পরদিন চা জলখাবার সেরে ফিরতি পথ ধরে দৌড়— ব্যস্ত মানেভঞ্জ্যাং, সুখিয়াপোখরি পার করে এসে পড়লাম লেপচাজগতে আমাদের আস্তানায়। রাস্তার ওপার থেকে জমাট পাইনের সেনাবাহিনী সস্নেহ স্বাগত জানাল। অনেক বদলে গেছে লেপচাজগত — সেই দু এক ঘরের শান্ত বসতি আজ ঘিঞ্জি হোটেল হোম স্টে-র জমজমাট কংক্রিটের জঙ্গল। তবু লেপচাজগত আজও মোহময় আগন্তুকদের কাছে। টুরিস্টদের আনাগোনা বাদ দিলে দিনের অনেকটা সময় শান্ত রোদ্দুর খেলে বেড়ায় এর অলিতে গলিতে। সেসব দেখে দিনটা কখন যেন সন্ধ্যার দিকে গড়িয়ে গেল। তরুণ তিন মূর্তি অবশ্য দিনভরই টগবগে চনমনে ছিল।
আগামীকাল দোল, কিন্তু স্বর্গ-ট্যুরের অন্তিম দিন। তাই সকলের মনে দুঃখ আনন্দের বিরিয়ানি। ভালোভাবে সন্ধ্যা নামার আগেই পাইনেরা তাদের দীঘল ছায়ায় ঢেকে দিল লেপচাজগতকে।
দোলের সকালে অতি চনমনে ছোকরা গাড়ি নিয়ে হাজির; সকাল সকালই সে তরলতরঙ্গে দোলায়মান। গাড়ি ছাড়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই তার প্রভাব প্রত্যক্ষ করা গেল — গাড়িটাকে বুলেট ট্রেন বলে ভ্রম হতে লাগল। দ্যাখ না দ্যাখ সীমানার বড়বাজারি ভীড়ে এনে ফেলল গাড়ি। আমাদের আরেকটু তটস্থ করে এখানে সে আরও এক (নাকি দুই!) পাত্তর চড়িয়ে ফেলল রং মাখার ফাঁকে। এর পর যা হল, তাকে রোলার কোস্টার রাইড বলা উচিত। ভীড়ের মধ্যে দিয়ে অমন স্পীডে, তাও পাহাড়ী পথে, চলেও কেন যে আমরা এবং অন্য লোকজন অক্ষত রইলাম, সেটা আজও বোধগম্য হয়নি।