‘পলিম্যাথ’ কথাটার বাংলা বহুবিদ্যাবিশারদ বললে চলে হয়ত, কিন্তু তাতে বোঝান মুশকিল খোর্খে লুইস বোর্খেস (১৮৮৯-১৯৮৬)-কে ঠিক কোন অর্থে পলিম্যাথ বলে থাকে সারা সাহিত্যবিশ্ব। তাঁর পাঠ-পরিধির বিস্তৃতির নিদর্শন ছড়িয়ে রয়েছে ছোট গল্প, মেটা-ফিকশন, প্রবন্ধ এবং কবিতায়। পোস্ট মডার্নিস্ট সাহিত্যধারার একটি জঁরকে তিনি এককভাবে পুষ্ট করে গেছেন এবং পরবর্তী প্রজন্মকে যেভাবে তিনি প্রভাবিত করেছেন তার তুলনা বিরল। বলবার কথা এই যে, বোর্খেসের ছোট গল্প, প্রবন্ধ এবং কবিতাকে একে অন্যের পরিপূরক বলে মনে হওয়া অস্বাভাবিক নয়। পাঠক জানেন, তাঁর প্রবন্ধ ফিকশনের মত, ফিকশন কবিতার মত এবং কবিতা কখনও ছোটগল্প, কখনও প্রবন্ধের আত্মাকে ধারণ করেছে। কবিতার অনুবাদে ফুটনোট জুড়লে তাঁর প্রতি সুবিচার হয় না জানি, তথাপি দ্বিধা রেখেও, দিলাম। তিনটি কবিতাই মূল স্পেনীয় এবং তাদের ইংরাজি অনুবাদ-এই দ্বিভাষিক পাঠ থেকে করা।
কেন্দ্রাতিগ স্বর্গের দশম বৃত্তঃ দান্তের স্বর্গ ( প্যারাডিসো) ন’খানি বৃত্তে গড়া। দশম বৃত্ত অ্যারিস্টটল- টলেমির প্রকল্প , তথাকথিত স্থায়ী তারাদের জগৎ।
পলিক্রেটেসঃ ঈসেস-এর পুত্র, সামোস এর শাসক( ৫৪০-৫২২ বি সি)। হেরোডেটাস-এর আখ্যানে পাওয়া যায় মিশরের ফারাও আমাসিস পলিক্রেটেসকে বলেছিলেন যা তিনি সবচেয়ে মূল্যবান মনে করেন তা ত্যাগ করতে- তাহলে ভাগ্য প্রতারণা করবে না।পলিক্রেটেস তার বহুমূল্য আংটি নদীতে বিসর্জন দেন। কয়েকদিন পরেই এক জেলে জালে পড়া মাছের ভেতর (শকুন্তলার অভিজ্ঞান স্মরণে আসতে পারে) তা দেখতে পেয়ে পলিক্রেটেসকে জানায়। এ কথা শুনে আমাসিস অবিলম্বে তার সঙ্গে বন্ধুত্ব অস্বীকার করে এই অনুমানে যে, এমন ভাগ্যবান লোক তার ঘোর বিপত্তির কারণ হয়ে হয়ে উঠতে পারে অচিরেই।
কালিবানঃ উইলিয়াম শেক্সপিয়েরের ‘টেমপেস্ট’-এর চরিত্র। প্রসপেরোর দখল করা দ্বীপের সেই একমাত্র ভূমিপুত্র যাকে দাসে পরিণত করে প্রসপেরো আর তার কন্যা মিরান্ডা।