয়ান দ্বীপের এক গ্রামে।
বিকেলের রোদ্দুর চিক চিক করছে নীল নদে। আসওয়ান শহরের পাশ দিয়ে বয়ে চলেছে নীল নদ। নীল নীল ঘন নীল নীল নদ! দৃষ্টিসুখের আনন্দে মন কানায় কানায় পূর্ণ। স্বপ্ন ছোঁয়ার উল্লাসে হদয় পরিপূর্ণ।
আমাদের ক্রুজের নাম হ্যাপি ফাইভ ওয়ালটন। ডাঙায় নোঙর করা বিলাসী ক্রুজ থেকে নেমে এলাম পারে, শহরে। নদীর গা ঘেঁষেই এই শহর বড় সুন্দর। আসওয়ান খুব সাজানো গোছানো শহর। পাশেই রেল স্টেশন।
আসওয়ান থেকে এক অফবিট ভ্রমণে চলেছি নুবিয়ান ভিলেজ দেখতে। এই নদীতীরবর্তী গ্রামের কথা অনেক শুনেছিলাম। গ্রামের ইতিহাসও কিছুটা জেনেছি। "নুবিয়া" শব্দের অর্থ কালোত্ব। যা আফ্রিকার সমার্থক হয়ে উঠেছে। দক্ষিণ মিশর ও উত্তর সুদানে বিস্তৃত একটা অঞ্চলকে বোঝায়। যেখানে কালো চামড়ার নুবিয়ানরা বসবাস করে। তাই সেই নুবিয়ান ভিলেজে পা দেওয়ার জন্য চরণ আমার চরৈবেতি চরৈবেতি!..
মন তো আমার আগেই উড়ে গিয়েছিল। তাই ক্রুজ থেকে নেমে যখন আমরা কয়েকজন বিশেষ ব্যবস্থাপনায় নৌকোয় চেপে বসলাম, আনন্দ আর ধরে না। সূর্য তখন টাল খাচ্ছে পশ্চিমে। আহা সেই টাল খাওয়া সূর্যের রক্তিম আভায় নীল নদের নীল জল কি মায়াবী, কি মনোরম। আমাদের গাইড আহমেদ ইমদ আলাপ করিয়ে দিলেন নৌকোর মাঝির সাথে। মাঝিও একজন নুবিয়ান। জোব্বার মত এক ধরনের পোশাক গ্যালাবি পরা। নৌকো জলে ভাসতেই গাইড বললেন, "এ মাঝি গান জানে। আপনারা কি গান শুনবেন?"
নীল নদে নৌকোয় বসে নুবিয়ান মাঝির ডাফলি বাজিয়ে গান শোনার অপূর্ব অভিজ্ঞতা এই ভ্রমণে বড় প্রাপ্তি। মাঝি এক আফ্রিকান লোকগান আমাদের শোনালেন, "ও আ লে রে, ও আ লে রে, ও মুস্তাফা লে রে, ও লা লা লা, ওলা ওলা ওলা ওলারে..."
নৌকো নীল নদে ভাসছে। মাঝির গান শুনছি। নদীর দু'পারের সুন্দর সুন্দর দৃশ্য দেখছি। গ্রাম, জনপদ, বোটানিক্যাল গার্ডেন, কাশফুল, উট, বালুচর, মাছ ধরার ডিঙি নৌকো, রাজহাঁস, পাল তোলা ফেলুকা- এই সবই দারুণ দারুণ সব চিত্রকল্প উপহার দিয়ে যাচ্ছে। আসওয়ান থেকে নুবিয়ান এই নৌকো যাত্রার পথটাই এক অলীক আশ্চর্য সুন্দর ভ্রমণ!
নীল নদের এই দু'পারের দৃশ্য যেন এক বড় ক্যানভাস। কোনও এক অচিন চিত্রকর রং তুলিতে মনের মত করে এঁকে রেখেছেন! আমরা ভাগ্যবান পর্যটক তাই এই সব চিত্রকলা দেখার আনন্দ উপভোগ করতে করতে যাচ্ছি!
সন্ধে নামার একটু আগে এভাবে ভাসতে ভাসতে আমরা এসে নামলাম ঘাটে। পাশেই ছড়ানো নুবিয়ান ভিলেজ। এই ভিলেজের এক গ্রামবাসীর অতিথি আমরা। গাইড নিয়ে চললেন সেই বাড়িতে। ঘাট থেকে সামান্য পায়ে-হাঁটা পথ। বাড়িতে ঢুকতেই বিস্ময় আর মুগ্ধতা আমাদের মাতিয়ে দিল। কি সুন্দর করে সাজানো, ছড়ানো এক শিল্পবাড়ি। এ বাড়ি দেখলেই মন ভালো হয়ে যায়। বাড়ির মালিক লাজুক হেসে এগিয়ে এলেন। আলাপ পরিচয় হল। নাম কাসেম আবদুন। ইংরেজি জানে। তাই কিছু কথা আদান-প্রদান করা সম্ভব হল। ওর পরিবার, মা, বাবা, ভাই নিয়ে এই বসতভিটে। বসতভিটেটা অনেক যত্নে কি সুন্দর করে পর্যটকদের জন্য সাজিয়ে গুছিয়ে রেখেছেন। প্রথম দেখাতেই মুগ্ধ হতেই হবে।
ওর বাড়িতে বড় বড় দুটো রাজহাঁস দেখতে পেলাম। আর যা দেখে ভয়ংকর রকম চমকে গেলাম, তাহল বাড়ির উঠোনের চৌবাচ্চাতে দুটো জ্যান্ত কুমির! জাল দিয়ে ঢাকা চৌবাচ্চায় মুখ কেমন উদাসীনতায় ঘুমোচ্ছে! কুমির মিশরের শুভচিহ্ন। তাই কুমিরকে বাড়িতে প্রিয়জনের মতই যত্ন করে ওরা রাখে। পুজোও করে!
এই সুন্দর সন্ধ্যায় নুবিয়ান বাড়ির অতিথি আমরা। তাই আমাদের জন্য একটু আপ্যায়নের ব্যবস্থা ছিল। বড় বড় পরোটা, ঘরে তৈরি গুড়, ও আচার দিয়ে সাজানো প্লেট আমাদের সামনে রাখা হল। সবাই বেশ আনন্দ করেই খেলাম। গুড়টা বেশ ভালো লাগল। তারপর এল সুগন্ধী মশলা চা। সেও বড় সুন্দর।
চা- জলখাবার খেয়ে গ্রাম ভ্রমণে বেরিয়ে পড়লাম। পায়ে পায়ে হাঁটছি। সন্ধ্যা হয়ে গেছে। বাড়িগুলো আলোয় সাজানো। সব বাড়িই বেশ রংচঙে। গ্রামের পাশেই পাকা সড়ক। এখানে বসেছে হরেক মালের জমজমাট বাজার। এ বাজার পর্যটক আকর্ষণের জন্যই সাজানো। বাজারের ভিড়ে কিছুটা সময়ের জন্য হারিয়ে গেলাম।
নুবিয়ান ভিলেজে আসার মুখ্য আকর্ষণগুলো হল বোট রাইড, মিন্ট টি, বেবি ক্রোকোডাইল, হেনা ট্যাটুস, রঙিন বাড়ি, নীল নদ, উট, বালুচর ও বাজার।
বাজারে হরেকরকম মশলাপাতির দোকান। সব মশলার নাম জানি না। জানার উপায়ও কম। কারণ ভাষার প্রতিবন্ধকতা। ওরা আরবী ছাড়া কিছু বোঝে না! দু'একজন দু'চারটে ইংরেজি শব্দ জানে। তাই শুধুই চোখের দেখায় দেখলাম।
এছাড়া মিশরীয় নানান উপহার সামগ্রী ও পোশাক রয়েছে। আমি একটা রঙিন উলের টুপি পছন্দ করে কিনে ফেললাম। দাম পড়ল ১৩০ ইজিপশিয়ান পাউন্ড। এখানে ৩০ পাউন্ড মানে এক ডলার। অর্থ্যাৎ সাড়ে চার ডলার দিয়ে একটা উলের টুপি কিনলাম! কিন্তু চেয়েছিল ৩০০ পাউন্ড। সুতরাং দরাদরিতে দক্ষ না হলে পকেট থেকে পিছলে যেতে পারে পাউন্ড ও ডলার!
ছোট্ট ভ্রমণে বেশি সময় আমরা থাকতে পারি নি নুবিয়ান ভিলেজে। দিনের আলোয় অনেকটা সময় নিয়ে এলে বা একটা দিনরাত্রি নুবিয়ান ভিলেজে কাটাতে পারলে নিঃসন্দেহে সে হবে এক অবিস্মরণীয় ভ্রমণ।
বাজার সফর সেরে ফিরে এলাম ঘাটে। নৌকোর ভিড়ে ঘাট জমজমাট। ফেরার পথে মিশরের আকাশে পূর্ণ চাঁদের আলোয় আমাদের নৌকো কেমন মায়াবী হয়ে উঠেছিল। নীল নদের জল সেও চোখে মায়াকাজল পরিয়ে দিয়েছিল। নৌকোর ভেতরে গিয়ে বসতে মন চাইল না। বাইরে জলজ বাতাস। কুয়াশার মোড়কে ঢাকা অন্ধকার। ঠান্ডার শিরশিরানি আছে। ঠান্ডা লেগে সর্দি কাশি হতেই পারে! তবু মুসাফির মন আমার এমন হিসেবি ভ্রমণে ভাসতে চাইল না। সে বড় অবাধ্য অবুঝ হয় কখনো সখনো। চলে গেলাম নৌকোর ছাদে। খোলা ছাদে বেতের মোড়া দিয়ে সাজানো বসার আয়োজন। সেই বেতের মোড়ায় বসে নীল নদের নির্জনতার মধ্যে একলা হওয়ার অপূর্ব আনন্দ উপভোগ করলাম।
মিশরের নীল আকাশের পূর্ণ চাঁদের আলোয় জোছনাভেজা আনন্দ নিয়ে আসওয়ানের দিকে ভেসে যেতে যেতে মাঝির সেই আফ্রিকান লোকগানটা মনে করে আপন মনে গাইবার চেষ্টা করলাম, "ও আ লে রে, ও আ লে রে, ও মুস্তাফা লে রে...” নৌকো ভাসছে নীল নদে!.. আমি গাইছি গুণ গুণ করে..."ও মুস্তাফা লে রে...ও মুস্তাফা লে রে.."
আগামীকাল আসওয়ান শহর ঘুরে রাতের ট্রেন ধরে চলে যাব আবার কায়রো।
২৯ ডিসেম্বর, ২০২৩; ষষ্ঠ দিন— আসওয়ান — কায়রো— গিজা
আসওয়ান খুব সুন্দর আধুনিক শহর।
নীল নদের ধারে গড়ে ওঠা সাজানো সিটি।
সকালে ক্রুজ থেকে নেমে টাঙ্গায় করে শহরটা ঘুরে ঘুরে দেখলাম। আজ শুক্রবার। জুম্মাবার। অনেক দোকান বন্ধ ছিল। শহরের বড় মসজিদের স্থাপত্যশৈলী খুব সুন্দর। নুবিয়ান কলোনীর বাজার দেখে ভালো লেগেছে। খুব সাধারণ মানুষজনদের দেখতে পেলাম বাজারে। আমাদের পরিচিত সব শাক, সব্জি, মাছ, হাঁস মুরগী দেখতে ভালো লাগছিল। প্রচুর তেলাপিয়া মাছ বিক্রি হচ্ছে দেখলাম। মাছগুলো বেশ বড় সাইজের।
এখানে ভাষা সমস্যা একটা বাধা। ওরা আরবী ছাড়া কিছু বলতে পারে না। আমাদের সাথে পথে ঘাটে দেখা হলেই বলছে, "ইনদিয়া, ইনদিয়া, আলিবাবা, আলিবাবা..." আমরা খুব মজা পেয়েছি এই সম্ভাষণে। আরেকটা শব্দ ওরা বলে, "হাবিবা!" মানে হল, ভালোবাসা!..এবং এটাও খুব শুনেছি, "মোসি মোসি".. মানে হল তাড়াতাড়ি!... তাড়াতাড়ি!..
নীল নদের বুকে সুন্দর পাল-তোলা নৌকোয় চড়লাম। এটা ছিল নিছকই জলভ্রমণ। পাল-তোলা নৌকোগুলোর নাম, ফেলুকা। নৌকোর মাঝি নুবিয়ান। তার নাম আইয়ুব। সে ডাফলি বাজিয়ে বেশ সুন্দর একটা গান শুনিয়েছে।
আসওয়ান হাই ড্যাম শহর থেকে একটু দূরে গিয়ে দেখলাম। নাসের লেকও বেশ সুন্দর। আফ্রিকান কালচারাল সেন্টার, আসওয়ান ইউনিভার্সিটি, অঙ্কোলজি হসপিটাল, শপিং মল এমন অনেক কিছু শহর জুড়ে রয়েছে।
তবে এই শহরে একটা খারাপ অভিজ্ঞতা আমাদের হয়েছে, তা হল টাঙ্গাওয়ালা এবং পথে পথে উপহারের জিনিস বিক্রি করা ছোট ছোট ছেলেরা খুব চটজলদি ডলার বা পাউন্ড হাতে নিয়েই অস্বীকার করে বলে, "আমরা কম দিয়েছি!.."চোখের নিমেষে লুকিয়ে ফেলে ডলার বা পাউন্ড। এমন ঘটনায় আমাদের কয়েকজনকে অর্থদণ্ড দিতে হয়েছে। আমিও এমন এক বিপদের মধ্যে পড়েও শেষ পর্যন্ত বেঁচে যাই Tourism Polic-এর সহায়তায়। এখানে এই ব্যাপারে একটু সতর্ক থাকতে হবে।
মিশর সফরে গত কয়েক দিন ধরে বাসে, ডোমেস্টিক ফ্লাইটে, ক্রুজে, টাঙ্গায় চড়ার পরে আজ নতুন অভিজ্ঞতা হচ্ছে ট্রেনে বসে। ট্রেন আসওয়ান থেকে কায়রো চলেছে। বিকেল ৫.১৫ তে ছেড়েছে। আগামীকাল সকাল ৬.৩০ গিজায় পৌঁছবে। ট্রেন খুব উন্নত নয়। গতিও তত নিতে পারে না। অসম্ভব দুলুনি হচ্ছে ট্রেনে।
আগামী পাঁচ দিন আমরা ঘুরে ঘুরে দেখব - কায়রোর গিজা পিরামিড, ইজিপশিয়ান মিউজিয়াম, আলেকজান্দ্রিয়া, সাহারা মরুভূমির পথে ফাইয়ুম। এসবই অসম্ভব সুন্দর সুন্দর জায়গা।
প্রতিটা দিন নতুন নতুন জিনিস দেখছি, মুগ্ধ হচ্ছি। সুন্দর ভাবে এগিয়ে চলেছে মিশর ভ্রমণ। ডিসেম্বরে যতটা ঠান্ডা হবে ভেবেছিলাম, তা মোটেই নেই। আরামদায়ক ঠান্ডায় জীবনের এক সেরা ভ্রমণের মধ্যে রয়েছি।
৩০ ডিসেম্বর, ২০২৩ ; সপ্তম দিন— কায়রো—গিজা
ছোটবেলার সেই স্বপ্ন আজ পরিপূর্ণ হল, সার্থক হল মিশরে আসা।
আজ সকালে গিজায় পৌঁছে স্টেশন থেকে সোজা হোটেলে এসে চটজলদি তৈরী হয়েই বেরিয়ে পড়লাম গিজার উদ্দেশে।
গিজা মানেই সেই পিরামিড!.. সেই স্ফিংক্স এর মূর্তি!... বালুচরে উটের পদধ্বনি...
প্রথম দেখায় কেমন যেন অবিশ্বাস্য মনে হচ্ছিল, সত্যিই আমি এসেছি! এই সেই পিরামিড! সেই স্ফিংক্স এর মূর্তি!
এই ঘোর, এই আবেশ যখন কেটে গেল, মন কি আনন্দে মুগ্ধ হয়ে উঠেছিল। চারপাশে হাজার হাজার দেশ বিদেশের পর্যটক। সবার চোখে মুখে এমনই মুগ্ধতা আর আনন্দ!
দুপুরে লাঞ্চ-এর পর চলে গেলাম কায়রোর বিখ্যাত ইজিপশিয়ান মিউজিয়াম দেখতে। মমি দেখলাম অনেকগুলো। অপূর্ব সব প্রস্তরমূর্তি। চিত্রকলা। আর তুতেনখামেনের স্বর্ণ মমিও অসাধারণ!
আগামীকাল সকালে চলে যাব এক ঐতিহাসিক শহরে, গ্রীক বীর আলেকজান্ডার এর নামে নামকরণ করা আলেক্সান্দ্রিয়ায়। দেখব পৃথিবীর বিখ্যাত এক লাইব্রেরিকে। ভূমধ্যসাগরের সৈকতে হাঁটব। ইতিহাসের কথা শুনব। দেখব আরও এক আশ্চর্য সুন্দর শহরকে।
এভাবে প্রতিদিন একটু একটু করে মিশর ভ্রমণ সম্পূর্ণ হয়ে উঠছে। এসেছিলাম অনেক স্বপ্ন, অনেক প্রত্যাশা নিয়ে, সেই স্বপ্নপূরণের আনন্দ আমার মুসাফির জীবনকে রঙিন করে রাঙিয়ে দিয়ে যাচ্ছে।..
৩১ ডিসেম্বর, ২০২৩; অষ্টম দিন— কায়রো থেকে আলেক্সান্দ্রিয়া
মিশরের রাজধানী কায়রো থেকে সড়কপথে আলেক্সান্দ্রিয়া ২৪০ কিমি পথ। এ এক দীর্ঘ সফর। কিন্তু এই সফরে কোনও ক্লান্তি আসে না। পথ সুন্দর। পথের দৃশ্য আরও সুন্দর।
আলেক্সান্দ্রিয়া এক প্রাচীন ঐতিহাসিক শহর। কিন্তু আজ সে আধুনিকও বটে! মিশরের দ্বিতীয় বৃহত্তম সুন্দর শহরের মর্যাদা লাভ করেছে। এই শহর গড়ে উঠেছে ভূমধ্যসাগরের তীরে। সাগরের নীল জলে আলেক্সান্দ্রিয়া সুন্দরী অপরূপা।
আলেক্সান্দ্রিয়ায় আসার পথে আমরা বিখ্যাত দুটো ঐতিহাসিক নিদর্শন দেখলাম। সেও এক আশ্চর্য সুন্দর অভিজ্ঞতা। প্রথমে দেখলাম, ভূগর্ভের অভ্যন্তরের এক প্রাচীন কুয়ো, যার পোশাকি নাম Catacomb. নব্বইটা সিঁড়ি ভেঙ্গে নীচে নেমে প্রাচীন সেই জলব্যবস্থা দেখে অবাক হয়েছি। তারপর দেখলাম পৃথিবী বিখ্যাত Pompey Pillar. যার উচ্চতা ৯০ মিটার। এটি ২৯৭ খৃষ্টাব্দে সম্রাট ডায়াক্লেটেনের বিজয়ের স্মরণে তৈরী হয়েছিল। আজও সেই পিলার স্বমহিমায় স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে তার চারপাশের ধ্বংসস্তূপের মধ্যে।
এই দুই বিখ্যাত নিদর্শন দেখে আমরা চলে গেলাম আলেক্সান্দ্রিয়ার গর্ব পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম লাইব্রেরি দেখতে। এই গ্রন্থাগার খৃষ্টপূর্ব তৃতীয় শতাব্দীতে মিশরের টলেমি রাজবংশের পৃষ্ঠপোষকতায় নির্মাণ করা হয়েছিল। সারা পৃথিবী থেকে মূল্যবান বই সংগ্রহ করে তার প্রতিলিপি করে সংরক্ষিত করা হোত এই বিশাল লাইব্রেরিতে। তাই এই গ্রন্থাগার ছিল প্রাচীন মিশরের ঐতিহ্য, গর্ব ও ক্ষমতার প্রতীক। কিন্তু পরবর্তী সময়ে এই লাইব্রেরিতে অগ্নিসংযোগ ঘটে। ফলে বহু মূল্যবান বই পুড়ে নষ্ট হয়ে যায়। কিভাবে আগুন লেগেছিল, তা নিয়ে অনেক মতান্তর আছে।
আলেক্সান্দ্রিয়ায় আমাদের শহরের মত ট্রাম চলে। ডাবল ডেকার বাস চলে। হলুদ ট্যাক্সি আছে। কালো অটো আছে। হঠাৎ হঠাৎ মনে হয়েছে এতো আমাদের রাসবিহারী কিংবা চিৎপুরের রাস্তা!
আজ বছরের শেষ দিন। তাই সন্ধ্যারাতে বিশেষ পার্টির আয়োজন ছিল। প্রথমে আমরা শহরের এক ক্লাবে উদযাপন করতে গিয়েছিলাম। কিন্তু সে অভিজ্ঞতা সুখকর না হওয়ায় ফিরে আসি ভূমধ্যসাগরের বুকে ভাসমান এক সুন্দর রেস্তোরাঁয়। বর্ষ শেষের সেই রাত্রিটা সবাই মিলে খুব হৈ হৈ আনন্দে কাটালাম।
০১ জানুয়ারি, ২০২৪; নবম দিন— আলেক্সান্দ্রিয়া থেকে কায়রো
ভূমধ্যসাগরের তীরে শহর থেকে সামান্য দূরে অপূর্ব এক উদ্যান রয়েছে - বিশাল সৌধ সহ সেই উদ্যানের নাম 'মমতাজ গার্ডেন'। সাগরের নীল জল এই উদ্যান ছুঁয়ে রয়েছে। এর নৈসর্গিক শোভা মনকে মাতিয়ে দেয়। চোখের তৃষ্ণা মিটে যায়। ভ্রমণ সার্থক সুন্দর হয়ে ওঠে।
মমতাজ গার্ডেন, আলেক্সান্দ্রিয়ার এক বিখ্যাত মসজিদ ও লাইট হাউস দেখে ফিরে এলাম দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে আবার সেই চেনা শহর কায়রোতে।
২ জানুয়ারি, ২০২৪; দশম দিন— কায়রো থেকে ফায়য়ুম
এবার চললাম মরুভূমির পথে - পৃথিবী বিখ্যাত সাহারায়!
রাজধানী কায়রো থেকে কমবেশি একশো কিমির সড়কপথে বিলাসী বাসে করে চলেছি। রাস্তা খুব মসৃণ সুন্দর। যাওয়ার পথে চোখের সামনে আবার পড়ল সেই গিজা পিরামিড! পিরামিড পরিবার! আর স্ফিংক্স এর অনবদ্য মূর্তি!
কায়রো শহর ছেড়ে যত এগিয়ে চলেছি দু'পাশের জনশূন্য ধূ-ধূ ধূসর রুক্ষ মরু অঞ্চল দেখতে পাচ্ছি। রুক্ষতা ও শূন্যতারও একটা সৌন্দর্য থাকে! মিশর ভ্রমণে বারে বারেই সেটা আবিস্কার করেছি। অনুভব করেছি। এভাবেই একসময় পৌঁছে গেলাম হঠাৎ করে এক হ্রদের কাছে। এ এক বিরাট বিস্তৃত হ্রদ। লম্বায় নাকি প্রায় ২০০ কিমি। হ্রদের নাম কারুন (Lake Qaroun)। নীল নদের শাখা থেকে এর জন্ম। এই হ্রদের জলও টলটলে নীল। বাসের জানালা দিয়ে নীল জলের এই হ্রদ দেখতে দেখতে অনেকটা পথ যাওয়া এক বাড়তি প্রাপ্তি।
আমাদের ইজিপ্টোলজিস্ট গাইড বললেন, এই লেককে ঘিরে প্রচলিত লোককথা। এই হ্রদের জল নোনতা। ম্যাজিক লেকও বলা হয়। কারুন হ্রদের ধারে কিছু ছোট ছোট জনপদ, লোকালয় চোখে পড়ল। রাস্তার দু'পাশে চাষবাস, খেজুর গাছও অনেক দেখলাম।
আজ আমরা সাহারার বুকে গড়ে ওঠা এক টিউনিস ভিলেজ ফায়য়ুমে থাকব। কারুন লেক থেকে ফায়য়ুম কম বেশি তিরিশ কিমি। খুব সহজেই পৌঁছে গেলাম; ফায়য়ুমে প্রবেশ করেই মন খুশিতে নেচে উঠল। কি অপূর্ব এই টিউনিস ভিলেজ। মরু রুক্ষতায় মোড়া, কিন্তু সবুজেরও ছোঁয়া দিয়ে সাজানো দারুণ সুন্দর কম এল ডিক্কা (Kom El Dikka) ফার্ম হাউসটা। এর বাগিচায় কমলালেবু ও আঙুর গাছ চোখে পড়ল। কি সুন্দর সব্জি বাগান। বাঁধাকপি, ফুলকপি, বেগুন, ধনেপাতা, গাজর, টমেটোরা বাগানবিলাসী হয়ে হাসছে! এখানেই আমাদের আজকের আস্তানা। সারাদিন সাহারায় টৈ-টৈ করে ঘুরে বেড়াব। দু'চোখ ভরে দেখব। ফিরে আসব তারপর এই ফার্ম হাউসে।
কম এল ডিক্কায় চটজলদি মালপত্র রেখে হৈ হৈ করে বেড়িয়ে পড়লাম ওয়েসিস সাফারিতে। লাইন দিয়ে সাফারি গাড়িগুলো ছুটতে শুরু করল। এক একটা গাড়িতে চারজন। সে এক শিহরণ জাগানো মরুযাত্রা। গাড়ির গতি সবারই প্রায় একশো। সব কটা গাড়ি সমান গতিতে ছুটে চলেছে তপ্ত বালির ওপর দিয়ে। সে এক দুরন্ত দৌড় প্রতিযোগিতা! গাড়িতে বসে এই থ্রিল, এই রোমাঞ্চ অনুভব করার মজাই আলাদা। স্টিয়ারিং ধরা দক্ষ চালকরা সবাই চেহারা চরিত্রে আরব বেদুইন! ওদের দেখলেই সমীহ জাগে চোখে।
আজ আমরা তিনটে বিখ্যাত জিনিস দেখব সাহারা মরুভূমির। প্রথমে প্রায় ষাট কিমি পথ পেরিয়ে যাব ওয়াদি আল হিতান (Wadi Al Hitan), তিমি উপত্যকা নামে খ্যাত পর্যটকদের কাছে। ইউনেস্কো ওয়াদি আল হিতানকে ওর্য়াল্ড হেরিটেজের মর্যাদা দিয়েছে। এখানে একটি অসাধারণ মিউজিয়াম আছে-- FOSSILS & CLIMATE CHANGE MUSEUM. এই মিউজিয়ামে বিরাট বিরাট দুটো তিমি মাছের কংকাল দেখে অবাক হতে হয়। আরও অনেক এমন কয়েকশো বছরের পুরোনো প্রত্নতাত্ত্বিক উপাদান দিয়ে সাজানো এই যাদুঘর। ইংরেজি ও আরবী ভাষায় দুটো ডকু ফিল্ম দেখানো হয়। ইংরেজি ভাষায় বলা ছোট্ট ফিল্মটা দেখে অনেক কিছু জানতেও পারলাম।
ওয়াদি আল হিতান-এর চারপাশে বালির স্তূপের পিরামিড রয়েছে বেশ কয়েকটা। প্রকৃতির কি অপরূপ সৃষ্টি। কয়েকশো বছর ধরে এগুলো আজও অক্ষত রয়েছে। বছরের পর বছর পর্যটকরা এসে মুগ্ধ হন।
ওয়াদি আল হিতান থেকে এবার আমরা চললাম ওয়াদি আল রায়ন (Wadi Al Ryan); এর কাছে ছড়ানো কারুন লেক দেখতে। মধ্য দুপুরের গনগনে রোদ্দুরে এই নীল জলের হ্রদকে কি অপরূপ দেখাচ্ছিল। মুগ্ধ হয়ে এই হ্রদের ধারে টাঙানো বেদুইন তাঁবুতে বসে মরুরাজ্যে মধ্যাহ্নভোজনের আনন্দ পেলাম। গরম গরম পোলাও ও তন্দুরি চিকেন। সঙ্গে টাটকা স্যালাড।
এবার আমরা চললাম মরুভূমির বুকে জলপ্রপাতের জলধ্বনি শুনতে। ওয়াদি আল রায়ান থেকে বেশি দূরে নয়। দুরন্ত গতিতে গাড়িগুলোকে ছুটিয়ে নিয়ে চলে গেল আমাদের বেদুইন চালকরা। এই জলপ্রপাতকে ঘিরে একটা ছোট্ট পর্যটনকেন্দ্র গড়ে উঠেছে। বড় বড় খেজুর গাছের সারি চারপাশে। মাটির বাড়ি কয়েকটা নান্দনিক ভাবে বানানো। বসে বিশ্রাম নেওয়া যায়। বহুদূরে চিক চিক করছে কারুন হ্রদ। চারপাশে বালিয়াড়ি। রোদ মরে আসা বিকেলে এখানে বসে কিছুটা সময় কাটাতে বেশ লাগল। জলপ্রপাতের শব্দ শোনাও বাড়তি আনন্দ।
সারাদিন সাহারায় সমর্পণ করে যখন ফিরে আসছি সূর্যদেব ডুবুডুবু। পশ্চিম আকাশ রংমহল হয়ে উঠেছে।
দিনের শেষে টিউনিস ভিলেজে ফিরে এসেছি। ক্লান্ত পরিশ্রান্ত হয়ে কম এল ডিক্কার ঘর--বারান্দায় এসে বসলাম, সন্ধ্যার টিউনিস ভিলেজকে নতুন করে আবিষ্কার করলাম। শান্ত, কোলাহলহীন চারপাশে হাল্কা শীতের আমেজ। দূরে আলোয় চিকচিক করছে কারুন লেকের নীল জল। আরও দূরে দেখা যাচ্ছে পাহাড়শ্রেণী। আকাশে জোনাকির মত তারারা জ্বলছে।
৩ জানুয়ারি, ২০২৪; একাদশ দিন— ফায়য়ুম- কায়রো
এবার মন চলো নিজ নিকেতনে!
টিউনিস ভিলেজ ফায়য়ুমকে ছেড়ে আজ আমরা চলে যাব। ফিরে যাচ্ছি সবাই আর্লি লাঞ্চ করে হাতে প্যাকড ডিনার । মন বিষন্ন।
মরু সাহারার Tunis Village, Fayoum থেকে চলেছি কায়রো বিমানবন্দরে। এয়ারপোর্টে চেক ইন হয়ে গেছে। ইজিপ্ট এয়ার ছাড়বে বিকেল ৫ টায় (ভারতীয় সময় রাত ৮.৩০)। তারপর মুম্বাই হয়ে আকাশপথেই কলকাতা।
মিশর অপূর্ব!.. মিশর ভ্রমণ অসাধারণ!..
TRAVEL LIVE সংস্থার সাথে এসেছিলাম। অসাধারণ অভিজ্ঞতায় সমৃদ্ধ হয়ে ফিরে যাচ্ছি। অনেক ধন্যবাদ TRAVEL LIVE কে।
সব সার্থক ভ্রমণের শেষেই মন খারাপ এসে জড়ো হয় হৃদয়ে!.. এই মন খারাপের মাধুর্যও বড় অমূল্য!...
মিশর এই জীবনের অন্যতম সেরা ভ্রমণ হয়ে রয়ে গেল। মিশর এক ধ্বংসের ইতিহাস ও ধ্বংসস্তূপের আলো। ইতিহাসের দীর্ঘশ্বাস ও বিস্ময়ের ইতিকথা। মিশর ভ্রমণ সভ্যতার কাছে কৃতজ্ঞতা জানানো।
মিশর ভ্রমণে জীবনে দ্বিতীয়বার আর আসার সুযোগ পাব কিনা জানি না, তবু ইচ্ছেটাকে স্বপ্নের বাগানে ছেড়ে দিলাম!..
গুডবাই মিশর!.. বাই বাই ইজিপ্ট!.